১২ তাহার নমনীয় মন সদাই লুদ্ধ লোলুপ হইয়া প্রেম ও নারী লইয়া জল্পনা-কল্পনা করিত। ইতিমধ্যে অধিক পাঠ প্রয়োজন হওয়ায় তাহাকে কলিকাতায় আসিয়া বাস করিতে হইল। মির্জাপুরের এক মেসে তাহার বাসস্থান স্থির হইল। কল্পনা আজকাল তাহার উপর এত অধিক অত্যাচার মুরু করিল যে সে প্রণয়-পাত্রীর অভাবে আপন মনে বসিয়া প্রেমপত্র লিখিত। তাহার পত্রগুলির মধ্যে অর্থহীন ভাষায় সে শুধু এইটুকুই বুঝাইয়া দিত যে “শূন্ত মন্দির” তাহার আর সহ হইতেছে না । প্রেমপত্র লিগন ও দ্রুততালে বক্স-হারমোনিয়াম বাজাইয়া জগৎকে নিজের স্বরবোধের অভাব জ্ঞাপন ব্যতীত, ছাদে দাড়াইয়। চারিদিকের বাড়ীগুলিতে তাহার “প্রিয়া” “মানস প্রতিম৷” “হৃদয়েশ্বরী" “কুচকিনী” }, অথবা ঐ জাতীয় কিছু হুইবার উপযুক্ত কেহ আছে কিন দেখাও তাহার একটা কাজ হইয় দাড়াইল । পাশের বাড়ীতে জানালার ধারে বসিয়া কে একটি নারী সেলাই করিত। তাহার মুখ নরহরি দেপিতে পাইত না, কিন্তু দেখিত সে একখানা আধ-ময়লা ধূসর রংএর শাড়ী রিয়৷ নিজ কাজে ব্যস্ত থাকে। সে ভাবিত—হয়ত ঐ মে ' য়েটির অবস্থা খারাপ, অল্প-সংস্থানের জন্য হয়ত উহাকে কাজ করিতে হয়। নরহরি স্থির করিল তাহাকে সাহায্য করিবে ' কিন্তু অপরিচিতের দান কি সে গ্রহণ করিবে ? इनि ... লে যে উহাকে ভালবাসে তাহ হইলে হয়ত প্রেমের খাতিরে :ে নরহরির দেওয়া অর্থ গ্রহণ করিতে পারে । ইঞ্চিগর ক “ ঘণ্টার মধ্যেই নরহরি ঐ মেয়েটির সহিত ঐীদ দি গু হইয় পড়িল। অর্থাৎ সে বুঝিতে পরিণ a ৯ সেটের প্রতি ভালবাসার ভাগর হৃদয় ভারাক্রান্ত হইয়া রহিয়াছে এৎ " সে ভার লাঞ্চল করার একমাত্র উপায় 4. তাহাকে পত্রলিপন । - a faহ তথা ক যা। কয়েক ঘন্টার মধ্যেই নরহরি প্রণয়ের হতাশ্বাসে ভরা - একপানি পত্র একটি টাকায় মুড়িয় as aানাদার মধ্য দিয়, ঘরের মধ্যে ছড়িয়া দেশিল । সে আশায় আশায় রঙ্গিল যে এমন গভীর প্রণযর প্রতি দানা পাইবেই। ... • * প্রবাসী—বৈশাখ, ృులు) [ ২৪শ ভাগ, ১ম খণ্ড বিকার বেলা মেসের একতলায় তুমুল কোহল শুনিয়া নরহরি দেখিতে গেল কি ব্যাপার। গিয়া দেখিল একজন শীর্ণকায় ব্যক্তি নিজ মস্তকের সযত্বরক্ষিত কয়েক গাছি চুলও রাগে প্রায় উপ ডাইয়। ফেলিবার জোগাড় করিতেছে। ক্রোধে তাহার শ্যামবর্ণ মুখপানা উহারই মধ্যে একটু লাল হইয়া উঠিয়াছে। সে বলিতেছে যে তাহার বুদ্ধ পিসিমাতার সহিত অকথ্য-রকম পত্রালাপ করিয়া রসিকতা করিবার চেষ্ট যে ব্যক্তি করিয়াছে, তাহার লঙ্গ এবং প্রাণভয় দুইএরই অভাব দেখা যাইতেছে। সে নাকি ইচ্ছা করিলে মেসে আগুন ধরাইয়া মেসবাসী সকলের মাংসে কুকুর বিড়াল ও অন্যান্য অনেকরকর্ম জানোয়ারেব ভোজের বন্দোবস্ত করিতে বিশেষ দ্বিধ বোধ করিবে না। তাহার অধীনে নাকি কলিকাতার বেশীর ভাগ গুগু ও অপর-প্রকার দুর্জন কাজ করে এবং তাহার পিসিমা তাকে পত্রলিখন যমরাজকে নিমন্ত্রপ-পত্ৰ প্রেরণের সর্বাপেক্ষ স্থলভ উপায় ৷ ইত্যাদি। বহুকষ্টে তাহাকে থামাইয়া মেসের অধ্যক্ষ সকলকে ডাকিয় নানাপ্রকার কঠিন কথা শুনাইলেন। নরহরির তখন আর কিছু শুনিবার মত অবস্থা নহে। একনিমিষে যাহার প্রাণ-প্রতিমা যৌবন বা কৈশোর হইতে অকস্মাং বাৰ্দ্ধক্যে উপনীত হইয়া যায়, তাহার মৰ্ম্মবেদন অপরে কি বুঝিবে ? তাহার সমস্ত আস্তরখানি জুড়িয়া কালে মেঘের মত একটি নিবিড় বেদন সকল আশা ও সকল আনন্দের আলোক গভীরতিমিরাচ্ছন্ন করিয়া ফেলিল । নে তাহার প্রিয় হইতে হইতে হইল না, যাহার প্রণয়দুষ্ট তাহার পানে চাহিতে চাহিতে চাহিল না, যাহার কুহুকে সে ভুলিতে ভুলিতে ভূলিল না, যে তাঁহাকে ভ্রান্তিম খেলা পেলাইর চিরদিনের মত বিদায় গ্রহণ করিল, তাহার কথা নরহরি কোন প্রাণে ভুলিবে ? অদৃষ্টের এই গুপ্তঘাতকের মত ব্যবহারে নরহরির নবীন হৃদয় নিরাশার হলাহলে বিবর্ণ হইয়া উঠিল । (৭) বৰ্ত্তমান অতঃপর গল্পের স্বচনায় যে প্রেমিক-নরহরির বর্ণনা কপ ইয়াছে রাগর কথা বলা প্রয়োজন। তাহার ঐকপ অবস্থা বিনা কারণুে হঠাৎ হয় নাই। . কি করিয়া
পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।