পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՏԵ যে - দু’বাড়ীর মধ্যে যাবার একটি মাত্র দরজা থাকাতেই এই বিভ্ৰাট । .. - কাজের ফেরে দু'মাসের জায়গায় ছ'মাস লেগে গেল্ব। পেলাশেষি যেতে আসতে রাত হতে। মাকে বললে শুনতেন না, পাবার আগৃলে বসে থাকতেন অত রাত পৰ্য্যন্ত। দরজার পর অনেকটা পথ অন্ধকার। একদিন হোচট পেয়ে পড়ে গিয়ে একটু ব্যথা পেয়েছিলাম। মাকে অতিরিক্ত কষ্ট দেবার ভয়ে সে কথা জানাইনি। তার পূরের রাত্রে বারোটার সময় সন্তৰ্পণে দরজা খুলে পা বাড়াব, দেধি না সাম্নে একটি প্রদীপ জালানো রয়েছে। ভাবলাম মার কাছে কিছু লুকানো থাকে না । তার পর থেকে প্রত্যহ দরজার কাছে একটি প্রদীপ জলত । , সহদেব একেবারে সাধু-নিরামিষাশী। কিন্তু আহারবিষয়ে অহিংসা পরম ধৰ্ম্ম আমার কোনোকালে ছিল না । সহদেব বলত—"শিক্রে বুনে-মানুষের খাদ্য আমিষ হ’তে পারে, সভ্য মাতুল আমিষ খাওয়ার উপরের স্তরে উঠেছে।” আমি তর্ক করতাম। তবু এই নিয়ে মাকে বিত্রত করতে ভারি লঙ্গা হত। যাকে বলতাম—“আজকাল আমার মাছ না হ’লেও চলে, তুমি কেন ও নিয়ে ব্যতিব্যস্ত হও মা ।” মা শুনতেন না, বলতেন-—“তুই চুপ করে গেয়ে যা দেখি । তোর কিসে চলে ন-চলে তোর চেয়ে আমি ভাল বুঝি।” যেদিন থেকে তার স্বামী মারা গিয়েছিলেন আর ছেলে সংসারে থেকে ও সন্ন্যাসীর মত থাকতে আরম্ভ করেছিল সেইদিন থেকেই মার বাড়ীতে আমিষের পাট উঠে গিয়েছিল। তাই মাকে এমন করে কষ্ট দিতে মন সৰ্বত না। একদিন বললাম—“তুমি যদি ফের কাল মাছ রাধ যা, আর তোমার এখানে পেতে আস্ব না বলে’ দিচ্ছি।” তার পরদিনও যখন পাতে মাছ পড়ল তখন একটু রাগ করেই বললাম—“এত করে বললাম তবু তুমি শুনলে না মা ! তুমি কি ভাব এমন করে তোমায় দিয়ে মাছ রাধিয়ে পেয়ে সত্যি আমার কিছু স্বথ হবৃে—“ মা হেসে বললেন—“না বাবা, ন, আজ আর আমি রাধিনি, মাছ আনাইওনি-ওদের, বাড়ীর মেয়েটি নিজে গুরুধে দিয়ে গেছে। তাতে তোর আপত্রির কি আছে ?” "...কে ই মেয়েটি ভাবতে ভাৰুতে নীরবে পেতে প্রবাসী—বৈশাখ, ১৩৩১ [ ২৪শ ভাগ, ১ম খণ্ড লাঞ্ছলাম। তার পর থেকে কিন্তু কোনোদিনই সাহারে আমিনের অভাব দেখতে পাইনি। মাকে এই নিয়ে বলাতে মা বলেছেন—“কি কয়ূব ৰাৰ, যেরকম করে’ কাকুতি-মিনতি করে দিয়ে যায়, "না" বলতে পারি নে।” কে জানে, আমায় মাছ খাওয়াবার জন্তে হয়ত মারই এ একটা ছল। ছেঁড়া শার্টটার দিকে চেয়ে মা সেদিন বললেন—“জুটি ছেলেই হয়েছে আমার সমান পাগল ; ওই ছেড়া জামাট পরে বেড়াতে কি লজ্জাও একটু হয় না রে " " আমি হেসে বললাম—“না মা, তোমার ও-ছেলেটির মত ভোলানাথ আজও হতে পারিনি। সেলাই করবার উপায় নেই বলেই ছেড়া-জামাট চালিয়ে নিই।” মা বললেন—“কেন, আমি কি মরে গেছি রে!” . “তোমার এখনো সেলাই করবার মত চোখের জোর আছে তা ত জানতাম না মা !” মা বললেন—“তুষ্ট জামাটা রেগে যাস ত, তার পর বোঝা যাবে বুড়ি মার চোখের জোর আছে কি না-আছে।” তার পরদিন জামাটা হাতে নিয়ে অবাক্‌ হ’য়ে গেলাম, বললাম--“ক্ষমা করে মা, সেকালের মেয়েগুলোকে অত সোজ ভেবে বড় ভূল করেছিলাম বুঝছি । সেকালের মেয়েগুলোর সম্বন্ধে আমাদের অন্যায় ধারণ বালান দরকার ।” * - মা হেসে বললেন—“না বাবা, ও একালের মেয়েরই কাজ। সেকালের বুড়ির চোখে ফেঁাড়-সেলাই করবার মত জোর থাকতে পারে, অমন পরিপাটি রীপু করবার মত জোর নেই।” a আমি বললাম—“কিরকম ?” মা বললেন—“ও-বাড়ীর মেয়েটি বড় ভালো, চেয়ে নিয়ে গিয়ে সেরে দিয়েছে।” অনেক কথা জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করছিল, কিন্তু চুপ করে জমাট নিয়ে চলে গেলাম। - সেদিন অন্ধ ভার-হীন আকাশ পৃথিবীর উপর অর্থহীন গভীরতা নিয়ে চেয়ে ছিল। শুধু ঝড়বৃষ্টির উচ্ছম্বল মাতামাতিতে নির্জন পথ ধ্বনিত হচ্ছিল। রাত তখন নিজে