পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১০২ বেশভূষায় দেহমণ্ডনের আকাজ সকলেরই মধ্যে প্রবল । আমরা বাঙালী, আমরা আবার অলঙ্কারের অতিমাত্রীয় ভক্ত । বাঙালী কতকগুলি অলঙ্কারকে পুণ্যদয়িক মনে করে । অনন্ত তাহদের মধ্যে একটি । কট কয় রূপার বাজু নবরত্বের অঙ্গুরী, অষ্টধাতুর তাগা, নাভিশখের কেন্নুর আমাদের সৌভাগ্য বদ্ধন করিয়া থাকে। কতকগুলি অলঙ্কার পতিপুত্রের কল্যাণবদ্ধন করিয়া থাকে, নিজের আয়তি রক্ষণ করিয়া থাকে বলিয়া :- খ নিকট সেগুলি আদর, যত্ন ও পূজা পাহয় থাকে। শ fথ , নৎ, নোয়া—এই শ্রেণীর অলঙ্কার ; সাধারণের বিশ্বাস, গলায় মাজুলী, হাতে কবচ বা তাগী, আঙলে আংটী, পায়ে কড়া প্রকৃতি ধারণে দেবরাফ, গ্ৰহদোয ও রোগশাস্তি হয়, বিবদোষ নষ্ট হয়, ভূতপ্রেতের ভয় থাকে না । কোনো কোনো রোগ সারাইবার জন্ত লোকে কুমীরের নখ সোনা দিয়া বাধাইয়া কোমরে ধারণ করে । কেহ বা সোনা, রূপ ও তাবা একসঙ্গে জড়াইয়। অঙ্গুরী করিয়া হাতে দেয়। মৃতবত্সা রমণীরা শিশুর দীর্ঘজীবন কামনায় সদ্যঃপ্রস্থত সন্তানের নাক ফুড়িয়া সোনা, রূপা বা লোহার মাকড়ি অথবা বামপদে লৌহমল কিংবা সোনার আবরণ দিয়া উচ্ছিষ্ট আমড়া, বাধনথ ও কুমারের দ্বাত গলায় পরাইয়া দেয় । আমাদের দেশে একই অলঙ্কার স্ত্রীপুরুষের ব্যবহার্য্য হইলে আকৃতির পার্থক্য হয় । শিশু, বালক-বালিকা, যুবক-যুবতী, বুদ্ধ-বৃদ্ধার গহনার আকার ও প্রকারভেদ আছে । আমাদের দেবদেবীর অলঙ্কারের বৈশিষ্ট নানা אלפ5צ\ প্রকারের এক দেবতার যে অলঙ্কার থাকিবে, অন্স দেবতার তাহ থাকিবে না অলঙ্কাৰ দেখিয়া অনেক সময় দেবমূৰ্ত্তির পরিচয় পাওয়া যায়। দেশবিশেষের ধাতুবিশেষ রত্নবিশেষ, অলঙ্কারবিশেষ ব্যবহার নিষিদ্ধ | এইরূপ বহু ব্যবহার ও সংস্কার লইয়া আমাদের অলঙ্কারতত্ত্ব বিপুলায়তন হইয়াছে। বাঙালীর গায়ে আজকাল কিছু বেশী মাত্রায় পশ্চিমে হাওয়া লাগিয়াছে ও শিক্ষাদীক্ষার রীতিও বদলাইয়া গিয়াছে, কাজেই আদর্শ ভিন্ন পথ ধরিয়াছে । তাহার উপর, কালে পরিবর্তনও অবশুম্ভাবী । আগেকার গহনা এখন বেয়াড় বেথfপ্ল বোধ হওয়া কিছু বিচিত্র নয় । তখনকার দিনে বাঙালীর কানের অনেক গহনা ছিল । ঝুমকো লতার ফুলের অনুকরণে ঝুমকা বা ঝুমকো : পোস্তদানীর ফলের অনুকরণে ঢে"ড়ি, —তাহার উপর ঘণ্টার মত ঝুমঝুম করিবে বলিয়া ঝুমকা টেড়ি ; ইহার আর চলন নাই । চাপাফুলের অন্ধ ট কলি হইতে চাপা –ইয়ারিঙ, তাহার স্থান অধিকার করিয়াছে । পিপুলপাত, কর্ণফুলও ব৷ কানফুল, মাকড়ি, হুল, কান, কনিবালা, কনকবেীলী, চৌদানি । পুরুষরাও কানে অলঙ্কার পরিত—নাম বীরবোলী । এছাড়া আরও কনের গহনা ছিল । কণ্ঠভিরণ ছিল—মটরমালা,—ঘুরিয়া ফিরিয়া আজকাল পুনরায় ইহার চলন হইয়াছে। আর ছিল চাপাকলি,—এটি চম্পককলিকার মালা, বোটয় বোটায় গাথা, দেখিতে অনেকটা নেকলেসের মত । হংসগ্রীবার অনুকরণ করিয়া হামুলী ; নির্বিষ হেলে সাপের লেজের অনুকরণে হেলেহার, কামরাঙHহার, দড়াহার, কণ্ঠমালা, মুক্তমালা, তেনী, ধুকধুকি, পাচ লহর বা পাচ হাল্পীর পাচনী, সাতনরী, দানা, মোহনমালা, ঝিলমিলি হরিণ ১ হিন্দুস্থানীদের মধ্যে আছে ঝুমক কুৰ্ম্মক । ২ চেড়ি চাপি মাকুড়ি কৰ্ণেতে কর্ণফুল। -গঙ্গভক্তিতত্ত্বঙ্কিণী। ৩ ‘স্ববর্ণের কর্ণফুলে শোভে কর্ণদ্বয় –কুত্তিবাসী রামায়ণ – হিন্দুস্থানদের করনফুল, কনফুল’ । ৪ সুবর্ণের কড়ি বেলি রজতমুদ্র পাশুলি সুবর্ণের অঙ্গদ কঙ্কণ ।” --চৈতন্যচরিতামৃত, আদি ৫ হিন্দুস্থানীদের 'বড়' । ও হিন্দুস্থানীদের ইঁদুলী । ৭ গলায় তাহার দিলে হার ঝিলমিলি ।~~বৃত্তিবাসী রামায়ণ