রাজপথ - [ २७ ] o একদিন প্রত্যুষে সুরেশ্বর ও মাধবী তাহাদের চরকাঘরে বসিয়া চবৃক কাটিতেছিল, এমন সময়ে পথে কে ডাকিল, “কুরেশ্বর, বাড়ী আছ ?” o স্বরের উঠিয়া জানাল দিয়া মুখ বাড়াইয়া দেখিয়া .বিশিত হইল। দেপিল সজনীকান্ত পথে দাড়াইয়া অপেক্ষ করিতেছে। . তাড়াতাড়ি নামিয়া গিয়া বৈঠকখানার দ্বার ধুলিয়। স্বরেশ্বর সজনীকান্তকে সযত্নে ভিতরে আনিয়া বসাইল। “কবে এলেন ?” সজনীকান্ত একমূখ হাসিয়া কহিল, “এলাম ছুটি হ’তেই, কাল বিকালে এসেছি। তার পর, তুমি আর আমাদের ওখানে যাও না কেন বল দেপি ? আছ কেমন ? শরীর কিছু খারাপ নেই ত ?” সজনীকান্সের প্রশ্নের প্রথমাংশের কোনো উত্তর ন৷ দিয়া সুরেশ্বর মুদ্য হাসিয। বলিল, “ন, শরীর ভালই আছে ।" “শরীর ভাল আছে, তা হ’লে যাও না কেন ?" সোজাম্বুজি কোনও উত্ত্বর না দিয়-সুরেশ্বর স্মিতমুখে বলিল, আপনি ত সবে কাল এসেছেন, তা হ’লে কি করে’ জানলেন যে আমি যাইনে ?” স্থ কুঞ্চিত করিয়া বেগের সহিত সজনীকান্ত বলিল, “একটা জেলার লোক নিয়ে কারবার করি, আর এইটুকু বৃন্থতে পারব না? তুমি ৰি মনে কর আমরা সব কথাশুনেই বুঝি -না, দেখেই বুঝি ?” বলিয়া সজনীকান্ত সপুলক অহঙ্কারের সহিত সুরেশ্বরের দিকে তিমুখে চাহিয়৷ রহিল । সজনীকান্তের এই আত্মাভিমানে সবিশেষ পুলকিত হইয়া স্বরেশ্বর বলিল, “ত হ’লে, কেন যাইরে, ‘ਚੋਂ বা আমাকে জিজ্ঞাসা করছেন কেন ? তা-ও ত আপনি নী শুনেই বুঝে নিতে পারেন?” o সুরেশ্বরের কথা শুনিয়া সজনীকান্তের অধরোষ্ঠে গর্কের কঠোর হাস্তরেখা ফুটিয়া উঠিল। বলিল, “তা-ই বুঝতে পারিনি, মনে করছ নাকি ? কেন যাও না, বলব, শুনবে ?” সুরেশ্বর মৃদু হাসিয়া বলিল, “আমি ত জানি-ই, আমাকে আর বলে কি হবে?" সজনীকান্ত কিন্তু সুরেশ্বরের এ অনাগ্ৰহ-প্রকাশে নিবৃত্ত না শুষ্টয় সদৰ্পে কহিল, "দিদির দুর্ব্যবহারের জন্য যাও না। বল, ঠিক বলেছি কি না ?” সুরেশ্বরের মুখ নিমেষের জষ্ঠ রঞ্জিত হইয়া উঠিল। মুহূৰ্ত্তকাল নীরব থাকিয়া সে শান্ত স্বস্তৃঢ়স্বরে বলিল, “আমাকে ক্ষমা করবেন সজনী-বাৰু, আমি এসব আলোচনায় যোগ দিতে অক্ষম !" সজনীকান্ত হাসিয়া উঠিয়া বলিল, “তুমি ভদ্রলোক, তুমি একথা মুখের কথায় স্বীকার করবে না তা আমি জানি । কিন্তু মনে মনেই বুঝতে পার্চ, আমি ঠিক বলেছি কি না। তা বলে’ যেন মনে কোরে না যে কেউ আমাকে এ কথা বলেছে তবে আমি জেনেছি । আমরা হাকিম চরিয়ে খাই, মুরেশ্বর : বুঝলে ? ডান হাত পাতি ডিক্ৰীদারের কাছে, বঁ। হাত পাতি দেন্দারের কাছে, আর চোখ রাখি হাকিমের উপর!” । সজনীকান্তের এই যুক্তি ও যোজনা-বিহীন আক্ষালনের কোনো প্রতিবাদ না করিয়া সুরেশ্বর নীরবে হাসিতে" লাগিল । e সজনীকান্ত বলিতে লাগিল, “পুজোর ছুটিতেই যাবার সময়ে দিদির একটু ভাবান্তর দেখে গিয়েছলাম। এবার এসে তোমাকে দেখতে না পেয়ে তোমার কথা জিজ্ঞাসা করায় আসল কথাটা কেউ বললে না। দিদি বললেন, কেন আসে না তু বলতে পারিনে, হুমিত্র বললে কেন আসেন না কথা বলবার মতন নয়, আর . ঘোষ-মশায় বললেন কেন আসে না সে-কথা নষ্ট বলাই . ○●
পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।