পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা ] বিবিধ প্রসঙ্গ—ভাষা-অনুসারে প্রদেশ পুনর্গঠন Գes হইতেছেন না, ইহা ঠিক নহে। স্বতরাং চতুর্বগের মধ্যে “অর্থ"ট বাদ পড়িল । আর তিনটির মধ্যে কোনটির জন্য গবর্ণমেণ্ট আফিং উৎপাদন কমাইবেন না, তাহা প্রমাণসহ বলিলে বাধিত হইব । গবর্ণমেণ্টের পক্ষ হইতে এরূপ যুক্তিও শুনা গিয়াছে, যে, “চীন নিজেই খুব আফিং উৎপন্ন করিতেছে—যদিও পূৰ্ব্বে চীন বলিয়াছিল, যে, আফিং উৎপাদন বন্ধ করিবে ; স্বতরাং আমরা কেন চীনে আফিং রপ্তানি বন্ধ করিব ?” ইহা বড় চমৎকার যুক্তি ! গবর্ণমেণ্ট পক্ষ হইতে যাহা বলা হইতেছে, তাহার মধ্যে কেবল এইটুকু সত্য আছে, যে, চীনে কোন-কোন দলের সামরিক নেতারা টাকার টানাটানি হওয়ায় আফিং উৎপাদনে সোৎসাহ অনুমতি দিয়া টাকার জোগাড় করিতেছে ; কিন্তু চীনের শ্রেষ্ঠ লোকদের ইহাতে সম্মতি নাই, চীনের গবর্ণমেণ্টের সম্মতি নাই, চীনের কোটি-কোটি লোকদের যে ইহাতে সম্মতি আছে, তfহার ও কোন প্রমাণ নাই । কিন্তু যদি মানিয়া লsয়া যায়, যে, চীনের গবর্ণমেণ্ট ও সব লোকেরই ইহাতে সায় আছে, তা হুইলেই কি আমরা মানিয়া লইব, যে, চীনে রপ্তানির জন্য আফিং উৎপাদন ভারতবর্ষের পক্ষে ঠিক কাজ হুইবে ? অন্য-একটা দেশের লোক যদি রসাতলে যাইতে চায়, ধণি তাহারা দৈহিক মানসিক ও নৈতিক আত্মহত্যা করিতে চায়, তাহা হইলে তাহীদের রসাতলে যাইবার এবং দৈহিক মানসিক ও নৈতিক অবনতি সাধনের উপায় জোগানো কি আমাদের কাজ ? এরূপ অধৰ্ম্ম কবিয়া রাজস্ব বৃদ্ধি করা ও অন্য কোন পাপ কাৰ্য্য করিয়া রাজস্ব বৃদ্ধি করায় প্রভেদ কি ? ওয়ারেন হেষ্টিংসের আমলে আফিং রপ্তানি আরম্ভ হয়। কিন্তু ওয়ারেন হেষ্টিংস আফিংকে মহা অনিষ্টকর বলিয়া জানায় ভারতে উহার অবাধ ব্যবহারের বিরোধী ছিলেন ; কিন্তু তাহার ধৰ্ম্মবুদ্ধি চীন-দেশবাসীদের অনিষ্ট.কারিত হইতে র্তাহাকে নিবৃত্ত করে নাই । ইম্পরিয়াল ব্যাঙ্ক অব ইণ্ডিয়া ইস্পীরিয়্যাল ব্যাঙ্ক আধা সরকারী ব্যাঙ্ক । গবর্ণমেণ্টের টাকার ( অর্থাৎ আমাদের প্রদত্ত ট্যাক্সের ) জোরে ইহার } e=b এত পসার-প্রতিপত্তি । কিন্তু ইহার মোটা-মাইনার সব কৰ্ম্মচারী বিদেশী। ইহার অনেকগুলি নূতন কৰ্ম্মচারী দরকার। তাহার বিজ্ঞাপন বিলাতে বাহির হইয়াছে। কোন স্থবিদিত ব্রিটিশ ব্যাঙ্কের তিন বৎসরের অভিজ্ঞতা কৰ্ম্মপ্রার্থীদের থাকা চাই । ভারতবর্ষে অনেক স্বপরিচালিত ব্যাঙ্ক আছে এবং তাহাতে অনেক ভারতীয় দক্ষত অর্জন করিয়াছে। কিন্তু তাহারা ইংরেজ নহে বলিয়া তাহাদিগকে দরখাস্ত করিবার স্বযোগও দেওয়া হয় নাই । ভাষা-অনুসারে প্রদেশ পুনর্গঠন ব্যবস্থাপক সভায় এরূপ প্রস্তাব ধৰ্য্য হয়, যে, উৎকল প্রদেশের সমুদয় টুকরাগুলিকে একই প্রদেশে সমাবিষ্ট করা হউক । বৰ্ত্তমান সময়ে উৎকলের ভিন্ন-ভিন্ন অংশ বাংলা, বিহার, মধ্য-প্রদেশ ও মাদ্রীজের সহিত যুক্ত আছে । বলা বাহুল্য, ইহার ফলে ওড়িয়ার কোনপ্রকার উন্নতির জন্যই আপনাদের সমবেত শক্তি প্রয়োগ করিতে পারে না। এবং কোন প্রাদেশিক গবর্ণমেণ্টেরই মনোযোগ ভাল করিয়া পায় না। এই হেতু উৎকল প্রদেশ পশ্চাতে পড়িয়া আছে । মান্দ্রাজ প্রেসিডেন্সীর সহিত উৎকলের যে-অংশ যুক্ত আছে, তথাকার উৎকলীয়দিগের ইচ্ছা জানিবার জন্য গবর্ণমেণ্ট দুইজন ইংরেজ কৰ্ম্মচারীকে প্রেরণ করেন। র্তাহারা ঐ অঞ্চলে নানাস্থানে ভ্রমণ করিয়া রিপোর্ট দিয়াছেন, যে, তত্ৰত উৎকলীয়দিগের সত্য-সত্যই অন্ত সব উৎকলীয়দিগের সঠিত যুক্ত হইবার ইচ্ছা আছে। এই ইচ্ছ গবর্ণমেণ্টের পূর্ণ করা উচিত। তাহা দুই উপায়ে করা যায়। যথা—সমগ্র উৎকলকে একত্র করিয়া অন্য কোন-একটি বড় প্রদেশের সহিত যুক্ত করা, কিম্বা সমগ্র উৎকলকে একটি স্বতন্ত্র প্রদেশে পরিণত করিয়া তাহার স্বতন্ত্র শাসনকৰ্ত্ত নিয়োগ এবং স্বতন্ত্র ব্যবস্থাপক সভা গঠন। দ্বিতীয় উপায়ই শ্রেষ্ঠ ; স্বতন্ত্র-প্রদেশ গঠন করিলে তবে উৎকলীয়দিগের সম্পূর্ণ স্থবিধা হইবে। কিন্তু যদি গবর্ণমেণ্ট তাহা না করিতে চান, ভাঙ্গ হইলে উৎকলকে বঙ্গের সহিত যুক্ত করা ভাল ; কারণ উৎকলের জাতীয়