পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৭২৬ প্রবাসী—চৈত্র, ১৩৩১ t २8° छांश, २ग्न थ७ হৃদয়ের আকুল ক্ৰন্দন আছাড় থেয়ে গুম্রে’ উঠত। নিঃসঙ্গ কানাইলালকে ভুলিয়ে রাখা বড় শক্ত হয়েছিল, মাঝে-মাঝে স্বপ্নেতেও সে দিদি বলে কেঁদে উঠত। • সবই মানুষের সূয়, কারণ তা’র প্রতিদিনের সংসারযাত্রার গতিকে কিছুতেই রোধ করা যায় না। এত বড় একটা শোককেও তাই সকলকে ভুলতে হয়েছিল। দু-মাস পরে কাত্তিক মাসে আবার ভাই-দ্বিতীয় ঘুরে’ এসেছে। সাস্তুনাদের বাড়ী আগের মতনই আনন্দের কল-হাস্তে মুখরিত হ’ল ; শুধু তা’রই এক-আধটা ধ্বনি পাশের বাড়ীর কন্যা-তারা মায়ের বুকে করুণ স্বরে বেজে উঠল। আজ রাধীরাণীর কথা যে বড় বেশী করে তার মনে পড়চে ; গেল-বছরের ভাই-ফোটার দিনের সমস্ত ছবি তার চোখের সাম্নে ভাস্চে ।--তার ঐটুকুন মেয়ে রাধু তা’কে নিয়ে বিধাতার কি সমৃদ্ধি বাড়ল ।..... সামনে কানাইলালকে খেলা করতে দেখে বুঝলেন, এবার সে জানেও না যে আজ ভাই-ফোট । তিনি মা— আর সাম্লাতে পারলেন না, চোখ দিয়ে অঝোরে জল ঝরতে লাগল। একটু পরেই হারানো-মেয়ের চিন্তাকে জোর করে দূরে ঠেলে দিয়ে রান্নাঘরে চলে গেলেন ; নটার সময়ে যে ভাত চাই । গরীব-মায়ের শোক করার অবসর কোথায় ? আজ ভোর থেকে সাত্বনার কয় বোনে ভাই-দুটিকে নিয়ে ভারি ব্যস্ত ছিল। বেলা আটটার সময় ভায়েদের ফেঁাটা দেওয়া হ’লে পর, সাস্তুনা, কি জানি বোধ হয় অভ্যাসের বশেই, একবার দালানের জানলায় এসে দাড়াল। রাধারাণীদের বাড়ীতে দেখলে, কানাইলাল একথান ময়লা কাপড় পরে উঠানের একধারে একটা কাঠি দিয়ে মাটিতে অঁাক কেটে-কেটে নিজের মনে খেলা কবৃচে । আজ কানাইকে এক্লাটি এমন-ভাবে খেলা করতে দেখে সাত্বনার বুকটা যেন কেমন করে উঠল। গেল-বারের ফোটার কথা তা’র মনে পড়ল ; সেদিন রাধারাণী ভাইটিকে নিয়ে কি-রকম মেতে উঠেছিল! ছোটো দুটি ভাই-বোনের আনন্দ-কোলাহলে সমস্ত বাড়ীটি মুখরিত হয়েছিল ; আর আজ রাধারাণীর অভাবে সব ক্ষুব্ধ নিস্তব্ধ । রাধারাণী নেই ; কেন নেই তা সে অনেকবার ভেবেচে, কিন্তু কিছু সে বুঝতে পারে নি ; কেবল মনে হয়েচে এ অন্যায়, ভারি অন্যায় ভগবানের । সাত্বনার চোখ দিয়ে ফোট-ফোটা জল পড়তে লাগল ; তা’র কচি প্রাণের সমস্ত করুণা ও মমতা আজ উথলে’ উঠল বেচার ঐ কানাইলালের জন্যে । , সাস্তুনা তা’র বাবার কাছে গিয়ে আদর করে’ বললে, “বাবা, আমি একজনকে ফোটা দেবে, ভিখুকে দিয়ে একখান সাতহাতি কাপড় আর কিছু খাবার আনিয়ে দাও।” বীরেন্দ্রনাথ বললেন,"কা’কে ফোট দিবি রে পাগলী ? কণর সঙ্গে আবার ভাই পাতালি ?” সাত্বনা বললে, “তা আমি বলব না ; তুমি শীগগির আনিয়ে দাও বাবা—” বীরেন্দ্রনাথ বললেন, “কাপড় জলপাবার ত ঘরেই আচে, বড়দির কাছ থেকে চেয়ে নে না । কিনে' আর মিছিমিছি কি হবে ?” বাবার গলা জড়িয়ে সাস্তুনা আদর কাড়িয়ে বললে, “না বাবা, তুমি আলাদা আনিয়ে দাও ; দিদিদের আমি বলতে-টলতে পারব না।” বীরেন্দ্রনাথ বললেন, “তুই যদি বলতে না পারিস, আচ্ছ। আমি না হয় চেয়ে পাঠাচ্চি ।” সাম্বন বলে’ উঠল, “স্থ, দিদির ত তা হ’লে সব জানতে পারবে। না, তুমি আলাদা আনিয়ে দাও বাবা, কত আর খরচ হবে ? মিছিমিছি শুধু তুমি দেরি কবৃচ!” বীরেন্দ্রনাথ তার এই আছরে-আবারে মেয়েটিকে খুব চিনতেন । তা’র সঙ্গে তর্ক করে অনেক অদ্ভুত মজাদার যুক্তি ও কারণ শুনতে তারা অভ্যস্ত ছিলেন, কিন্তু ঐ একরক্তি মেয়েটিকে পরাস্ত করতে আজ পর্য্যস্ত র্তারা কেউ পেরে ওঠেননি। এইজন্তেই তিনি তার সাত্বনকে একটু যেন বেশী স্নেহের চোখে দেখতেন ; যদিও গিল্পী এবং অন্য মেয়ের ঠিকৃ এইকারণেই মেয়েটির উপর বিরক্ত হতেন । বীরেন্দ্রনাথ তাই তার চাকরকে ডেকে কাপড় ও খাবার কিনতে দিলেন । সাম্বনা খুসী হয়ে বাড়ীর ভেতরে চলে’ গেল । তা’কে দেখে শোভন-মোহন জিজ্ঞেস করলে,