পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ல் সংখ্যা ] আছে । কিন্তু সঙ্গে-সঙ্গে ইহাও ভাৰিয়া দেখিতে হইবে যে, বিশ্বসাহিত্যের সহিত তুলনায় আমাদের সাহিত্যে কত দিকে কত অসম্পূর্ণত রহিয়া গিয়াছে। এপর্য্যস্ত সাহিত্য বলিতে আমরা সাধারণতঃ খাটি সাহিত্যের কথাই ধরিয়া লইয়াছি, যথা কাব্য, নাটক, গল্প, উপন্যাস ইত্যাদি । কিন্তু বৰ্ত্তমানে সাহিত কথাটি অতি ব্যাপক অর্থে ব্যবহৃত হইতেছে। পাশ্চাত্য দেশে প্রত্যেক বিষয়ের লিপিবদ্ধ জ্ঞানই সেই-সেই বিষয়ের সাহিত্য বলিয়া প্রচারিত হইতেছে। এই অর্থে ঐতিহাসিক সাহিত্য, রাজনীতিক সাহিত্য, ধর্শ্বসাহিত্য, বৈজ্ঞানিক সাহিত্য, ভৌগোলিক সাহিত্য, চিকিৎসা-সাহিত্য ইত্যাদি পৰ্য্যন্তও দেখা যায়, অর্থাৎ এমন কোনো বিষয়ই নাই যেসম্বন্ধে সাহিত্য গড়িয়া উঠে নাই। ইহার কারণ তাহাদের সৰ্ব্বতোমুখী প্রতিভার উদ্যোগে যে-সব কৰ্ম্ম-প্রচেষ্টা বা অনুষ্ঠানের স্বষ্টি হইয়াছে, সে-সব বিষয়ের বিবরণ এবং লন্ধ অভিজ্ঞতা লিপিবদ্ধ করিয়া রাখিবার জন্ত র্তাহারা -যত্নের ক্রটি করেন না। এইরূপে র্তাহাদের সমগ্র সাহিত্য যে কত বড় বিপুল ব্যাপার হইয়া উঠিয়াছে, তাহা ধারণা করাও সাধারণ লোকের কাজ নয়। ইংরেজী ভাষার এই বিরাট সাহিত্যের অতি সংক্ষিপ্ত সারমর্থ Encyclopedia Britannica. আমাদের দেশেও সাহিত্যের এই ব্যাপকভাব স্বীকৃত হইয়াছে, তাহার প্রধান প্রমাণ বঙ্গীয় সাহিত্যপরিষদে সাহিত্য-শাখা, ইতিহাস শাখা, দর্শন-শাখা, বিজ্ঞান-শাখা ইত্যাদি শ্রেণীবিভাগ। বঙ্গীয়-সাহিত্যপরিষৎ প্রতিষ্ঠিত হইবার পর হইতে নানা বিভাগে নানা-প্রকার কাজ হইতেছে। সাহিত্য-বিভাগে অনেক প্রাচীন পুথি আবিষ্কৃত, সংগৃহীত এবং কতকগুলি মুদ্রিতও হইতেছে। কিন্তু এইসকল পুথি লইয়া কালক্ৰম-হিসাবে, ইহাদের গ্রন্থকর্তা-হিসাবে, বিষয়-হিসাবে অথচ ইহাদের মধ্যে কোনো এক বা ততোধিক মূলসূত্র ধরিয়া সমগ্রভাবে কোনো ইতিহাস রচিত হইয়াছে কি ? এইসকল পুথি আবিষ্কৃত হইবার পূৰ্ব্বে তৎকালে জাত বাংলা সাহিত্যের কোনো গ্রন্থে এইসকল পুথি-সম্বন্ধে কোনো প্রকার উল্লেখ পাওয়া গিয়াছিল কি না, অথবা এইসকল পুথি আবিষ্কৃত বাংলা ভাষার দৈস্য ዓ¢¢ হওয়াতে বাংলা সাহিত্যের কোনো-একটা বিশেষ দিকে বিশেষভাবে কোনো একটা জালোকপাত হইল কি না, সেসম্বন্ধে আলোচনা হইয়াছে কি ? এই ত গেল প্রাচীন সাহিত্যের কথা। আধুনিক সাহিত্যে প্রধান-প্রধান কৰি এবং সাহিত্যিকদের গ্রন্থাবলী প্রকাশিত হইয়াছে সত্য, কিন্তু যাহাতে সাধারণ লোকেও কাব্যগ্রন্থ বা সাহিত্য. পুস্তক পাঠ করিয়া অর্থসংগ্ৰহ করিতে পারে, সেই উদ্দেশ্যে টীকা-সমন্বিত কোনো গ্রন্থাবলী দেখা যায় না। দুই-একথানা বিশেষ পুস্তক ঐরুপভাবে প্রকাশিত করিয়া কেহs কেহ এই বিষয়ে পথ প্রদর্শন করিয়াছেন মাত্র। ŵsrŵrtff&rwy Ngfs wfqRS. (Matthew Arnold) প্রভৃতির স্কায় বাংলা সাহিত্য-বিষয়ে সমালোচনার ভার কেহ গ্রহণ করেন নাই। 藝 অভিধানের ক্ষেত্রে দুইএকখানা ভালো গ্রন্থ বাহির হইয়া থাকিলেও চরিতাভিধান-সঙ্কলনে পথ প্রদর্শন মাত্র হইয়াছে বলা যায়। বাংলা বিশ্বকোষ-রচনায় ব্যক্তিবিশেষের কৃতিত্ব qfxwTe ιετά Encyclopedia * Britannica* সহিত ইহার তুলনা হয় না। ইতিহাস এবং প্রত্নতত্ত্ব বিষয়ে আবিষ্কার, সংগ্ৰহ, অনুসন্ধান, গবেষণা, আলোচনা অনেক হইয়াছে এবং হইতেছেও ; কিন্তু যথেষ্টসংখ্যক ইতিহাস-পুস্তক এখনও রচিত হয় নাই । “বাংলার ইতিহাস” বাহির হইয়া থাকিলেও, ভারতবর্ষের ইতিহাস এখনও রচিত হয় নাই। ভারতবর্ষের কোনো একটা যুগের ইতিহাস সম্বন্ধেও বাংলাভাষায় শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ আছে বলিয়া মনে হয় না। ঐতিহাসিক যদুনাথ সরকারের জগৎ-প্রসিদ্ধ গ্রন্থ “ঔরঙ্গজেব’ও ইংরেজী ভাষায় রচিত । ইতিহাস এবং প্রত্নতত্ত্ব অনুসন্ধানের জন্ত "বরেন্স অনুসন্ধান সমিতি”, “কামরূপ অনুসন্ধান সমিতি” গড়িয়া উঠিয়াছে সত্য, কিন্তু ঐযুক্ত বিনয়কুমার সরকার তাহার “বর্তমান জগৎ’ গ্রন্থে যে মিশরে একটা ঐতিহাসিক অভিযান প্রেরণের জন্ত প্রস্তাব করিয়াছিলেন, তাহাতে কেহ সাড়া দেন নাই। বিদেশের ইতিহাস উদ্ধার করিবার জন্য একটা অভিযান লইয়া গিয়া সেই দেশে