পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

asi প্রবাসী—লৈ, లిలి [ ২৪শ ভাগ, ২য় খং ডাক পড়লেই আবার গিয়ে ঢুকতে হবে। তখন আবার কত দিন দেরি হবে, কে বলতে পারে ? এই ৰেল একটি সৎপাত্র দেখে বিঘ্নে দিলে হয়।” 验 কথাটা তারান্বন্ধুরীও কিছুদিন হইতে ভাবিতেছিলেন এবং মনে-মনে সঙ্কল্প করিয়াছিলেন যে স্বশ্বেরের কার+ মুক্তি হইলেই ইহার ব্যবস্থা করিবেন। তিনি বলিলেন, “ভগবানের অনুগ্রহে আর যেন তোমার ডাক না হয়, কিন্তু আমার ত ডাক আসবার সময় হয়ে আসছে। বিয়েট দিয়ে ফেললেই ভালো হয়। কিন্তু বিয়ে দেওয়া ত শক্ত নয় স্বরেশ, সৎপাত্র পাওয়াই শক্ত ।” “তেমন কোনো সৎপাত্র তোমার নজরে পড়ে মা ?” একটু চিন্তা করিয়া, ইতস্তত করিয়া তারামুন্দরী কহিলেন, “ই, একটি পড়ে।” আগ্রহ-সহকারে স্বরেশ্বর জিজ্ঞাসা করিল, "কে মা ?” তারাস্বন্দরী মৃদু হাসিয়া কহিলেন, “আজ থাক ; তেমন যদি বুঝি, কয়েক দিন পরে তোমাকে সে-কথা বলব।” স্বরেশ্বর বলিল, “আমারও নজরে একটি পড়ছে মা । আমিও আর-একটু দেখে তার পর তোমাকে বলব। কিন্তু তুমি দেখো মা, তোমার নজরে যে পড়েছে আমার নজরেও সেই পড়ছে।” তারামুন্দরী কিছু না বলিয়া একটু হাসিলেন। স্বরেশ্বরও হাসিল । তাহার মনে হইল, আকাশ এক দিক্ হইতে নিমেধ হইতে আরম্ভ করিয়াছে। রাষ্ণুে শয্যা গ্রহণ করিয়া মাধবীর বন্ধক্ষণ ঘুম হইল না। এতদিন যে কথাটা তাহার মনের মধ্যেই আবদ্ধ ছিল, তাহার কতক অংশ রন্ধন-শালায় স্বরেশ্বরের নিকট সংক্রমিত হইবার পর হইতে তাহার চিত্তে একটা আলোড়ন উপস্থিত হইয়াছিল। ষে-চিন্তা এতদিন ডিম্বের মতন অচল অবস্থায় অপেক্ষা করিতেছিল, আজ তাহ খোলাভাঙা পক্ষী-শাবকের মতন ঘটনারূপে সচল হইয়া উঠিল, এবং তাহার সম্ভ উন্মুক্ত পক্ষপুটের নিরস্তর তাড়নায় মাধবীকে অস্থির করিয়া তুলিল। অথচ যে-সকল বাক্য হইতে স্বরেশ্বরের মনে তাহার সম্বন্ধে সংশয় উৎপন্ন হইয়াছিল তাহা সুরেশ্বরের নিকট ব্যক্ত করিবার তাহার কিছুমাত্র ইচ্ছা ছিল না। বিম বিহারীর কথা বলিতে গিয়া বাধ্য হইয়া সুরেশ্বরের । সে-সংশয় উৎপন্ন করিতে হইয়াছিল ;–সাপকে মারি শিবকে লাগিয়াছিল। ( s. ) পরদিন প্রত্যুষে স্থরেশ্বরের চরকা কাটা শেষ হই। তারাসুন্দরী বলিলেন, “আজ মনে করছি বিমান খেতে বলব ; তুই এই বেলা গিয়ে তা’কে বলে’ আ স্বরেশ । কথা ছিল, তুই বাড়ী এলে একদিন তোরা ছ ভাইয়ে পাশা-পাশি বসে’ খাবি ।” এ-প্রস্তাবটা সুরেশ্বর খুব পছন্দ করিল ; এবং অবিলে একটা খন্দরের ফতুয়া পরিয়৷ তদুপরি একটা খঙ্গরের গাত্র বস্ত্র জড়াইয়া বাহির হইয়া গেল। তাহার কয়েক মিনি পরেই বিমানবিহারী আসিয়া ভিতরের স্বারের কাtে দাড়াইয়া, “স্বরেশ্বর, স্বরেশ্বর" বলিয়া ডাকিতে লাগিল । নীচের বারাণ্ডায় বসিয়া মাধবী তরকারী কুটিতেছিল বিমানবিহারীর কণ্ঠস্বর শুনিয়া তাড়াতাড়ি উঠিয়া আসিয় বলিল, "দাদার সঙ্গে পথে দেখা হয়নি আপনার ? তিনি ত এখনি আপনাদের বাড়ী গেলেন ।” ব্যস্ত হইয়া বিমান বলিল, “এখনি ? কতক্ষণ ?” “চার-পাচ মিনিটের বেশী হবে না।" "আমি ত বাড়ী থেকে সোজা আসছিনে, তাই দেখা হয়নি। আচ্ছ তা হ’লে আমি চললাম, তাড়াতাড়ি গেলে এখনও হয় ত তাকে ধরতে পারব।” বলিয়া বিমানবিহারী প্রস্থানোদ্যত ইষ্টল । মাধবী বলিল, "কিন্তু আমার ত মনে হয়, তা পারবেন না। আপনি বাড়ী নেই দেখে তিনি এতক্ষণ বেরিয়ে পড়েছেন, আর কোন পথ দিয়ে ফিরে আসছেন তা’র ঠিক কি ? তা’র চেয়ে আপনি এখানেই একটু অপেক্ষা করুন, তিনি এখনি এসে পড়বেন।” “আর সেও যদি আমারি মতন সেখানে অপেক্ষা করে” বসে থাকে ?” "না, তা থাকুবে না । যে-কাজে তিনি গেছেন তা’তে মিনিট খানেকের বেশী সময় লাগবে না।”