পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ওষ্ঠ সংখ্যা ] মানুষের কোন ভগ্নাংশ দেওয়া হইবে, হিন্দুদিগকে এক জনের উপর আরো কোন মানুষের ভগ্নাংশ দেওয়া হইবে, এবং খৃষ্টিয়ানদিগকে, বৌদ্ধদিগকে, জৈনদিগকে, শিখদিগকে, ইহুদীদিগকে, তাহাদের সংখ্যা-অনুসারে একএকটা মানুষের কোন ভগ্নাংশ দেওয়া যাইতে পারিবে। যদি গবেষণা দ্বারা স্থির হয়, যে, মানুষের ভগ্নাংশ জীবিত অবস্থায় বোতলে স্পিরিটেও রক্ষা করা যায় না, তাহা হইলে চারিজন মন্ত্রী রাখিয়া গরীব রায়তদের টাকাটার অপব্যয় না করিয়া তিনজনই রাখা হউক, এবং ঐ তিনজন মুসলমান সম্প্রদায় হইতেই লওয়া হউক । এই পৰ্য্যস্ত লিখিত হইবার পর, কাগজে দেখিলাম, গুজব রটিয়াছে, লাট লিটনের ইচ্ছা, কেবল দুজন মন্ত্রী রাখিবেন—একজন হিন্দু, একজন মুসলমান। ছজন মন্ত্রী রাখিবার প্রস্তাব মন্দ নয়। কিন্তু তা’র চেয়েও ভাল হয়, একেবারেই মন্ত্রী না রাখা । যখন তিনজন মন্ত্রী ছিলেন, তখন বাংলা দেশ নন্দন কাননে পরিণত হয় নাই ; এই যে কতদিন মন্ত্রী নাই, .তাহাতেও ত বাংলা-দেশ রসাতলে যায় নাই । অকারণ এভগুলো টাকা মন্ত্রীfদগকে দিয়া লাভ কি ? তা’র চেয়ে পুলিশের লোকদের সংখ্যা বাড়ানো হউক, তাহাদের খাটপালঙ্ক মশারি হউক, সকলের জন্য পাকা বাড়ী হউক, এবং গুপ্ত আইন দ্বারা একটা রেটু ট্ৰাধিয়া দেওয়া হউক, যে, এখন যে-সব পুলিশের লোক যত ঘুস লইয়া থাকে, ভবিষ্যতে তাহার দ্বিগুণ লইতে পাপ্লিবে । এইপ্রকার বন্দোবস্ত করিলে, দেশের "ভয়ানক” উন্নতি হুইবে । তবে যদি নিতান্তই মন্ত্রী রাখা হয়, তাহ হইলে এক দুই তিন বা চারিজন মুসলমান মন্ত্রী রাখা হউক । তাহা হইলে মুসলমানের কতকটা বুঝিতে পারিবেন, তাহাতে দেশের ও র্তাহাদের সম্প্রদায়ের অধিকাংশ লোকের (-দুচা’র জন চাকরিপ্রার্থীর নয় ) কিরূপ স্ববিধা হয় । বড়লাটের ছুটি গ্রহণ • বড়লাট ছুটি লইয়া বিলাত যাইতেছেন। ব্রহ্মের লাট, বিহার-উৎকলের লাট, রাজস্বমন্ত্রী, প্রভৃতিও ছুটি লইয়া বিলাত যাইতেছেন। ইহাদের সাহায্যে বড়লাট বিবিধ প্রসঙ্গ—বড়লাটের ছুটি গ্রহণ じ°8● ভারতসচিব লর্ড বার্কেনহেডের সঙ্গে ভারতবর্ষের বর্তমান গুরুতর সমস্যাসমূহ-সম্বন্ধে সলা করিবেন । ব্যবস্থাপক সভায় প্রশ্ন করিয়াও কিন্তু জানা যায় নাই, 曲 আমূলাদের মতে সে সমস্যাগুলি কি । যাহা হউক ভারতের উচ্চতম কৰ্মচারীদেরও ছুটি লইবার যে নূতন নিয়ম প্রবর্তিত হইয়াছে, তাহাতে দেখা যাইতেছে, স্থায়ী ও অস্থায়ী দুই প্রস্ত রাজপুরুষের জন্য ভারতবর্ষের টাকা আগেকার চেয়ে বেশী খরচ হইবে, এবং আমলাতন্ত্রের মুখপাত্রের স্বশরীরে বিলাতে গিয়া ভারতীয়দের রাষ্ট্ৰীয় অধিকার বা সন্ত কোনো স্ববিধা লাভের বিরুদ্ধে ভারতবর্ষেরই টাকায় ওকালতি করিতে পারিবেন । অথচ ভারতসচিবের কাম্রায় মন্ত্রণার নামে তাহারা যে ওকালতি করিবেন, তাহা গোপন থাকিবে । & ভারতীয় ব্যবস্থাপক সভার সভ্যেরা এবং ভারতবর্ষের নানা প্রদেশের বেসরকারী নেতার তাহাদের কয়েকজন প্রতিনিধিকে লাটসাহেবদের সঙ্গে-সঙ্গে যদি বিলাত পাঠান, তাহা হইলে ভাল হয় । কারণ, ভারতসচিবের সঙ্গে কি মন্ত্রণ হইবে, তুহি বিলাতে হুবহু বাহির, না হইলেও তাৎপৰ্য্যটা বাহির হইয়া যাইবে । কেননা, তথাকার খবরের কাগজওয়ালার উদ্যোগী ও প্রভাবশালী ; কোনপ্রকারে খবর সংগ্ৰহ করিবেই । তাৎপৰ্য্যটা জানা পড়িবা মাত্র ভারতীয় প্রতিনিধিরা যদি তাহার যথাযোগ্য প্রতিবাদ ও সমালোচনা করেন,তাহা হইলে ভারতবর্ষের তরফের কথাও বিলাতের লোকেরা জানিতে পারিবে । অনেকে মনে করেন, ইহাতে কোন লাভ নাই । আমরা মনে করি লাভ আছে । বিলাতে, আমেরিকায়, পৃথিবীর নানাদেশে ভারতবর্ষ সম্বন্ধে আধা-সত্য ও মিথ্যা কথা প্রচার করিবার জঙ্ক ইংরেজদের তরফের লোক আছে । তাহার ফলে জগতের জনমত ভারতের পক্ষে গঠিত হইতে পায় না। এই সব পুরামিথ্যা ও আংশিকমিথ্যার প্রতিবাদ করিবার লোক ঐ-সব দেশে থাকা উচিত । বিলাতে ত থাকা উচিতই । দেশে-বিদেশে সৰ্ব্বত্র মিথ্যা কথার ও মিথ্যাসংবাদের প্রতিবাদ হওয়াচাই । জনমতের জয় হইবেই হইবে ।