পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬ষ্ঠ সংখ্যা । রাখুধ_ ግ8› সবিস্ময়ে বিমান জিজ্ঞাসা করিল, “মিনিট-খানেকের কি কাজে সে গেছে ?” মাধবী মৃদ্ধ হাসিয়৷ বলিল, “আজ মা আপনাকে আর দাদাকে খাওয়াবেন, তাই বলতে গেছেন।” বিমানবিহারী প্রফুল্প-মুখে বলিল, “আজ তা হ’লে ত স্বপ্রভাত। আজ মা’র হাতের অমৃত পাওয়া যাবে। তা হ’লে অপেক্ষা করছি, যাক। কিন্তু তুমি হয়ত মনে করবে, এ এমন পেটুক যে নিমন্ত্রণের কথা শুনেই বলে’ পড়ল ।” অন্যদিকে চাহিয়া মৃদু হাস্ত করিয়া মাধবী বলিল, “নিমন্ত্রণ পেয়ে যিনি কাজের ছুতো করে’ নিমন্ত্রণ ছেড়ে দেন, তিনি যে কত বড় পেটুক, তা আমার জানা আছে ।” মাধবীর কথা শুনিয়া বিমানবিহারী হাসিতে লাগিল। বলিল, “পেয়ে গ্রহণ করিনে এত বড় ত্যাগী অামি নই ৷ তবে না পেয়ে ছেড়ে দেওয়ার দুর্বলতা আমার আছে, তা স্বীকার করি ।” এ-কথার কোনো উত্তর না দিয়া মাধবী বলিল, “তা হ’লে চলুন, উপরে গিয়ে বসবেন।” বিমানবিহারী বলিল, “না, না, উপরে কেন ? বাইরের ঘরট খুলে দাও, এইখানে বসেই ততক্ষণ খবরের কাগজটা পড়ি।” বিমানবিহারীর হস্তে একটা সংবাদপত্র ছিল । ভিতর দিয়া প্রবেশ করিয়া মাধবী বাহিরের ঘরটা খুলিয়া দিল। করিলে মৃদু হাস্ত করিয়া বলিল, খবরের কাগজটা কি কিনে আনলেন ?” বিমানবিহারী স্মিতমুখে বলিল, “তা ভিন্ন আর কি করে আনব?” “ছু আন দিয়ে ?” “ছ আনা কেন ? চার পয়সা দিয়ে।” অন্য দিকে একটু মুখ ফিরাইয়া মাধবী বলিল, “আজ কিন্তু আনায় স্থ-আনা দেওয়াই উচিত ছিল।” সবিস্ময়ে বিমানবিহারী বলিল, “কেন ? “আজ আপনার কথাটাই ওতে খুব বড় করে লেখা আছে!” তাহার পর বিমানবিহারী আসন গ্রহণ “সত্যি নাকি ? তা ত এখনো দেখিনি ! বলিয়া বিমানবিহারী তাড়াতাড়ি কাগজটা খুলিয়া দেখিল জরুরী সংবাদের পৃষ্ঠায় বড়-বড় অক্ষরে লেখা রহিয়াছে, A Magistrate Throws up the Yoke “R Wootto যেসকল কথা রহিয়াছে তাহার দুই-চারিটা পড়িয়াই সে তাড়াতাড়ি কাগজটা মুড়িয় টেবিলের আর প্রান্তে ফেলিয়া দিল ; তাহার পর মাধবীর দিকে দৃষ্টিপাত করিয়া বলিল, “এত মিথ্যে কথাও ছাপার অক্ষরে রোজ এই খবরের কাগজগুলোতে বের হয় । এরা অবলীলাফুফে যেসব কথা আমার বিষয়ে বলেছে, আমার বোলে৷ আন আত্মাভিমানও সে-সব দাবি করতে সঙ্কোচ বোধ করে । তুমি যে আমাকে সতর্ক করে দিলে, তার জন্যে ধন্যবাদ মাধবী ! নিশ্চিন্ত-মনে যে জিনিস বয়ে বেড়াচ্ছিলাম তা’র মধ্যে যে এ-ব্যাপার ছিল,ত জানতাম না! লোকে দেখলে মনে কবৃত, সকলকে পড়িয়ে শুনিয়ে বেড়াচ্ছি।” মাধবী মুছ হাসিয়া বলিল, “কেন, আমি ত দেখেছি! আমিও ত একজন লোক !” মাধবীর কথা শুনিয়া বিমান হাসিতে লাগিল ; বলিল, *ই্যা, সে-কথাও ত ঠিক ! তবে তুমি আমার এত দুৰ্ব্বলতার খবর জানে, যে তাতে আর-একটা যোগ হ’লে বিশেষ কিছু ক্ষতি হ’ত না!” একটু ইতস্ততঃ করিয়া মাধবী বলিল, “একটা ত নয়, छुट्टै। ” বিস্মিত হইয়া বিমান বলিল, “দুটো? আর-একটা कि ?” মাধবীর মুখে একটা ফিক রক্তোচ্ছাস দেখা দিল । ভূমিতলে দৃষ্টি নিবদ্ধ করিয়া সে বলিল, “একটু আগে ত বলছিলেন যে না পেয়ে ছেড়ে দেওয়ার দুর্বলতাও আপনার আছে । তা আমি বলি, আপনি ছাড়লেন কেন ? না ছাড়লেই ত হ’ত ।” বিমান একটু হাসিল । ছাড়ার কথা মাধবী কি মনে করিয়া বলিল তাহা সে ভাবিয়াও দেখিল না, বুঝিতেও পারিল না, উপস্থিত যাহা তাহা মনের পাওয়া এবং নাপাওয়ার সমস্তার মধ্যে দুলিতেছিল, সে অন্যমনস্কতায় তাহারই কথা মনে-মনে মানিয়া লইয়া বলিল, “সব