পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা । লোককে বিশ্বাস করে, সহজে কাহাকেও সন্দেহ করে না। এইজন্ত স্কুল-কলেজের ছাত্রেরা অনেক স্থলে এই চরদিগকে প্রকৃত স্বদেশ-প্রেমিক ও বিপ্লবপন্থী বলিয়া বিশ্বাস করিয়া বিপথগামী হয়, এবং তাহাদের জালে আবদ্ধ হয় । “দি রিভলুশনারী” নামক পুস্তিকাগুলি গবৰ্ণমেন্টের অজ্ঞাতসারে এইরূপ গুপ্তচরদের দ্বারা প্রস্তুত হওয়া আশ্চর্ষের বিষয় নহে। স্যার অ্যালেক্জাণ্ডার মাডিম্যানকে মিথ্যাবাদী বলিয়া বিন্দুমাত্র সন্দেহ না করিয়াও এইরূপ অনুমান করা যাইতে পারে । সুতরাং বিপিন বাবুর প্রশ্নে তাহার উত্তেজিত না হইলেই ভাল হইত। র্তাহাকে ও গবর্ণমেণ্ট পক্ষের অন্য লোকদিগকে একটা বিষয়ের প্রতি দৃষ্টি নিক্ষেপ কবিতে অনুরোধ করিতেছি। যখন যেরূপ ঘটনা-মূলক প্রমাণ পাইলে গবৰ্ণমেণ্টের পক্ষে স্ববিধা হয়, তখন সেইরূপ ঘটনা কেন ঘটে । খবরের কাগজের ফাইল ঘাটিলে ইহার বহু দৃষ্টান্ত সংগ্রহ করা যায়। * আমরা ২/১টার উল্লেখ করিতেছি । যখন বাংলা গবর্ণমেণ্টের ইহ দেখানে দরকার হইয়াছিল, যে, দেশ এইরূপ ঠাণ্ড হয় নাই যাহাতে রাজনৈতিক বন্দীদিগকে খালাস দেওয়া চলে, তপন বিপ্লবী ‘aţţ-offs ol' (red pamphlet) fistfäs ol, flat, যতটা মনে পড়িতেছে, ইংলিশম্যান্‌ কাগজ প্রথম তাহার প্রাপ্তিসংবাদ প্রকাশ করেন । যখন লী-কমিশনের স্বপারিস-অনুযায়ী ইংরেজ সিবিলিয়ানদের বেতনাদি বৃদ্ধির প্রস্তাব ভারতীয় ব্যবস্থাপক সভায় আলোচিত হুইবার কথা, তখন গবর্ণমেণ্টের ইহা দেখানে প্রয়োজন হইয়াছিল, যে, হিন্দু মুসলমানের মারামারি কাটাকাটি নিবারণের জন্য ইংরেজ ম্যাজিষ্ট্রেট প্রভৃতি থাকা একান্ত আবশ্যক, কিন্তু বেতানাদি বাড়াইয়া না দিলে ইংরেজ যুবকেরা আর এদেশে শাসক ও বিচারকের কাজ করিতে আসিবে না। “ভাগ্য”-ক্রমে কিম্বা তদ্রুপ “আর কিছু”ক্রমে, ভারতীয় ব্যবস্থাপক সভায় যখন ঐ বিষয়ের আলোচনা হইবে, তাহার অল্পদিন আগেই লক্ষ্মেী, দিল্লী প্রভৃতি স্থানে হিন্দু-মুসলমানের ভয়ানক দাঙ্গ হইল, এবং সৰ্ব্বাপেক্ষণ ভীষণ কোহাটের দাঙ্গা, নরহত্যা, গৃহ-দাহ, বিবিধ প্রসঙ্গ—বিপ্লবোত্তেজক পুস্তিক e) লুট প্রভৃতি হইল। ১৮১৮ সালের তিন নম্বর রেগুলেগুন প্রভূতি গবৰ্ণমেণ্টকে যেরূপ অসাধারণ ক্ষমত দিয়াছে, দেশে অতিমাত্রায় অশাস্তি, উপদ্রব, অরাজকত, প্রভৃতি থাকিলে বা তদ্রুপ অবস্থা-উৎপাদনের কোন বন্দোবস্ত বিপ্লবীদের পক্ষ হইতে থাকিলে, সেইরূপ ক্ষমভ। যে গবর্ণমেণ্টের থাকা উচিত তাহ প্রমাণ করা সহজ হয় ! তিন নম্বর রেগুলেশ্বন প্রভৃতি রদ করিবার বিল পটেল মহাশয় উপস্থিত করিবেন জানা ছিল। তাহার পূৰ্ব্বেই “দি রিভলুশনারী” পুস্তিক প্রচারিত হইয় প্রমাণ হুইল যে, বিপ্লবীদের ক্রিয়াশীলতা বন্ধ হয় নাই, চলিতেছে ।" স্বতরাং ত্যহাতে গবৰ্ণমেণ্ট পক্ষের ইহা বলিবার স্থবিধা হইল, ঘে, অসাধারণ ক্ষমতাটা এখন লুপ্ত হওয়া উচিত

  • {び委 I

কিন্তু এই যুক্তি প্রয়োগ করিবার সময় গবর্ণমেণ্ট-পক্ষ সম্ভবতঃ ইঙ্গ ভাল করিয়া মনে রাখেন নাই, যে, তাহার আগে আর-একটা যুক্তি প্রয়োগ করা হইয়াছে, যাহার সহিত পূৰ্ব্বোক্ত যুক্তির সঙ্গতি নাই । ভারতীয় লোকদের পক্ষ হইতে বরাবর বলা হইতেছে, যে, যদি বঙ্গে বিপ্লবীদল থাকে, তাহা হইলে তাহাদিগকে দমন করিবার জন্য সাধারণ আইনই যথেষ্ট, এবং সাধারণ আইন প্রয়োগ করিবার সঙ্গে-সঙ্গে দেশের লোককে আরও রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দিতে হইবে ; পুলিস্ ও মজিষ্ট্রেটদিগকে অসাধারণ ক্ষমতা দিবার প্রয়োজন নাই, এবং স্বরাজ ব্যতিরেকে শুধু ঐরূপ ক্ষমতার দ্বারা বিপ্লব প্রয়াস নিবারিত হইবে না। ইহার উত্তরে গবর্ণমেণ্ট বলিতেছেন, অসাধারণ ক্ষমতার দরকার আছে, তাহ প্রয়োগ করিয়া আগে-আগে ফল পাওয়া গিয়াছে, বৰ্ত্তমানেও ফল পাওয়৷ যাইবে, এবং বস্তুতঃ ইতিমধ্যেই বিপ্লবীদলের কৰ্ম্ম-ব্যবস্থা বিশৃঙ্খল করিয়া ফেলিতে পারা গিয়াছে ও তাহাদিগকে প্রায় গুড়া করিয়া ফেলা হইয়াছে । তাহার পর “দি রিভলুশনারী” নামক পুস্তিকার আবির্ভাবে প্রমাণ হইল, যে, ষড়যন্ত্র বাড়িতেছে, অতএব তিন নম্বর রেগুলেশ্বন প্রভূতি রদ করা চলে না। কিন্তু সঙ্গে-সঙ্গে সরকার পক্ষের অপর উক্তি—“বিপ্লবীদিগকে