পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

७७२ ষে-প্রকার নিশ্চয়তার সহিত নিৰ্দ্ধারণ করা যায়, জটিল প্রবাসী—ফাঙ্কন, ১৩৩১ [ ২৪শ ভাগ, ২য় খণ্ড অভিসমীক্ষ্য বুদ্ধিমতা অমিত্রস্তাপি ধস্তং যশস্তং মানব-দেহের উপর সে-প্রকার স্বনিশ্চিত পরীক্ষা করা সহজ • আয়ুষ্যং লোকহিতকরং ইতি উপদিশতো বচ: শ্রোতব্যং নয়। স্বতরাং চিকিৎসা-বিষ্ঠায় সংশয় ও অনিশ্চয়তা অনিবাৰ্য্য। পূৰ্ব্বোক্ত দুই শ্রেণীর বৈজ্ঞানিক সিদ্ধান্তের উপর চিকিৎসাবিদ্যা যতটা নির্ভর করে, অল্প পরীক্ষিত, অপরীক্ষিত, কিম্বদন্তীমূলক বা ব্যক্তিগত মতের উপর ততোধিক নির্ভর করে । কি প্রাচ্য কি প্রতীচ্য সৰ্ব্ববিধ চিকিৎসা-সম্বন্ধেই এই কথা থাটে। স্বতরাং বৰ্ত্তমান অবস্থায় সমগ্র চিকিৎসা-বিদ্যাকে ‘বিজ্ঞান' বলা অত্যুক্তি মাত্র, এবং তাহাতে সাধারণের বিচার-শক্তিকে সন্ত্রস্ত করা श्ध्र । কবিরাজগণ মনে করেন তাহাদের চিকিৎসা-পদ্ধতি একট। স্বতন্ত্র এবং সম্পূর্ণ বিজ্ঞান, অতএব ডাক্তারী বিদ্যার সঙ্গে তাহার সম্পর্ক রাখ। নিম্প্রয়োজন। চিকিৎসাবিদণর যে-অংশ বিজ্ঞানের অতিরিক্ত তাহ লইয়া মতভেদ চলিতে পারে, কিন্তু যাহা বিজ্ঞান-সন্মত এবং প্রমাণ দ্বারা স্বপ্রতিষ্ঠিত তাহাকে বর্জন করা আত্ম-বঞ্চনা মাত্র। অমুক তথ্য বিলাতে আবিষ্কৃত হুইয়াছে, অতএব তাহার সহিত আমাদের সম্বন্ধ নাই,—কবিরাজগণের এই ধারণা যদি পরিবর্তিত না হয় তবে তাহাদের অবনতি অনিবাৰ্য্য। এমন দিন ছিল যখন দেশের লোকে সকল রোগেই উহাদের শরণাপন্ন হইত। কিন্তু আজকাল যাহারা কবিরাজীর অত্যন্ত ভক্ত র্তাহারাও মনে করেন কেবল বিশেষ-বিশেষ রোগেই কবিরাজী ভাল। নিত্য উন্নতিশীল পাশ্চাত্য পদ্ধতির প্রভাবে কবিরাজী-চিকিৎসার এই সংকীর্ণ সীমা ক্রমশঃ সংকীর্ণতর হইবে। পক্ষান্তরে যাহার কেবল পাশ্চাত্য পদ্ধতিরই চর্চা করিয়াছেন, উrহাদেরও যে আয়ুৰ্ব্বেদ হইতে কিছু শিখিবার নাই তাহা সম্ভব নয় । নবলব্ধ বিদ্যার গৰ্ব্বে হয়ত র্তাহারা অনেক পুরাতন সত্য হারাইয়াছেন। এইসকল সত্যের সন্ধান করা উহাদের অবগু কৰ্ত্তব্য । চরকের এই মহাবাক্য সকলেরই প্রণিধান-যোগ্য— নচৈব হি স্থতরাং আয়ুৰ্ব্বেদস্ত পারং, তস্মাৎ অপ্রমত্ত: শশ্বৎ অভিযোগমস্মিন গচ্ছেৎ ---কুংস্নোহি লোকে বুদ্ধিমতাং আচাৰ্য্য, শত্রুশ অবুদ্ধিমতাং । এতচ্চ অহবিধাতব্যঞ্চ । স্থতরাং আয়ুৰ্ব্বেদের শেষ নাই। অতএব অপ্ৰমত্ত হইয়া সৰ্ব্বদা ইহাতে অভিনিবেশ করিবে ।---বুদ্ধিমান ব্যক্তিগণ সকলকেই গুরু মনে করেন, কিন্তু অবুদ্ধিমান সকলকেই শত্রু ভাবেন । ইহা বুঝিয়া বুদ্ধিমান ব্যক্তি ধনকর, যশস্কর, আয়ুষ্কর ও লোকহিতকর উপদেশ-বাক্য অমিত্রের নিকটেও শুনিবেন এবং অনুসরণ করিবেন। কেহ-কেহ বলিবেন, কবিরাজগণ যদি ডাক্তারী শাস্ত্র হইতে কিছু গ্রহণ করেন, তবে তাহারা ভক্তগণের শ্রদ্ধা হারাইবেন,—যদিও সেসকল ভক্ত আবশ্যক-মত ডাক্তারী চিকিৎসাও করান। এআশঙ্কা হয়ত সত্য । এমন লোক অনেক আছে যাহারা নিত্য অশাস্ত্রীয় আচরণ করে কিন্তু ধৰ্ম্ম-কৰ্ম্মের সময় পুরোহিতের নিষ্ঠার ক্রটি সহ করিতে পারে না। সাধারণের এইপ্রকার অন্ধ বিশ্বাসের জন্য কবিরাজগণ অনেকটা দায়ী। র্তাহার এযাবৎ প্রাচীনকে অপরিবর্তনীয় বলিয়া প্রচার করিয়াছেন, সাধারণেও তাই শিথিয়াছে । তাহারা যদি বিজ্ঞাপনের ভাষা অদ্যবিধ করেন এবং ত্রিকালজ্ঞ ঋষির সাক্ষ্য একটু কমাইয়া বৰ্ত্তমান কালোচিত যুক্তি প্রয়োগ করেন, তবে লোক-মতের সংস্কারও অচিরে হুইবে । শাস্ত্র এবং ব্যবহার এক-জিনিষ নয়। হিন্দুর শাস্ত্র যাহা ছিল তাহাই আছে কিন্তু ব্যবহার যুগে-যুগে পরিবর্তিত হইতেছে। অথচ সেকালেও হিন্দু ছিল, একালেও হিন্দু অাছে। প্রাচীন চিন্তাধারার ইতিহাস এবং প্রাচীন জ্ঞানের ভাণ্ডার হিসাবে শাস্ত্র অত্যস্ত শ্রদ্ধা এবং সযত্ব অধ্যয়নের বস্তু, কিন্তু কোনো শাস্কেই চিরকালের উপযোগী ব্যাবহারিক পন্থা নির্দেশ করিতে পারে না । চরক-স্বশ্রভের যুগে অজ্ঞাত অনেক ঔষধ ও প্রণালী রসরত্নাকর ভাবপ্রকাশ প্রভৃতির যুগে প্রবর্তিত হইয়াছিল। কোনো-একটি বিশেয যুগ পৰ্য্যন্ত যে-সকল আবিষ্কার বা উন্নতি সাধিত হইয়াছে তাহাষ্ট আয়ুৰ্ব্বেদের অন্তর্গত, তাহার পরে আর উন্নতি হইতে পারে না,—এরূপ ধারণা অধোগতির লক্ষণ । নূতন জ্ঞান আত্মসাৎ করিলেই আয়ুৰ্ব্বেদীয় পদ্ধতির জাতি