পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8లిచి যাহা দ্বারা অর্থাগম হয়, সেইরূপ শিক্ষার বন্দোবস্তই প্রথমে ও বেশীপরিমাণে স্বভাবতই হয়। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়েও সেইরূপই হইয়া আসিতেছে। ললিতকলার চর্চা এদেশে এখনও বিস্তৃতভাবে খুব একটা রোজগারের উপায় হয় নাই। কিন্তু কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে এবিষয়ে বক্তৃতা দিবার জন্য অধ্যাপক নিযুক্ত হইয়াছেন । কি অবস্থায়, কি কি কারণে ও কি কি উদ্দেশ্যে এই নিয়োগ হইয়াছে, তাহার আলোচন। এখানে অনাবশ্যক । আমরা এখানে কেবল ইহার লাভের দিকৃটাই মুখ্যতঃ দেখিব । কোন জাতিকে সৰ্ব্ববিষয়িণী শিক্ষা না দিলে ঐ জাতির লোকেরা সকল দিকে প্রবুদ্ধমন ও উদ্বুদ্ধস্বৰ্দয় হইতে পারে না, সুতরাং প্রকৃত সভ্যপদবাচ্যও হয় না । তজ্জন্ত ললিতকলার শিক্ষা ও অনুশীলন অবশ্যক। এক্ষেত্রে আমাদের বক্তব্য এই, ধে, যখন সাধারণভাবে ললিতকল| বিষয়ে অনুশীলন বিশ্ববিদ্যালয়ে আরম্ভ হইয়াছে, তখন সঙ্গীত, চিত্র, তক্ষণ, স্থাপত্য, ভাস্কৰ্য্য আদির শিক্ষার ব্যবস্থাও হুইবে আপ করা যায়। বিদেশী কাহারে সহিত তর্কযুদ্ধে বা পত্রব্যবহারে আশু-বাবুকে কখনও পরাজয় স্বীকার করিতে হয় নাই। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় সম্বন্ধে ও অন্তান্ত বিশ্ববিদ্যালয় সম্বন্ধেও তিনি যত জানিতেন, অন্য কোন বাঙালীর ততটা জানা ছিল বলিয়া আমরা অবগত নহি । বস্তুতঃ, বিদেশী শিক্ষা তত্ত্বজ্ঞদিগের সহিত তুলনা করিলে তাহাকে নিকৃষ্ট মনে করিবার কারণ ছিল না। এইজন্য মনে হয়, কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের দোষত্রুটিগুলি সম্ভবতঃ র্তাহার জ্ঞানাভাব হইতে উদ্ভূত নহে, অন্ত কারণে ঘটিয়াছিল। তিনি যে শিক্ষণ-বিষয়ে এবং পাণ্ডিত্যে একজন অগ্রগণ্য ব্যক্তি, তাহ বঙ্গের বাহিরে অন্যান্য প্রদেশেও কাৰ্য্যতঃ স্বীকৃত হইয়াছিল। তিনি খুব দৃঢ়চিত্ত শক্ত মানুষ ছিলেন। অনেক ঝড় র্তাহার মাথার উপর দিয়া বহিয়া গিয়াছে ; কিন্তু তিনি তাহাতে ভগ্ন বা নত হন নাই । আশু-বাবু বলিয়া তাহার পরিচয়েই বুঝা যায়, যে, তিনি বাঙালী বাৰু হইয়া জন্মিয়াছিলেন, এবং শেষ পধ্যস্ত বাঙালী 'বাবুই ছিলেন । সেই পরিচয়ে তিনি প্রবাসী-আষাঢ়, ১৩৩১ [ ২৪শ ভাগ, ১ম খণ্ড কখন লজ্জা বা সঙ্কোচ বোধ করেন নাই। ইহা সৌভাগ্যের বিষয়, যে, তাহার মত মানুষ “বাৰু বলিয়া পরিচিত ছিলেন ; কেন না, তাহাতে "বাবু” কথাটার অর্থের লাম্বব না হইয়া গৌরবই হইয়াছে। র্তাহার অশন বসন চাল চলন সাবেকধরণের ছিল। নিজের আফিস-আদালতের কাজ ছাড়া অন্য সব কাজে ও অবস্থায় তাহাকে ধুতিপরিহিত দেখা যাইত। বিশ্ববিদ্যালয় কমিশনের বৈঠকেও তিনি ধুতি পরিয়া উপস্থিত হইতেন । তিনি অবিলাসী সাদাসিধেভাবে জীবন যাপন করিতেন । র্তাহার দেশী চালচলনে অনুরাগ তাহার স্বাদেশিকতার অঙ্গ ছিল বলিয়া প্রতীত হয়। এক দিকে তিনি প্রভূত্বে ও নেতৃত্বে অভ্যস্ত শক্ত লোক ছিলেন বটে, কিন্তু অন্য দিকে সাবে ককালের ভদ্র বাঙালীর একটি গুণ র্তাহার ছিল যাহা আজকালকার দিনে খুব স্থলভ নহে। তিনি সকল অবস্থার সকল রকমের লোকের সহজে অধিগম্য ছিলেন। কোন কোন বড় লোকের, এমন কি খুব পরিচিত বড় লোকেরও, বাড়ীতে গিয়া দেখিয়াছি, বাড়ীর কৰ্ত্তার সঙ্গে দেখা করিতে গেলে বাড়ীর দারোয়ান বা অন্ত চাকর এমনভাবে তাকায় ও কথা বলে, যেন একটা ভিখারী বা হাংলা উমেদার আসিয়াছে। অশু-বাবুর বাড়ীতে কোন-না কোনপ্রকারের সহাধ্যপ্রার্থ ও উমেদার খুব বেশী যাইত, কিন্তু তিনি বাড়ী থাকিলে সকলে অনায়াসে অবিলম্বেই দেখা পাইত। তিনি সকলের কথাই মন দিয়া শুনিতেন, এবং উপায় ও সাধ্য থাকিলে সাহায্য বা উপকার করিতে বিমুখ হইতেন না। হাল ফ্যাশুনের “চেষ্টা করিব” বলিয়া ফাকি দিবার ও পরমুহূৰ্ত্তেই ভুলিয়া যাইবার অভ্যাস র্তাহার ছিল না। এই কারণে, বোধ হয়, বাংলা দেশে শিক্ষিত ও শিক্ষার্থী লোকদের মধ্যে র্তাহার নিকট হইতে কোন-না কোনপ্রকারের সহায়তা ও উপকার যত লোক পাইয়াছেন, অন্য কোন লোকের নিকট হইতে তত নহে। মৎলবী ও তোষামোদকারী লোকেরা তাহার সহৃদয়তার অপব্যবহার করিয়াছে, তাহা স্বীকাৰ্য্য ; কিন্তু তাহার গুণটির অস্তিত্ব অস্বীকার कब्र शृों★ न} ।