পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা] মন পবিত্র রাখিবে এবং তৈল দ্বারা শরীর স্থস্থ রাখিবে। হিন্দুদের শাস্ত্রীয় বিধি-ব্যবস্থাতে মধুর বহুল প্রয়োগ পাওয়া যায়। ধৰ্ম্মেপদেশকরা মধু পান করিতেন বলিয়া বাইবেলেও উল্লেখ আছে। বহু শতাব্দী পৰ্য্যন্ত প্রকৃতিজাত মধুই মানবের একমাত্র স্বমিষ্ট পেয় বলিয়া পরিচিত ছিল। বালক-মৌমাছি-রক্ষক ও তাঁহার রক্ষিত মৌচাক এখন যথেষ্ট-পরিমাণে মধু পাওয়া যায় না। ইউনাইটেড ষ্টেটুসে প্রতিবৎসর মোটামুটি হিসাবে ২০,০০০,০০০ পাউণ্ড মধু উৎপন্ন হইয়া থাকে। যদি জগতে প্রচুরপরিমাণে মধু উৎপন্ন হইত এবং ধনী-দরিদ্র সমভাবে তাহ চিনির পরিবর্তে ব্যবহার করিতে পারিত, তবে মানবের স্বাস্থ্য অনেক উন্নতি-লাভ করিত, সন্দেহ নাই। প্রত্যেক মধুচক্রে তিন জাতীয় মৌমাছি থাকে, যথা— রাণী-মক্ষিক, শ্রমিক মক্ষিকা ও পুংমক্ষিকা • অপ্রাপ্তবয়স্ক স্ত্রী-মুক্ষিকার মধুচক্রের যাবতীয় প্রধান কৰ্ত্তব্য সম্পাদন করিয়া থাকে। ইহাদিগকে কৰ্ম্মীদল বলা যায়। মধু-আহরণ, শাবক-পালন প্রভৃতি সমুদয় কাজ ইহারাই করিয়া থাকে। পূর্ণ বয়সে ডিম্ব প্রসব করাই রাণী মক্ষিকার একমাত্র কাজ । পুং-মৌমাছিগুলি যথাসময়ে রাণীর সাহচৰ্য্য করে মাত্র। মধুচক্র রক্ষা বা পালন-সম্বন্ধে ইহার কোন সাহায্য করে না । কৰ্ম্মীদলের সংখ্যা বৃদ্ধি বা হ্রাস করা রাণী-মক্ষিকার ইচ্ছার উপর নির্ভর করে। স্ত্রী ও পুং ভেদে ডিম্ব-সংরক্ষণ-কোষগুলি বড়-ছোট করা হইয়া থাকে। মধুচক্র নির্মাণ হইতে চক্রবাসীদের আহার ংগ্ৰহ পৰ্য্যন্ত সমগ্র কাজ শ্রমিকদলকেই করিতে হয় ; এমন-কি সমস্ত বৎসরের খাদ্য উপযুক্ত সময়ে সঞ্চয় করিয়া মৌমাছির ব্যবসায় yరివె রাখিতে হয়। শ্রমিকদের মধ্যেও বয়স-অনুসারে দুইটি বিভাগ আছে। প্রৌঢ়া মক্ষিকার বাহির হইতে আহারাদি ংগ্রহ করে এবং অল্পবয়স্কার রাণীর পরিচর্য্যা, শাবকপ্রতিপালন, গৃহস্থালী প্রভৃতি সমুদয় গৃহকৰ্ম্ম সম্পাদন করিয়া থাকে। মধু-সংগ্রহকারী দল পুপ-রস আনিয়া সকলের মধ্যে সমভাবে বণ্টন করিয়া দেয়। আশ্চর্য্যের } বিষয় এই যে, পুষ্প-রস সংগ্ৰহ করিয়া মধুচক্রে প্রত্যাবর্তন করিতে-করিতেই তাহ প্রায় মধুতে পরিণত হইয়া যায়। শাবকদের জন্য পৃথক্ খাদ্যের ব্যবস্থা আছে। শ্রমিকন্তু মধু-আহরণ-কালে পশ্চাতের পায়ে জড়াইয়া খুলিবই শুষ্ক স্বকোমল পুষ্প-রেণু আনিয়া থাকে এবং তাহা স্বতন্ত্র প্রকোষ্ঠে সঞ্চয় করে । যথাসময়ে রেণুগুলিতে সামান্তপরিমাণে মধু মিশ্রিত করিয়া শাবকদিগকে দেওয়া হয়। সিরিষ- বা রজন-জাতীয় এক-প্রকার দ্রব্য মক্ষিকার ংগ্ৰহ করিয়া থাকে। পুরাতন মৌচাক সংস্কার করিতে ফ্রেমে-আঁট স্বরক্ষিত মৌচাক • অথবা নূতন মৌচাক তৈয়ার করিতে উক্ত দ্রব্যটি ব্যবহৃত হইয়া থাকে। ইহাকে প্রপোলিস’ বলা হয়। ইহা অত্যন্ত এটেল । মক্ষিকার বিশেষ-বিশেষ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের বিশেষ-বিশেষ ধৰ্ম্ম ও কৰ্ম্ম আছে। যথা—মুখ দ্বারা পুষ্পরস-আহরণ এবং ঐ পুস্পরসকে মধুতে পরিবর্তিত করা, এই উভয় কৰ্ম্ম সাধিত হইয়া থাকে । পশ্চাতের পদদ্বয়ের সাহায্যে তাহারা পুষ্পরেণু বহন করিয়া থাকে। খাদ্যদ্রব্যের প্রাচুর্য্য-সময়ে মক্ষিকার বক্ষস্থলে চক্রাকারেরষ্ঠায়