পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা ] রিণত হইল। সৈন্তসংশ্লিষ্ট একদল চিকিৎসক সেখানে মোতায়েন হইল। যখন কামান বলুকের দূরাগত গর্জন থামিয়া গেল, তপন, ঐ বাড়ীর প্রাচীরের ভিতর আহতদের গোঙালি ও স্বাৰ্ত্তনাদ শোনা বাইতে লাগিল । 發 হটে শিরা তাহার কাপড়ের আলমারি হইতে একটা লাল সাটিনের জীকালে পরিচ্ছদ বাহির করিয়া উহু কাইচি দিয়া চারপণ্ডে বিভক্ত করিল এবং দুটো চওড়া টুকী একটা সাদা চাদরের উপর আড়াআড়িভাবে সেলাই করিয়া দিল। উপস্থিতমত এই নিশান প্রস্তুত করিয়া, উহার বাড়ীর সৰ্ব্বোচ্চ অংশে উঠাইতে হুকুম দিল । জৰ্ম্মানরা ফরাসীদিগকে দূরীভূত করিয়াছিল, কিন্তু আবার ফরণীর ঐ বাড়ী হইতে কিঞ্চিৎ দূরে ব্যুহ পুনর্গঠিত করিয়া, গিরিপথকে রক্ষা করিবার জন্ম কৃতসঙ্কল্প হইল ; প্রশীয়রা যে-স্থান অধিকার করিয়াছিল সেখান হইতে গিরিরন্ধে, উহার গোল নিক্ষেপ করিষ্ঠে পারিত ; ঐ গিরিপথ ও বিজয়ী গোলন্দাজের দল এই উভয়ের মধ্যস্থলে হর্টেন্‌ণীয়ার বাড়ী অবস্থিত ছিল ৷ হর্টেন্‌লীয়ার বাড়ীর ছাদে "রেডক্রস" নিশান উড়িতেছিল। বাড়ী খালি করিয়া ফেলিতে, জাৰ্ম্মাণ সেনাপতি হুকুম দিলেন । এই হুকুমনাম লইয়। একজন সেনানায়ক তদ্বনি যাত্রা করিল এবং আধঘণ্টার মধ্যে উদ্যান-ফটকের সম্মুখে আসিয়া ঘোড়া হইতে নামিয় পড়িল । সেনানায়ক মনে করিয়াছিল, কোন ভরত্রস্ত ও পদানত গ্ৰাম্য লোককে দেখিতে পাইবে; কিন্তু হটেনশিয়া আসিয়া স্পষ্ট জবাব দিল—“হুকুম তামিল হুইবে না।” সেনানায়কের সঙ্গে দুজন আদলি মাত্র ছিল—সুতরাং প্রতিরোধ করা অসম্ভল। কিন্তু রমণীর রূপে সে মুগ্ধ হইয়াছিল। হটেনশিয় তাহকে ৩হার বাড়ীতে লইয়। গিয়া সেখানকার সমস্ত কামরা দেখাইল, কামরীগুলা গোলাগুঞ্জির আঘাতে আহত সৈনিকে শুরিয়া গিয়াছে। ফিরিবার সময় হটেনশিয়া ফটক পৰ্য্যস্ত তাহীর সঙ্গে আসিয় আবার বলিল, সে কখনও বাড়ী ছাড়িয়া যাইবে না—যদি বাড়ীর ggBB BBBB BBBS BB BB BBS BBBS BBB BB BBK আছে তাহদের যে-দশা হুইবে, তাহারও সেই দশ৷ ইইলে । এইরূপ জোরালো-ধরণের উত্তর পাইয়া, বিরক্ত হইয়। সে ফিরিয়া গেল । কিন্তু রমণীর রূপে সে এতটা মুগ্ধ হইয়াছিল যে, তাহাব প্রধানের কাছে সমস্ত ঘটনা রিপোর্ট করিবার সময় যদিও অসংখ্য আহতের কথা এবং &কুম নাম অগাস্থ করিবার কথা বলিয়াছিল, কিন্তু এইসব বিবরণের চেয়ে সে হটেনশিয়ার অসাধারণ রূপলাবণ্যের কথাই বেশী করিয়া বর্ণনা করিয়া ছিল। সে হটেনশিয়ার রূপের এত প্রশংসা করিল যে, যুবক সেনাপতি--- তিনি ত আর নিৰ্ব্বোধ লোক নন—তিনি নিজেই এই কঠিন ব্যাপারের একটা নিপত্তি করিবেন বলিয়া স্থির করিলেন ; এবং দুইজন রক্ষক সঙ্গে লইয়া অশ্বারোহণে অট্টালিকার অভিমুখে যাত্রা করিলেন। বিজয়ী জৰ্ম্মান সেনাপতি যখন অট্টালিকার গরদে বেষ্টনের নিকট পাসিয়া পৌঁছিলেন, তখন রাত্রি হইয়াছে। পথের দুধারে বৃক্ষশাখা ঝুলিয়া পড়িয়া একটা পিলানবীথি রচনা করিয়াছে। দিগন্তদেশে কতকগুলী নারাঙ্গি রঙ্গের মেঘ ক্ৰমশঃ কালে হইয়া আসিতেছে । জলাশয়ের উপর তরুগণের গঠণহীন পিণ্ডাকৃতি শাখাপল্লব প্রতিবিম্বিত হইয়াছে—প্রতিবিম্ব বায়ুভরে ঈষৎ কম্পিত হইতেছে । প্রাচীরের মাথা হইতে আইভি লতা বুলিয়া পড়িয়া আলোশিত হইতেছে এবং পরিত্যক্ত ফুলের কেয়ারি হইতে ভিজ মাটির তাজা গঙ্ক বাহির হইতেছে । গবাক্ষ লিস্থত আলোকে আকৃষ্ট হুইয়া কতকগুলা বাছড় উড়িয়া বেড়াইতেছে এবং ঐ আলোর পীত রশ্মি উদ্যানের কাকরের উপর নিপতিত হইয়াছে। শাস্তি-আশ্রমের স্কায় স্বারের যুদ্ধের পর Գ:» পাদমূলে রাশীকৃত অস্ত্রের দুইটা স্তপ স্থাপিত হইয়াছে। দাসের. উপর পাশাপাশি বিজেতা ও বিজিতের বন্দুক দেখা যাইতেছে । সোপাণ-গরাদের উপর হাতের উপর শুর দিয়া, হটেনশিয়৷ সোপান সম্মুখস্থ প্রবেশ-দালানে সেনাপতিকে অভ্যর্থনা করিল। প্রাণীয় সেনাপতি তরুণবয়স্ক। র্তাহার উচ্চপদ স্বীয় অভিজাত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত । উহার হললিত ও পুরুষোচিত সুন্দর মুখশ্ৰী—তাহার ক্ষত্রস্থলভ সামরিক ভাবভঙ্গী যে-কোন ললনাকে মুগ্ধ করিতে পারিত। তিনি যখন হটেনশিয়াকে দেখিলেন, তখন ভুলিয়া গেলেন—তিনি একজন সৈনিক : মনে রছিল শুধু, তিনি একজন মানুষ । তিনি ভদ্রভাবে মাথ৷ হইতে শিরথtণ খুলিয়। হাতে রাখিয় দিলেন –যেন কোন সম্রাস্ত মজলিশের বৈঠকখtণtয় প্রবেশ করিতেছেন । হটেনশিয়া বলিল –“আমি আপনাকে এইখানে অভ্যর্থনা করছি কেনন। আমার বাড়ী একটা রক্তের ডোলা হ’য়ে পড়েছে। ভিতরে গেলে, আপনি ফরাসী-সৈনিকের উর্দি মাড়াবেন, সেই সঙ্গে জাৰ্ম্মান সৈনিকেরও চর্দি মাড়াবার আশঙ্ক আছে।” অনেকক্ষণ ধরিয়া বাদানুবাদ হইল, কিন্তু সেনাপতির কথাবাৰ্ত্তার উগ্রভাব বা রূঢ়ভােব কিছুই ছিল না। এমন কি সেনা-নায়কের নিকটে হটেনশিয়ার যে অস্বীকৃতি পূৰ্ব্বে শুনিয়াছিলেন, সেই দৃঢ় অস্বীকারোক্তি সেনাপতি আবার যখন শুনিলেন, তিনি একটুও বিচলিত হইলেন না। ঠিণি উহা বেশ শাপ্তভাবে গ্রহণ করিলেন। হটেনশিয়া সিড়ির গরীদের উপর হেলtন দিয়া ছিল । দেখিলে মনে হয়, যেন একটি কল্পনার ছলি । প্রবেশ-দালানে যেটুকু উজ্জ্বলতা ছিল, হটেনশিয়ার সাদা পরিচ্ছদ সমস্তই যেন শুধিয়া লইয়াছিল। তাহার চারিদিকেই কালো অন্ধকার, সেই অন্ধকারের মধ্যে তাহার দেহঘষ্টি ফুটিয়া উঠিয়ছিল।...পাশ্ববৰ্ত্তী পুষ্করিণীতে ভেকের একটা ধেমুরে ঐক্যতান উঠাইয়াছে ; এবং মধ্যে মধ্যে দূর হইতে জৰ্ম্মান বিউগল শোনা যাইতেছে। কিন্তু প্রুশীয় সেনাপতি সেই সময় কেবল হটেনশিয়ার মধুর কণ্ঠস্বরই শুনিতেছিলেন। তিনি পিতৃভূমি ভুলিয়া গিয়াছিলেন, রাজাকে ভুলিয়৷ গিয়ছিলেন, ফরাসী-বিদ্বেষ ভুলিয়া গিয়াছিলেন. জয় ও যুদ্ধের কথা ভুলিয়া গিয়াছিলেন। অবশেষে উত্তর প্রদেশের বর্বর, ল্যাটিন রমণীব পদতলে পতিত হইল। হটেনশিয়া কৃষ্ট ন হইয়া, অবিচলিত চিত্তে তার হাত ধরিয়া ভাইকে উঠাইল। সে উহাকে বলিল — “যাও, কাল নিশ্চয়ই তুমি আমার বাড়ীর পিছনের গিরি-সঙ্কট আক্রমণ করবে...এখন আমার কথা বেশ ভাল করে পুঝে দেখ ; যদি একটা গোলাও এখানে না পড়ে, যদি তোমার ফৌজের একটি গুলিও এই প্রাচীরে না লাগে, যেসব আহতেরা এখানে যন্ত্রণ ভোগ করছে তোমার কোন হুকুমের দরুণ যদি এদের যন্ত্রণার বৃদ্ধি ন হয় তা হ’লে ---সন্ধ্যার সময় এপানে এসো, তোমার দ্বিগুণ বিজয় লাভ হবে ।” একটু পরেই, জৰ্ম্মন সেনাপতি তাহার ছাউনীতে ফিরিয়া গেলেন । উহার সঙ্গীদিগকে বুঝাইয়া বলিলেন, ঐ বাড়ীট খালি কপ্লিধ'র কোণ প্রয়োজন নাই । অট্টালিকাটা এখন নিঝুম নিস্তব্ধ— কেবল আহত সৈনিকের আর্ন্তনাদ অঞ্চল পার্শ্ববৰ্ত্তী বনের তরু-কোটরপ্রচ্ছন্ন পার্থীর ডাক মধ্যে মধ্যে এই গভীর নিস্তব্ধত ভঙ্গ করিতেছে। পরদিন, জৰ্ম্মানের ফরাসীদের স্থান আক্রমণ করিল, কয়েক ঘণ্ট। কালব্যাপা ভীষণ গোলাগুলি বর্ষণের পর, ফরাসীদের তোপের মুখ বন্ধ হইয়া গেল। ঐ যুদ্ধে কিরূপ হুকুম জারি হইয়াছিল কিংবা কে আক্রমণের হুকুম দিয়াছিল, ইতিহাস তাহা কখনই বলিলে না। কিন্তু আসলে দেখা যায়, বাড়ীর প্রাচীর-গাত্রে একটি গুলিও চ্যাপ ট্রাইয়া যায় নাই ; একটি গোলাও উদ্যানের ভিতর ফাটির পড়ে নাই। সমস্ত গুলি