পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নির্ভাবনার দুর্ভাবনা * শ্ৰী অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর সবদিক দিয়ে নির্ভাবনা যাকে পেয়ে বসলে, সে বিষম দ্বর্ভাবনায় ফেললে লোককে ৷ খাওয়া-পর, চুল বাধা, রান্না করা, আমোদ করা, আহলাদ করা, পড়াশুনে এমন কি নিজের বিয়েটির বিষয়েও নির্ভাবনা করে মেয়েটিকে যখন শ্বশুর-ঘরে পাঠানো গেল, তার পর থেকে কি বিষম দুর্ভাবনা জেগে রইলো মেয়ের জন্যে ভাবছে যে তা’র প্রাণে, তা মেয়েটাও বুঝলে না কেননা নির্ভাবনার মধ্যে সে মানুষ, মা-বাপও নয় তা’র মেয়ে পার করে থালাস, এই মেয়েগুলির মতো আমাদের ছেলেগুলিও এবং আমরাও নির্ভাবনা হয়ে বসেছি প্রায় সবদিক দিয়ে কেমন তা বলি– বই পড়বে। কিন্তু বইটার অর্থ বুঝতে ভাববার আবশ্যকই হয় না, অন্তে ভেবে-চিত্তে ব্যাখ্যাসমেত নোট লিখেছে—কিনে পড়ে, হ’য়ে যাও পাস । কিছু বুঝতে মাথা ঘামাতে হয় না, এমন কি বোঝার ভাবনাই নেই মনে । আলো জালবো ঘরে তা’রও ভাবনা CRÈ—Electric Supply & Co, তা’র ভাবনা ভাবছে ! আলো জলবে মনের মধ্যে জ্ঞানের প্রদীপে তা'র ভাবনাও নেই—Education Board তা ভাবছে । আগে ছাত্রদের নিজের হাতে যখন তেল-বাতি জালাতে হ’ত, তখন আলোর পরিস্কৃতি পেতে ভাৰতে ইত সলুতের তুলোর সরুমোটা হিসেব তেলের ফোটারও সঠিক পরিমাণ—এখন নির্ভাবনায় স্বইচ টেপো, আলো দপ করে এসে হাজির। কত ন্যায়বাগীশ, তত্ত্ববাগীশের সংসারের ভার আর ভাবনা ভেবে তবে জলতো আগেকার ছেলেদের জ্ঞানের প্রদীপ এখন মাষ্টার সবংশে মরলেও ভাবনা হয় না, গুরু ভাবনাই চলে গেছে ! আগে ভোরে উঠতে ভাবনা ছিল—যদি না পাখি ডাকে, যদি না ঘুম ভাঙ্গে—সেই দুর্ভাবনায় লোক ছটফটু করতে এবং ● २st* यांष ब्रांभरमांइन जांदेप्बद्री-हरण कूषांब्र-जां३८बन्नैौब छ्ठौद्र ৰাৎসরিক অধিবেশনে পঠিত । যাতে ঠিক সময়ে জাগে তার নানা আয়োজনের ভাবন ভাবতো ! এখন প্রহরী ঘড়ী যে বানিয়েছে সে ভাবছে আমার ঠিক টাইমে জাগার ভাবনা, আমি নির্ভাবনায় নিদ্রা যাচ্ছি। ছেলে ঘুমোবার সময় আগেকার মায়ের ভাবনা ছিল—ছড়া কাটুতে কাটুতে কোনোদিন ছেলে ঘুমোতে, কোনোদিন বা ঘুমোতোই না, এখন ছড়া বলার ভাবনা গেছে, গড়ের মাঠের কেল্লা সেগান থেকে তোপ বলে— “ওইরে হুমো, ঘুমোরে ঘুমো” তোপ পড়ল আর ঘুমোলো ছেলে, পোড়ো বন্ধ করলে বই, যেন কলে কালীমাকে ও মহাদেবকেও ডাকা হ’য়ে গেল। এবং কলিকাতার প্রত্নতত্ত্বও থানিক মুখস্থ হ’ল, যথা—কলকাত্তাওয়ালী ! রাত্রে মশা এখনো একটু-একটু জালায় স্বতরাং তা’র ভাবনা একটু-একটু ভাবি আধঘুমে কিন্তু ম্যালেরিয়া কমিটি, কালজির কমিটি সে ভাবনাও ঘুচিয়ে দিলে ব-ল’ আমাদের । আমোদ করতে হবে—তা’র ভাবনা ম্যাডান সাহেবের, নয় ত শিশির-বাবুর, ছবি দিয়ে ঘর সাজাতে হবে—তা’র ভাবনা অবনী-বাবুর, চিত্র পরিচয় কমে’ ছবি বুঝতে হবে তা’রও লোক আছে যাতে আমাদের না ভাবতে হয়, কবিতা চাই—আছেন রবি-বাৰু, নভেল চাই আছেন শরৎ-বাবু! আগে নিজের ভেবে ছেলেখেলা খেলতে বালকেরা, এখন কলেজের মাঠে খেলতে হবে— তা’র ভাবনা, তা’র হিসেব ছেড়ে দেওয়া আছে কলেজের প্রিন্সিপালের উপরে, সভা করে” পাচজনে এক হবে।— সেক্রেটারী আছে সময়-মতো ডাক দিতে, আছেন সভাপতি ঠিক এসে সভা জমাতে, সভা সাজাতে ভাবছে ঠিকে সাজানদার, বাজা বাজাতে ভালো করে” ভাবনা ভাবছে ঠিকে বাজনদার, এমন কি মরে গেলেও ভাবনা নেই, একটা দল আছে যারা এখন থেকে স্থতিরক্ষার ফর্দ করে সব ভাবনা থেকে আমাদের নিশ্চিন্ত করে’ বসেছে ।