পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রাজপথ _&s,够 শ্রী উপেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায় 愛 [ ৩০ J পরদিন প্রত্যুষে নিদ্রাভঙ্গ হইতেই পূৰ্ব্বদিনের কথা স্মরণ করিয়া বিমানবিহারীর মন তিক্ত হইয়া উঠিল। দূরাপস্থত হইয়াও স্বরেশ্বর, দুরপনেয় শক্তির মত, স্থমিত্রার উপর এমন প্রবলভাবে প্রভাব বিস্তার করিয়া রহিয়াছে দেখিয়া সে তাহার বিরক্তি-বিরূপ চিত্তে আর কোনও সাত্বনা অথবা আশা খুজিয়া পাইল না। মনে হইল, যে যাদু-বিদ্যা মুরেশ্বর সুমিত্রার উপর প্রয়োগ করিয়া গিয়াছে, তাহা হইতে মুমিত্রীকে উদ্ধার করিবার মত কোনও বিদ্যাই তাহার জানা নাই- এবং যতই সে-কথা মনে হইতে লাগিল, ততই একটা নিষ্ফল আক্রোশে তাহার প্রণয়-প্রসারিত হৃদয় সঙ্কুচিত হইয়া আসিতে লাগিল । কিন্তু পরক্ষণেই যখন মনে পড়িল যে, মুরেশ্বরের গৃহের ংবাদ সে না রাখিলে সে-গৃহের সহিত স্থমিত্রার ঘনিষ্ঠত বৰ্দ্ধিত হইবার আশঙ্কা আছে, তখন কোন সম্ভাবিত বিপদ নিবারণের উদ্দেশ্যে স্বঘ্নেশ্বরের গৃহে যাইবার জন্য সে সহসা প্রস্তুত হইল, তাহা মনস্তত্বের একটি জটিল সমস্তা ! বিমানবিহারী যখন স্বরেশ্বরের গৃহে উপস্থিত হইল, তখন তারামুন্দরী র্তাহার পূজার ঘরে বসিয়। ইষ্ট-মন্ত্র জপ করিতেছিলেন এবং মাধবী তাহার চবুকা-ঘরে চরকা কাটিতেছিল। বাহিরের দ্বার উন্মুক্ত ছিল এবং গৃহাঙ্গণে বাসন-মাজ ও জল-পড়ার শব্দ শোনা যাইতেছিল। ভিতরের দ্বারের নিকট ক্ষণকাল দাড়াইয়া বেয়ারা ‘বেয়ারা’ কবিয়া বিমান ডাকিতে লাগিল, ভূত্যের নাম মনে পড়িল না । কানাই বাহিরে আসিয়া বিমানকে দেখিয়া তাড়া তাড়ি বাহিরের ঘর খুলিয়া দিল ; সে বিমানকে চিনিত । বিমান উপবেশন করিলে সে বিষন্নমুখে বলিল, “দাদাবাবু ত বাড়ী নেই বাবু, তার এক বছরের জন্যে—আপনি داد ماه ساسانی بوb জানেন না বাৰু? খবরের কাগজে পড়েননি ?” জেল হইয়াছে—সেকথা কানাইয়ের মুখ দিয়া নির্গত হইল না। বিমানবিহারী বলিল, “হঁ্যা, সে কথা আমি জানি। ম। কি বড় বেশী কাতর হয়েছেন ?” কানাইয়ের চক্ষু সজল হইয়া আসিল ; আৰ্দ্ৰকণ্ঠে বলিল, “ত আর হবেন না বাৰু? কত আদরের ছেলে ! তবে মুখ দেখে কিছুই বোঝবার জো নেই, মুখে সদসৰ্ব্বদা সেইরকম হাসি লেগে রয়েছে। কিন্তু সেই জন্যেই ভয় হয় বাবু, আগুন বেশীক্ষণ চেপে রাখা ভাল নয় ।” ক্ষণকাল চুপ করিয়া থাকিয়া বিমান বলিল, “আর তোমার দিদিমণি ? তিনি কেমন আছেন ?” “কে ? মধু-দিদি ? তার কথা আর বলবেন না বাবু! যেমন ভাই, তেমনি বোৰু! দাদাবাবুর আটক হয়ে পৰ্য্যন্ত মাধু-দিদি নিজের ভাগ স্বতে কেটে দাদাবাবুর ভাগ পৰ্য্যস্ত কাট্‌ছেন । আমি একদিন বলতে গেছলাম যে, মধুদিদি তুমি একলা অত পরিশ্রম কোরে না, আমিও না হয় দাদাবাবুর ভাগ থানিকটা করে কেটে দেবো, তাতে হাসতে হাসতে তিনি বললেন যে, যা যাকানাই,তুই নিজের চত্বকায় তেল দিগে যা!” বলিয়া কানাই হাসিতে লাগিল । কৌতুহলী হইয়া বিমান-বিহারী জিজ্ঞাসা করিল, তুমিও চরকা কাট নাকি ?” কানাই স্মিতমুখে বলিল, “কাটি বই কি বাৰু, না কাটলে কাপড় পাব কি করে’ ? এ-বাড়ীতে সকলকেই স্বতে কেটে কাপড় পরতে হয়। মা-ঠাকরুণ পৰ্য্যস্ত নিজের স্বতো নিজে কাটেন ; শ্বদর-ভিন্ন এ বাড়ীতে অন্য কাপড় চলে না।” বলিয়া কানাইলাল বিমানবিহারীর বস্ত্র ঘন-ঘন পৰ্য্যবেক্ষণ করিতে লাগিল, কিন্তু তদ্বিধয়ে কোনও প্রশ্ন করিল না ।