পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা ] অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষভাগ পৰ্য্যস্ত এই নীতি দৃঢ়তার সহিত অনুসরণ করা হয়। বাড়তি মালের রপ্তানির জন্য ইংলও অন্যান্য জাতির সহিত বাণিজ্য-চুক্তিতে আবদ্ধ হইত। ১৭০০ খ্ৰীঃ অঃ পোণ্ডুগালের সহিতু ইংলণ্ডের যে-চুক্তি হয়, তাহ উল্লেখযোগ্য। এই চুক্তি-অহসারে পোর্তুগাল ইংলণ্ডের পশমে তৈয়ারী মালের উপর অন্তঃশুল্ক হ্রাস করিতে স্বীকৃত হয়। ইংলণ্ড ইহার পরিবর্তে পোৰ্ত্ত গালের পোট, মদ্যের উপর শুল্ক হ্রাস করিতে অঙ্গীকৃত হয় । ইহাতে পশমের ভৈয়ারী মলি চালান দেওয়া ছাড়া ইংলণ্ডের আরও দুইটি উদেশ্ব ছিল । প্রথম, পোর্তুগাল ব্ৰেজিল হইতে বহু রৌপ্য আমদানি করিত, এই রৌপ্য ইংলণ্ডে আমদানি করা। দ্বিতীয়, ফ্রান্সের বাবৃগাণ্ডি-মদ্যের ধ্বংস-সাধন। ইংলণ্ডের এই দুই উদ্বেগুই সফল হইয়াছিল । যোড়শ শতাব্দীতে ইউরোপের নানা জাতি এসিয়া, আমেরিকা ও আফ্রিকায় উপনিবেশ স্থাপন করিতে আরম্ভ করে । এইসকল উপনিবেশের সহিত যে নীতি-অনুযায়ী বাণিজ্য করা হইও, তাহ নেভিগেশ্যন ল’ নামে প্রসিদ্ধ । প্রত্যেক জাতি নিজের উপনিবেশগুলি নিজের সম্পত্তি বলিয়া ভাবিত । এক-জাতির উপনিবেশের সহিত অন্তজাতির বাণিজ্য করিবার অধিকার ছিল না। উপনিবেশগুলির রপ্তানি ও আমদানি যে-জাতির উপনিবেশ, সেই জাতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল । উপনিবেশগুলি কাচা মাল জোগাইবে ও বিজেতার তৈয়ারী মাল ক্রয় করিবে, ঔপনিবেশিক বাণিজ্য-নীতির ইহাই মূল কথা। শুধু ইহাই নহে, বিজেতার জাহাজ ছাড়া অন্য কোন জাহাজে মাল আমদানী রপ্তানী করা নিষিদ্ধ ছিল । ইহাই নেভিগেশ্বন ল’ ৷ এইসকল আইন হইতে আয়ারল্যাণ্ড পৰ্য্যন্ত একেবারে মুক্ত ছিল না। ১৬৬০ খৃঃ অব্দে আয়াল্যাণ্ডের মাংস ও দুগ্ধজাত দ্রব্য ইংলণ্ডে আমদানি বন্ধ করিয়া দেওয়া হয়, কারণ ইহাতে ইংলগুজাত ঐসকল দ্রব্যের ক্ষতির সম্ভাবনা ছিল । আয়াল্যাণ্ডের পশুপালন-ব্যবসা ইহাতে নষ্ট হইয়া যায়। আইরিশ রা বাধ্য হইয়া মেঘ-পালনে প্রবৃত্ত হয়, কিন্তু ইংলণ্ড ইংরেজের বাণিজ্য-নীতি Գ(t আইরিশ, পশমও ইংলণ্ডে আমদানি করা বন্ধ করিয়া দেয়। ঔপনিবেশিক বাণিজ্য-নীতির অত্যাচারে আমেরিকার উপনিবেশের ১৩টি প্রদেশ বিদ্রোহ ঘোষণা করে। ( ১৭৭৫— ১৭৮১ খৃঃ অঃ ) নেভিগেশ্বান ল আরও বহুকাল বলবৎ ছিল। ১৮৪৯ খৃঃ অন্ধে উহা তুলিয়া দেওয়া হয়। ১৮৪৬ খৃঃ অঃ শস্য-শুদ্ধ তুলিয়া দেওয়া হয়, উইfর সহিত আরও কয়েকটি অস্তঃশুল্ক তুলিয়া দেওয়া হয়। উনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে ইংলণ্ডে অবাধ বাণিজ্য প্রচলিত হয় । অবাধ বাণিজ্যমত মতহিসাবে এডাম্ স্মিথ, সৰ্ব্বপ্রথম প্রচার করেন। র্তাহার প্রসিদ্ধ পুস্তক ওয়েলথ অব নেশন্‌স ১৭৭৬ খৃঃ অব্দে প্রকাশিত হয়। শস্য-শুদ্ধের বিরুদ্ধে ইংলণ্ডে প্রবল আন্দোলন উপস্থিত হয় ও স্মিথের মত বিশেষভাবে প্রচারিত হয় । এই আন্দোলনে কব ডেনের নাম বিশেষ উল্লেথযোগ্য । উনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগ পর্যন্ত ইংরেজের বাণিজ্যনীতির আলোচনা করা গেল। এই সময়ের মধ্যে ইংলণ্ড পৃথিবীর মধ্যে সৰ্ব্বাপেক্ষ ধনশালী ও বলশালী হইয়া উঠে । এই ধনবল, নৌবল ও সামরিক শক্তি সমস্তই অবাধ বাণিজ্য-নীতি গ্রহণের পূর্বেই অর্জিত হইয়াছিল। অবাধ বাণিজ্য-নীতি-গ্রহণে তাহার হ্রাস না হইয়া উত্তরোত্তর বৃদ্ধি হইতেছে। ইহার কারণ পরে প্রদর্শিত হইবে । সংরক্ষণ-নীতি যেভাবে ইংলণ্ডকে বলশালী ও ধনশালী করিয়াছে, তাহ। এই – ( ক ) পশমী কাপড়, রেশমী কাপড় ও স্বতী কাপড়ের ব্যবসায় । পশমের ব্যবসায়ে কিভাবে সংরক্ষণ অবলম্বন করা হইয়াছিল তাহা আমরা দেখিয়াছি । তৃতীয় এডোয়ার্ড ফ্লেমিশ তাতিদের ইংলণ্ডে বসবাসের সুবিধা করিয়া দেন । পশমী কাপড়ের ব্যবসায়েই ইংলণ্ডের সৌভাগ্যের স্বত্রপাত । প্রথম জেমসের সময় ইংলণ্ড যত মাল রপ্তানি করিত তাহার ৯/১০ পশমের কাপড় । ইংলণ্ডের পশম-শিল্প ফ্লেমিংশদের ও হানসিয়াটিক্ লীগের পশম-শিল্প ধ্বংস করে। ইংলণ্ড ভারতবর্যের কাপড় ও