পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

W39e তাহার সম্মুখে হতবুদ্ধি হইয়া বসিয়া আছেন ; একটু অপমানিত বোধ করিতেছেন—কি-একটা চাঞ্চল তাহার মনকে বিক্ষুব্ধ করিতেছে। বিদ্রোহ ও প্রতিহিংসার একমাত্র নিদর্শন-স্বরূপ ছেলেমাতুৰী ছলনা অবলম্বন করিয়াছেন—তাহা মনে করিয়৷ মাদামের হৃদয় বিজয়গৰ্ব্বে পূর্ণ হুইয়াছে। এই সময় মারিয়াম্—জগে-সিদ্ধ খবৃগোশ লইয়া আসিল এবং আপন-মনে বলিতে লাগিল, “এটা আনন্দের স্বর্ণবিবাহই বটে, কোনো ভূল নেই!” “বলি, এটা কি একটা বাজির পণ ? আমি যা ভালোবাসিনে তারই তুমি আয়োজন করেছ ?” “কিন্তু আমার যা ভালো লাগে আমি তাই জোগাড় করেছি।” "মনে হয় যেন এসব তুমি মংলব করেই করেছ।” “ও ! তা হ’লে এতক্ষণে এটা তোমার মাথায় এসেছে ? —ই, আমি স্বীকার করছি আমি এ-সব মতলব করে’ই করেছি।” মঃ-ওয়ালতার উঠিয় দাড়াইলেন, রাগে তার মুখ নীল হইয়া গেল ; তিনি খুধি উঠাইলেন। - মাদাম নিৰ্ব্বিকার কণ্ঠস্বরে আবার বলিলেন, “এইসব আয়োজন আমি মৎলব করে’ই করেছি।” স্ত্রীর শান্তভাব ও বিদ্রোহিতা এত গুরুতর অপরাধ বলিয় তাহার মনে হইল যে, তিনি অবাক ও একটু ভীত হইয়া আবার বসিয়া পড়িলেন। তিনি বলিলেন, “কিন্তু দ্যাখে।. আমি এসব কিছু বুঝিনে। স্পষ্ট করে’ বুঝিয়ে বলে। তুমি কি পাগল হয়েছ । তুমি যা বল্‌ছ তা কি তুমি নিজে বুঝতে পাৰ্বছ ? এটা কি আমার স্বর্ণ-বিবাহের দিন নয় ?” মাদাম উত্তর করিলেন, “হা, দুঃখের বিষয়, এটা আমা:ও স্বর্ণ-বিবাহের দিন ! আমি পাগল হয়েচি একথা মনে করবার কোনো দরকার নেই। আমার যা মনে হচ্চে তা যদি সব জানতে চাও ত আমি বলছি শোনো । এই ৫০ বৎসর ধরে তোমার খেয়াল-অমুসারে আমাকে চালিয়েছ, যা তোমার ইচ্ছা হয়েছে তাই আমাকে দিয়ে করিয়ে নিয়েছ-একথা প্রবাসী—ফাঙ্কন, ১৩৩১ [ २8* छ१, २घ्न थस একবারও ভাবোনি যে, আমার একটা স্বতন্ত্র ছা থাকৃতে পারে, মর্শ্বে আঘাত লাগধার মতো আমার একটা হৃদয় থাকৃতে পারে। ৫০ বৎসর ধরে আমি তোমার গোলামি করে’ এসেছি । তাছাড়া আর কিছুই করিনি। যাকৃ— তাই আমার ইচ্ছে হ’ল, এক ঘণ্টার জন্তে তুমি একবার আমার গোলাম হৎ—শুধু এক ঘণ্টার জন্তে —ঘরকন্নার খুব ছোটখাটাে বিষয়ে আমার গোলামি করে। তার পর তুমি তোমার স্বাধীনতা ফিরে’ পাবে—আমি আবার দাসত্বশৃঙ্খল আমার পায়ে পরব। আমার উচিত ছিল, তোমাকে একেবারে ঝেড়ে ফেলে কোথাও চলে’ যাই—তুমি তোমার ঘরকল্প আপনি দ্যাথো। কিন্তু এটা আমি কিছুতেই পারিনে। আমার বয়স বেশী হয়েছে—আর্মার ভয় হয়। এখন আমার কথা বুঝতে পারলে ?” স্ত্রীলোক বেচারীর সর্বাঙ্গ থরথর করিয়া কঁাপিতেছিল এবং ইহারই মধ্যে তাহার চক্ষু মূকভাবে ক্ষম ভিক্ষা করিতেছিল। যখন সে কথা কহিতেছিল, ম:ওয়ালতারের মুখ আলোকিত হইয়া উঠিল। তবে, শুধু এই ব্যাপার—আর কিছু নয় ! এ ফাড়াটা কোনো রকমে কাটিয়া যাইবে । তিনি সহজেই অমুভব করিলেন,— বিপদটা এখনই কাটিয়া গিয়াছে। এখন তিনি তাকে জালাতন করিতে পরিবেন, ধম্‌কাইতে পরিবেন, শাসন করিতে পারিবেন ; আর সে তার বিনিময়ে কেবল ক্ষমা প্রার্থনা করিবে । কিন্তু তার মনটা এখন একটু শাস্ত হওয়ায়, সমস্ত জীবনের মধ্যে এই প্রথমবার তিনি একটু ঔদার্ষ্য দেখাইলেন। তার স্মি হাস্ত প্রায় প্রতিজনক হইয়া উঠিল এবং তিনি ঘাড় ঝাকাইয়া অস্পষ্ট-স্বরে বলিলেন, আমার বিশ্বাস, স্ত্রীলোক স্ত্রীলোকই থাকবে চিরকাল।” মাদামের শুষ্ক গও বাছিয়া দুই চারি ফোটা অশ্ৰুজল স্বপের বাসনে ঝরিয়া পড়িল মাদাম চোখ পুছিয়া খুব ভয়ে-ভয়ে বলিলেন, “ত হ’লে ডিনারের বাকী রান্না গুলো আন হো’ক । আমি তোমার জন্য একটা জিনিস রোধেছি যা তোমার ভালো লাগবে ! এটা ইচ্ছে ‘হাসের পাই ।” -