পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬ষ্ঠ সংখ্যা । সাগরের স্তায় প্রশান্তগষ্ঠীর জ্ঞানজ্যোতিতে সমুজ্জ্বল র্তাহার তেজোময় অমর মূৰ্ত্তি, যে-মূৰ্ত্তিতে তিনি আমাদের মনে আছেন সেই মানসমূৰ্ত্তি, দিবার চেষ্টা পাইত।” সাধারণ আলেখ্যরচয়িত আলেখ্য বলিতে হুবহু প্রতিকৃতি বুঝে । ইহা মস্ত ভুল। কারণ, তাহা হইলে আলেখ্য ও ফোটোগ্রাফে কোনো তফাৎথাকিত না । কিন্তু ঐ দুটির মধ্যে আকাশপাতাল ব্যবধান, যেহেতু প্রথমটির শ্রষ্টা প্রাণবান শিল্পী, শেষোক্তের উদ্ভব যন্ত্র হইতে । সাত্বনা ৭২৩ উচ্চাঙ্গের আলেখ্য বা portrait কেবল প্রতিকৃতি নহে, উহাতে আরও কিছু থাকে যাহা রূপাতীত, শিল্পী চর্শ্বচক্ষে যাহা দেখিতে পায় না, কেবলমাত্র ধ্যানের দ্বারাই শিল্পী যাহার ধারণা করিতে পারে। দেবীপ্রসাদ যে আলেখ্য অঙ্কন করিয়াছেন এবং যে মূৰ্ত্তি গড়িয়াছেন তাহাতে প্রমাণ হইয়াছে, তিনি একজন সার্থক ধ্যানী শিল্পী। তা’র হাতে ভারতশিল্পের ধারা ক্ষুন্ন না হইয়া সমৃদ্ধ ও গৌরবান্বিত হইয়াছে। সাস্তুন 隱 শ্ৰী অমিয় বস্থ পাশাপাশি দুটি বাড়ী; যেন আলোর কোলে আঁধার । একটিতে যেমন পূর্ণত ও আতিশয্য অপরটিতে তেমনি অভাব ও দৈন্ত । গায়ে-গায়ে হ’লে কি হয়, এ দু-বাড়ীতে পরিচয় বড় ছিল না, আর তা থাকারও কথা নয় । সুৰ্য্যের আলোয় উদ্ভাসিত পাহাড়ের চুড়া আর আঁধারেঘের সাগরের তল, এ-দুয়ের কেউ কি অপরের সাহচৰ্য্য কামনা করে ? হরিচরণ দাস থ্যাকার স্পিস্কের দোকানে চাকুরি করেন, বেতন পান ২৫২ টাকা । অনেক দিন আগে যখন তার পিতার মৃত্যুর পর সমস্ত সংসার এবং বেশ মোটা-রকমের কিছু পৈতৃক দেন তার ঘাড়ে এসে পড়ল তখন কোঠাবাড়ীর মায়া কাটিয়ে তাকে কম ভাড়ার মেটে-বাড়ীতে আশ্রয় নিতে হয়েছিল ! প্রথ প্রথম র্তাদের এই খোলায়-ছাওয়া মেটে-বাড়ীতে এসে মন খারাপ হয়েছিল ; কি যেন এক দারুণ আত্মঅভিমানে বারে-বারে ঘা লাগত। সময়ের শীতল প্রলেপে সে-সব গ্লানি যদিও আর নেই, তবুও মাঝে-মাঝে হরিচরণের দীর্ঘশ্বাস যে না পড়ত তা নয় । হরিচরণের তিন , মেয়ে, এক ছেলে । বড় দুটি মেয়ের বিয়ে দিয়েচেন স্বদুর ঢাকা ও মৈমনসিং জেলায় ; বিয়ের পরেই প্রথম প্রথম এক-অধিবার তাদের এনেছিলেন, তার পর আর আনেননি বা আনতে পারেননি। ছোটো মেয়ে রাধারাণীর বয়েস ৯ বছর, আর ছেলে কানাইলালের বয়েস ৬ বছর । সংসারে আর-লোকের মধ্যে তার বুড়ী মা ও খুড়ীম, আর তার স্ত্রী । এই দরিদ্র পরিবারটির আমোদ-আহলাদ বা উৎসবের স্বযোগ বড় ঘটে উঠত না, তথাপি অভাবের মধ্যেও তাদের দিন একরকম শৃঙ্খলাতেই কেটে যেত। রাধারাণী পাড়ার কুশচীন ইস্কুলে পড়ত, তা’র মাসে মাইনে লাগত চার আন করে"; কানাইলাল বাড়ীতে অ-আ পড়ত । পাশের স্থসজ্জিত তে-তলা বাড়ীটির মালিক বীরেন্দ্রনাথ চৌধুরী বেশ সৌধীন হাল-ফ্যাশানের লোক । তিনি বেশ বড়-একটা সৰ্বকারী চাকুরি করেন, তা ছাড়া পৈতৃক সম্পত্তিও তার ঢের। পরিবারের মধ্যে র্তার স্ত্রী, আর চার মেয়ে ও দুই ছেলে । আসল সংসারটি যদিচ বিশেষ বড় ছিল না, তবু লোকজন চাকর-বাকর ধরে” সেটিকে নেহাৎ ছোটোও বলা চলে না । পাড়ার লোকে নাকি কবে হিসেব করে দেখেছিল যে এদের মাথা-পিছু দুটি করে ঝি-চাকর ; কি যে এত কাজ তা’র ফর্দ যদি কেউ শুনতে চান তা হ’লে বাড়ীর কত্রী বিমল