পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আগ্রহায়ণ কারাবাসের রজটকা, তই বড় বড় নেতাদের মত বিপুল ভিড়ের হর্ষধ্বনি অদৃষ্টে না জুটিলেও, আদর-অভ্যর্থনার ক্রটি হইত না । ষ্টেশন হইতে গ্রাম দূরে । গঙ্কর গাড়ী ছাড়া অন্ত প্রকা-রর যানবাহন এখানে দুলভ। তাই স্থির করিলাম, গল্প করিতে করিতে পায়ে ইটিয়া চলাই হইবে যুক্তিযুক্ত। “আপনার যে কষ্ট হবে—” “চল তো বাবু। হেঁটে কে হারে আর কে জেতে আমি দেখে নেব।” গ্রামের সীমানার মধ্যে পৌছাইতেই মনে হইল, এ গ্রাম আমার খুবই পরিচিত । ঐ আঁকাবঁকা উচুনীচু পথ, গাছের পাতায় স্বর্ঘ্যের কিরণ, বা পাশের বাশের ঝাড় আর পাতার থস থস্ শব্দ, ঐ পুকুর পাড়ের তাল-মারিকেল গাছের সারি, পূব দিকের পর্ণকুটির,—এরা সবাই যেন আমাকে অতি পরিচিতের সুরে সদরে আহবান করিতে ছ । সুতরাং সন্দেহের অবকাশ ছিল না ; তবুও সম্পূর্ণ নিঃসংশয় হইবার জন্তই আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, “এ কোন রহমতপুর হে ?” সঙ্গীরা আমার প্রশ্নের অর্থ ঠিক বুঝিল না। আর বুঝি বই বা কি করিয়া ? একজন গ্রামের ইতিকথা দিয়া পরিচয় দিতে চাহিল, “বাদশাহী আমলে---” আমি তাহার বক্তব্যে বাধা দিয়া জানিতে চাহিলাম যে, আমার মাতুলের নাম তাহাদর কাছ পরিচিত কি না । কিন্তু প্রশ্নটা উহারা অন্ত অর্থে লইল, কেন-না তাহীদের মধ্যে যে বয়োজ্যেষ্ঠ সেই বলিল, “আপনার থাকবার জাগা করা হয়েছে হরবিলাসবাবুর বৈঠকখানায় । আপনার কোনো অনুবিধেই হবে না । হরবিলাসবাবু চমৎকার লোক ।” হরবিলাসবাৰু ! তারপর পথের ছোটখাট নির্দেশের জন্ত আর আমাকে সঙ্গীদের মুখাপেক্ষী হইয়া থাকিতে হইল না। নিত্য-নূতনের চাপে পুরাতন চাপা পড়িলেও একেবারে অতলে তলক্টিয় ষায় না । গন্তব্য স্থানে আসিয়া পৌছাইতেই একটি বৃদ্ধ অত্যন্ত ব্যস্ত হইয়া চুটিয়া আসিলেন, “এই যে, অয়ন, আমুন। বড় কষ্ট হ’ল আপনার—” ক্ষণিকের মায়ণ RSS চিনিতে কষ্ট হইল না। পদধূলি লইয়া আমি কৌলিক পরিচয় দিলাম। বৃদ্ধর মুখ হাসিতে ভরিয়া উঠিল,— “তুমি আমাদের সেই জীবন, এতবড় হয়েছ,—অাম তো চিলতে পারি নি। কতকাল আগে দেখেছি, তখন তুমি ছেলে মানুষ ---এস বাবা এস । তুমি তো ঘরেরই ছেলে—” - সন্ধ্যfর পর অন্দর মহলে আমার ডাক পড়িল । মামাবাড়ির সম্পর্কে আমি হরবিলাসববুর স্ত্রী-ক মামীম বলিয়া ডাকিতে অভ্যস্ত । সাক্ষাৎ হটতেই তিনি আমার মামা-মমীর অকাল বিয়োগের জন্ত কয়েক ফে"াট অশ্র বিসর্জন করিয়া বলিলেন, “তুমি যে কোন কালে আসবে, একথা আমরা স্বপ্নেও ভাবি নি। ভাগ্যে স্বদেশীর হুজুগ উঠেছিল তাই তোমার দেখা পাওয়া গেল।” তারপর অমর পারিবারিক খুঁটিনাটি সংবাদ জিজ্ঞাসা করিতে সুরু করিয়া দিলেন। দেখিলাম, আমার ভাগ্যবিপর্যায়ের অল্প-বিস্তর সংবাদ তিনি রাখেন। বলিলেন, “তোমরা আমাদের ভুলে যে:ত পার, আমরা তো অীর পারি না । লোকজন পেলেই খবর নি’, আমীদের জীবন কেমন আছে, ভাল আছে তো ? যেখfuনই থাক না, বাবা, মুখে থাক, এই কামনা করি ।” কথাটা সত্য | র্য,হাদের স্নেহছায়ায় এককালে দিন কাটাইয়াছি, তঁহাদের এমনি করিয়া ভুলিয়া যাওয়া যথার্থই অমর্জনীয়। তাই এ অভিযোগের বিরুদ্ধে আমার বলিবর কিছুই ছিল না । ঘরের মধ্যে সহসা একটি মেয়ের আবির্ভাব হইল । মেয়ের চেয়ে যুবতী নারী বলাই ভাল । মনে হইল, ইহাকে দ্বিপ্রহরে মলিন বাস ও অনাবৃত রুক্ষ কেশ আমার সম্মুখ দিয়া যাতায়াত করিতে দেখিয়ছি। খুব সম্ভব এই বাড়িরই কোন বিধবা দাসী, ত-ব তহরি গতিবিধির সঙ্গে দাসীত্বের কেন সঙ্গতি ছিল না বলিয়াই মনটা তখন অকারণ विद्रङ झ्झेब्रां ऊँठिंग्रांछ्ठि । মেয়েটি আমার সামন আসিয়া নিঃসঙ্কোচে প্রশ্ন করিয়া বসিল, “আপনি বিশ্ন করেন নি ?” প্রশ্নটা সম্পূর্ণ অহেতুক এবং অত্যন্ত বিরক্তিকর । ঘরে