. So বাহিরের আলো বাতাস নরহরির চরণপরশে জীবন ধন্ত করিতে পারে। ' তাহার পরনের ধুতিপানি আৰ্দ্ধমলিন হক্টলেও পাড়সৌষ্ঠবে আত্মমৰ্য্যাদা বজায় রাথিয়াছে । রামধন্সর সপ্তবর্ণই তাহার পাড়ে অধিষ্ঠিত, এবং প্রত্যেকটি বর্ণ ষ্ট নিজ শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করিবার জন্য সেঙ্গ পাড়ে হৃদয়ের সকল আবেগ ঢালিয়া প্রচণ্ডরূপে ফুটিয়া উঠিয়াছে । তাঙ্গাদের রেষারেমির ফলে ধুতির পাড়পানি সঙ্কীর্ণ রণক্ষেত্রের মতই বিপজ্জনক বলিয়া মনে হয় । কিন্তু সেই রণক্ষেত্রের উপরে আকাশের মত অনন্তবিস্তৃত একখানি নীল পাঞ্জাবী সবকিছু ব্যাপিয় পড়িয়া রহিয়াছে। যেন ধুতির ছুরির-সাহায্যে-র্কোচান ক্রুদ্ধমূৰ্ত্তি পাড়পানার ভয়েই পাঞ্জাবীটি চরণ ছাড়িয়া সাবপনতার পাতিরে কয়েক ইঞ্চি উৰ্দ্ধে রহিয়াছে। পাঞ্জাবীর বোতামগুলি জাৰ্ম্মানদেশ হইতে তাহাদের নকল সোন ও আসল কাচে সজ্জিত সৌন্দৰ্য্য লইয়ানরঙ্গরির বুকে স্থান পাইবে এই আশাতেই বহুদীর্ঘ পথ অতিক্রম করিয়া আসিয়াছিল। সে আশা সফল হওয়ায় আনন্দের আতিশয্যে কোনে কোনোটি কাচহার হইয়া গিয়াছে । তার পর সেই চশমাপানি ! অতল সমূদ্রের কচ্ছপ ও খনির গভীর সোন দুষ্টয়ে মিলিয়। তার পীতবর্ণের কাচদুটি পরিয়া বিরাজমান । নরহরির তৃষ্ণাৰ্ত্ত আঁপির আকুলত সেই পীত শুিঞ্জরের ভিতর দিয়া শীর্ণকায় বন্দীর মতই লোকের প্রাণে করুণার উদ্রেক করে । সেন তার দৃষ্টি জগৎকে ব্যাকুল হইয়। বলিতেছে, “গুগো ! কেন ? , - A. কোথায় ? হায় ! সে কি আর ? s::: উচ্চ ! ইত্যাদি । সে দৃষ্টির কাহিনী ভাষায় বলা যায় না ; আলোকচিত্রে তাহ প্রস্তরপুষ্পের মতই অসাড় দেখুয়; সিনেমায় বুঝি তাহার নিবিড় ভাবলালিত্যের একটু আভাস ক্ষণিকের জন্য পাওয়া যায়। অবগুণ্ঠনবতীর সরমের মত সেই প্রবাসী—বৈশাখ, ১৩৩১ ২৪শ ভাগ, ১ম খণ্ড , চাহনি চশমার অন্তরালে মর্শদহনের ব্যথা অঙ্গে সুখিয়৷ আহত মরালের মত গোপনে মৃত্যু-প্রতীক্ষা কবিতে “চাই কিন্তু পারি না” বলিয়। অপরাধীর মত জড়সড় হইয় রছিয়াছে । সেই চাহনি দেখিয় নরহরির মানস-প্রিয় মুহুমুক্ত মূচ্ছিতা ও চিরবন্দিনী ! আর সেই টেষ্ট্ৰী ! বটবৃক্ষ যেমন স্বভাব-সুন্দর ইষ্টয়৷ বাড়িয় উঠে, মাহুষের রুত্রিমতার যন্ত্র যেমন বটবৃক্ষকে কেয়ারী করিতে সাহস পায় না, তেম্নিই নরহরিব চুল স্বভাবসৌন্দৰ্য্যময় গতিতে তাহার মেরুদণ্ড বাহিয়৷ বহুদূর আসিয়া পড়িয়াছে। মাথার উপর তাহা বিচিত্র ভঙ্গীতে অবস্থিত। কোথাও প্রলয়তুফানের মত তাঙ্গ তরঙ্গায়িত, কোথা ও তাঙ্গ টেনিস-কোর্টের মতই সমতল, কোথাও তাহাতে উত্তেঙ্কন অপ্রতিহত প্রভাব বিস্তার করিয়া রহিয়াছে, আর কোথাও তাঙ্গ মরণের ন্যায় শান্ত ধীর । এ যেন তাতারই হৃদয়ের বাহিক প্রতিচ্ছবি । হায়, এ হেন নরহরিকে তাহার ডাক্তারপোড়ে। বন্ধুবৰ্গ “প্যাকমপর। সারস্পক্ষী” আখ্যায় বিভূষিত করিয়াছিল । কেন তাঙ্গদের এ দুৰ্ম্মভি হইল তাঙ্গ বঝাইতে ইষ্টলে আরও একটি কথা বলা প্রয়োজন । (৪) চলন হঁাটিয় বেড়াইলে নরহরিকে কিঞ্চিৎ অপার্থিব-রকম দেখায়। মনে হয় যেন এই উদ্যম পৃথিবীতে সে একট। বিরাটু জিজ্ঞাসার চিহ্নের মত ঘুরিয়া বেড়াইতেছে। তাহার মস্তক সুদীর্ঘ গ্রীবার উপর সম্মুখে ঝুলিয়া পড়িয়া অবস্থিত। যেন পুথিবীর কোলে তাহার জীবন সৰ্ব্বস্ব হারাষ্টয়, সে আজীবন হারামণির অন্বেষণে চঞ্চল হইয়। ঘূরিয়৷ বেড়াইতেছে। অধোদেশে দীর্ঘ রুগ্ন শরীর পূর্ববর্ণিত সাজসজ্জায় মণ্ডিত হুইয়া আকাশপ্রদীপের বংশদণ্ডের ন্যায় বৰ্ত্তমান। সে যেন জগৎকে জিজ্ঞাসা করিতেছে “তবে কেন মিছে ভালবাস ?” প্রতিপদক্ষেপে নরহরি প্রমাণ করিয়া দেয় যে ভগবান মানুষের পদযুগলকে পথ অতিক্রম করিবার জন্যই হুষ্টি করিয়াছেন : তাহা হইতে জুতা ঝুলাইয়। রাখিবার জন্য নহে। যাহার পরীকাতর তাহারা বলিত যে তাহার হণ্টন দেখিলে মনে হয় কোনো শুচিবায়ুগ্ৰস্ত উষ্ট সন্তপণে মন্দিরপথে চলিয়াছে ।
পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।