পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শীতকালে তুষারাবরণে ঢাকা মৌচাক একপ্রকার এটেল চিহ্ন দেখিতে পাওয়া যায়। প্রয়োজনঅনুসারে ইহাকে তাহারা বিযুক্ত করিয়া মৌচাক তৈয়ার করিতে পারে। এক কথায় বলিতে গেলে—রাসায়নিক প্রক্রিয়ার সাহায্যার্থে বৈজ্ঞানিক যন্ত্ররূপে যেন ভগবান তাহাদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গাদি স্বষ্টি করিয়াছেন ; কৃত্রিম ফেম-নিৰ্ম্মাণে অত্যন্ত সাবধানত অবলম্বন করা উচিত। ইহাকে যথাসম্ভব দৃঢ় ও স্বাভাবিক করিতে হইবে, কৃত্রিম বলিয়া যেন মৌমাছিরা ঝিতে না পারে। ডিম্ব-কোষগুলির আকৃতি দেখিয়াই পুং ও স্ত্রী মক্ষিকার ংখ্যা নির্ণয় করা যায়। এই ডিম্ব কোষ নিৰ্ম্মাণ করিতে মক্ষিকাদের যথেষ্ট পরিশ্রম করিতে হয় । মোম অত্যন্ত দুষ্প্রাপ্য জিনিষ, অথচ মৌমাছি-পালকদের ইহা নিত্য প্রয়োজনীয় বস্তু। অনেক মধু নষ্ট করিয়া মক্ষিকার মোম প্রস্তুত করিয়া থাকে। মৌচাক-নিৰ্ম্মাণের সময় ইহার দরকার হয় । কৃত্রিম উপায়ে একটি মৌচাক বহুবার ব্যবহার করিলে ব্যবসায়ীদের বিশেষ লাভের সম্ভাবনা আছে । মধুমক্ষিক অত্যন্ত পরিশ্রমী ও সঞ্চয়ী জীব। অসময়ের জন্য তাহারা যথেষ্ট সঞ্চয় করিয়া রাখে এবং অপব্যয় কখনও করে না। সময়-সময় তাহারা মধুচক্রটির চারিদিক্‌ পরিদর্শন করে। যদি কোথাও খালি প্রকোষ্ঠ দেখিতে পায়, অম্নি তাহা মধুপূর্ণ করিয়া রাখে। অতীব আশ্চর্ষ্য প্রণালীতে পুপরস খাটি মধুতে পরিবর্তিত হইয়া থাকে। গৰ্ত্তগুলি পুষ্পরস দ্বারা পূর্ণ করিয়া মৌমাছিগুলি অতি নিকটে উড়িতে থাকে। ক্রমে তাহাদের পালকের বাতাসে জলীয় অংশ নিঃশেষিত হইয়া যায়। তখন সকলে মিলিয়া খাটি মধুটুকু পান করে। যদি পান করিবার দরকার না হয়, তবে তৎক্ষণাং গৰ্ত্তের মুখ বন্ধ করিয়া ভবিষ্যতের জন্য রাথিয়া দেয় । এইরূপে সঞ্চিত মধু ব্যবসায়ীর সংগ্ৰহ করিয়া থাকে। উপযুক্ত সময়ে ব্যবসায়ীরা সাবধানত অবলম্বন করিলে অতি সহজে যথেষ্ট মধু বিক্রয়ার্থ সংগ্ৰহ করিতে পারেন। ব্যবসায়-হিসাবে না হইলে ব্যক্তিগত আমোদের জন্যও মৌমাছি পালন করা যায়। ইহাতে পরিশ্রম মোটেই নাই। শীতকালে যখন পুষ্পাদি প্রচুর-পরিমাণে থাকে না, তখন মৌমাছিগুলিকে চিনি খাইতে দেওয়া উচিত।