পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*6:8 প্রবাসী—ঙাখিন, ১৩৩১ [ ২৪শ ভাগ, ১ম খণ্ড তার তিন খণ্ডে লেখার মতলব ছিল ; কিন্তু প্রথম খও এবং দ্বিতীয় খণ্ডের খানিকটা লেখার পরেই তিনি মারা যান, বই আর শেষ হয়নি। র্তার উপন্যাস লেখার ক্ষমতা যে অসাধারণ ছিল তা এই বইখানা পড়েই বেশ বোঝা যায়। কিছু বেশী দিন বেঁচে থাকৃলে রুশ-সাহিত্যকে তিনি আরও সম্পংশালী করে’ তুলতে পারতেন। রুশিয়ার বাহিরে রুশ-সাহিত্যকে জনসাধারণের কাছে স্বপরিচিত করে দিয়েছিলেন আইভ্যান, টুর্গেনিভ (১৮১৮–৮৩) । অধিকাংশ রুশ-সাহিত্যিকের মতন তাকেও প্রথম-জীবনে সরকারী কটাক্ষের অপ্রীতিকর তীব্রতার ভিতর দিয়ে থ্যাতির পথে অগ্রসর হতে হয়েছিল । দুই বছর র্তার নিজের বাড়ীতেই রুশ-গভর্ণমেণ্ট তাকে নজরবন্দী অবস্থায় রেখেছিলেন। খালাস পাওয়ার পর প্রথম কিছু দিন তিনি জাৰ্ম্মানিতে গিয়ে থাকেন। তার পরে সেখান থেকে ‘পারীতে গিয়ে একেবারে স্থায়ী ভাবে বসবাস করেন । তার সমস্ত উপন্যাসই পারীতে লেখা। টুর্গেনিভের লেখার কায়দা একটু স্বতন্ত্ররকমের। অতি মার্জিত পরিপাটী ভাষায় তিনি লিখতেন। তার সমসাময়িক রুশ-সামাজের চিত্র আকৃতে গিয়ে তিনি কিন্তু তেমন কৃতকুাৰ্য্য হতে পারেননি। রুশিয়া থেকে সৰ্ব্বদাই বেশী তফাতে থাকার দরুন সমাজের অনেক তথ্যই সম্ভবতঃ বুঝতে ভুল করেছেন । যেখানে বাস করতেন, লেথার সময় সেখানকার পারিপাশ্বিক প্রভাবও র্তার মনের উপর অনেকখানি কাজ করত । টলষ্টয় ডক্টয়েভস্কি গোগোল প্রভৃতির উপন্যাস-বর্ণিত রুশ-চরিত্র গুলির সঙ্গে টুর্গেনিভের উপন্যাসের রুশচরিত্রগুলি মিলিয়ে পড়লে তার ভুল বেশ ধরা যায়। উল্লিখিত ঔপন্যাসিকদের বিচিত্র চরিত্রগুলি বিদেশী পাঠকের কাছে নিশ্চিতই অতিরঞ্জিত এবং অস্বাভাবিক বলে’ বোধ হবে, কিন্তু বাস্তবিকপক্ষে সেইগুলিই আসল রুশ-চরিত্রের নিখুঁত চিত্র। টুর্গেনিভ, মোলায়েম এবং স্বাভাবিক করে যে চরিত্রগুলি একেছেন, সেগুলি অস্ত্রদেশের অন্ত সমাজের হয়ত ཧཱ་ཙཱརྩ প্রতিকৃতি হ’তে পারে, কিন্তু রুশ চরিত্র যারা বোঝেন, তারা পড়েই বলবেন, যে, খাটি }রুশ-চরিত্রের সঙ্গে এদের বড় বেশী মিল নেই। টুর্গেনিভ বড়দরের ঔপন্যাসিক হ’লেও তার পরিমাণ-জ্ঞানটা একটু কমই ছিল ; তিনি পাঠকের ধৈৰ্য্যের দিকে মোটেই - , তাকাতেন না। অল্প কথায় বক্তব্য শেষ করাও ছিল । র্তার অভ্যাসবিরুদ্ধ। একটু স্থযোগ পেলেই কথার ফোয়ারা ছুটিয়ে দিয়ে তবে ছাড়তেন । খেলোয়াড়ের নক্স টুর্গেনিভের প্রথম লেখা। ‘পূৰ্ব্ব ও উত্তর পুরুষ’ তার সর্বশ্রেষ্ঠ রচনা হ’লেও তিনি দেশবিদেশে খ্যাতিলাভ করেছিলেন ‘ভদ্র-ঘরানা' লিখে । অক্ষত ক্ষেত্র’ লেখেন বুড়ে-বয়সে। আগে লেখা অন্যাস্ত বইয়ের সঙ্গে তুলনায় এখান তেমন ভাল হয়নি। রুশ-চরিত্র সম্বন্ধে র্যাদের অভিজ্ঞতা আছে, তাদের মতে থিওডোর ডষ্টয়েভস্কিই হচ্ছেন রুশিয়ার শ্রেষ্ঠ ঔপন্যাসিক। ডষ্টয়েভ স্কি সমর-বিভাগে চাকুরী করবেন বলে’ যৌবনে সামরিক শিক্ষাই পেয়েছিলেন। সাহিত্যচর্চা শেষে আরম্ভ করেছিলেন সখের খাতিরে। সৰ্ব্বপ্রথম তিনি জনসমাজে পরিচিত হন গরীবলোক’ লিখে । তার পরে রাজদ্রোহীদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করার অজুহাতে হঠাৎ পুলিশ একদিন তাকে গ্রেপ্তার করে। বিচারে প্রথমে তার প্রাণদণ্ডের আদেশ হয়েছিল ; শেষে কয়েকজন পদস্থ ব্যক্তির স্বপারিশে গভর্ণমেণ্ট সে আদেশ প্রত্যাহার করে চারি বৎসর সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ সহ তাকে সাইবিরিয়ায় নির্বাসিত করেন । এই নিৰ্ব্বাসনের স্মৃতি র্তার মনের উপর একটা অনপনেয় ছাপ একে দিয়েছিল । নিৰ্ব্বাসন-দণ্ডের ফলে তার স্বাস্থ্য চিরদিনের জন্য ভগ্ন হয়েছিল—সন্ন্যাস-রোগও জন্মেছিল । ডক্টয়েভস্কির চরিত্রে এমনই শান্ত সমাহিত করুণ একটা ভাব ছিল, যে, তার সঙ্গে কথা বললেই লোকে তা বেশ বুঝ ত এবং তাতে মুগ্ধ হ’য়ে যেত। সাইবিরিয়ার কয়েদীদের উপর অমাহুষিক অত্যাচার হতে দেখে তার ধারণা হয়েছিল যে, এ-ভাবে মাহুৰ"আর বেশী দিন মান্বষের উপর অত্যাচার করতে সক্ষম হবে নLL শীগগিরই ভগবানের তরফ থেকে এর এমন একটা প্রতিক্রিয়া আসবে যাতে সমগ্র মানবজাতির নৈতিক