পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ই ২০ প্রদীপের আলো, কাছের লোকের মুখ তেমন স্পষ্ট করিয়৷ দেখা যায় না। আর আমার ইচ্ছাও হইল না । সে পুনশ্চ প্রশ্ন করিল, “আপনার বুঝি বলতে লজ্জা कच्नुझ ?” “না, আমি এখনও বিয়ে করি নি।” "কেন ?” “ফুরফুৎ হয় নি ব’লে ।” “ওমা, কি রকম মানুষ গো, স্বদেশী করলে কি ম’হযের বিয়ে করার একটু সময়ও জোটে না,”—হাসিয়া উঠিয়া সে কোন জিনিষ লইয়া ঘর হইতে বাহির হইয়া গেল । আমি অত্যন্ত বিস্ময়ে মামীমার মুখের দিকে তাকাইতেই তিনি হাসিয়া বলিলেন, “কি তুমি চিন-ত পারলে না ? ও যে অনু।” ইহার পরও চিনিতে না পারা উচিত হয় না, কিন্তু নামের স্বত্র ধরিয়া মনের পুরানো পাতা উল্টাইয়া দেখা গেল পরিচয়ের কোন ঠিকানই মিলে না । অথচ লজ্জয় আর স্পষ্ট করিয়া জিজ্ঞস করাও চলে না ! মুখ নীচু করিয়া বসিয়া রহিল’ম । মামীম বলিতে থাকিলেন, “অন্ন দূর থেকেই তোমাকে চিনতে পেরেছিল । ওই তো গিয়ে খবর দিলে—ম, যে এসেছে সে দেথতে ঠিক জীবন-দাদীর মত, বাবও জীবন জীবন বলছেন ।” এখন অনু কে অন্দাজ করা কঠিন নয়। ভাগ্য ভাল যে দাসী স্থির করিয়া তাহার প্রশ্নের উত্তরে কিছু কটুক্তি করিয়া বসি নাই। ম মীমা অনুর দুর্ভাগ্যের ইতিহাস বর্ণনা করিলেন । বিবাহ হইয়াছিল কুলীনের ঘরেই। অবস্থা ভাল, মোট ভাত কাপড়ের অভাব না হইবারই কথা । অবশ্য বর দেfজপক্ষের, তবে বয়সও যে খুব বেণী তা নয় । কিন্তু মেয়ের পোড়া কপাল, সহিল না ; দু-বছর না ঘুরিতেই হাতের নোয়া থসঙ্গিয়া, সিদুর মুছিয়া হতচ্ছড়িী আবার ব'পের বুকে আসিয়া বসিয়াছে। সঙ্গে অনিয়াছে সতী নর একটি মেয়ে আর একটি ছেলে । সে মেয়েরও কি আশ্চর্য বড়স্ত গড়ন, পার করিতে অর বিলম্ব করিলে চলিব না । মামীম ব.লন আর আঁচল দিয়া চক্ষু মার্জনা করেন । ಱ ఎనిES আমি সাস্বনা দিবর জন্ত বলিলম, “কি করবেন বলুন, অদৃষ্টের উপর তো আর কারুর হাত নেই।” “ই বাবা, অদৃষ্ট, অদৃষ্ট ছাড়া আর কিছুই নয়।” কিছুক্ষণ চুপ করিয়া থাকার পর বলিলেন, “অনুকে তোমাদের ঘরেই দেবার ইচ্ছা ছিল। সদাশিব ঠাকুরপোকে দিয়ে আমরা একবার তোমার বাবার কাছে কথাও পেড়েছিলুম। আমরা তোমাদের চেয়ে নীচু ঘর ব’ল তোমার বাবা রাজী হ’লেন না । হ’লে যে কত সু-খর হ’ত 1 হতভাগী কি অদৃষ্ট নিয়েই এসেছে,—নিজে পুড়েছে, আমাদেরও পুড়িয়ে মারছে।” বুঝিতেছি, বেচারী অনুর অকাল বৈধব্য মামীমার বুকে বড়ই লাগিয়াছে । ঐ সব কটু বিশেষণ প্রয়োগে অনুর অদৃষ্ট-দেবতা সুপ্ৰসন্ন হইবে না,—মী’র মন ইহা বোঝে না । তিনি এইভাবে দুঃখের একঘেয়ে পুনরাবৃত্তি করিয়াই চলিলেন । অনুই আসিয়া আমাকে এই অস্বস্তিকর অবস্থা হইতে মুক্তি দিল । আমাকে জিজ্ঞাসা করিল, “আপনি আমায় চিনতে পারেন নি ?” আমি খুব সহস করিয়া তাহ'র মুখের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করিবার চেষ্টা করিয়া উত্তর দিলাম, “পরিব না কেন ? খুব পেরেছি ।” ر “আপনার চিনতে পারার বুঝি এই নমুনা ? উত্তর না দেওয়াই শোভন । মামীম বলিলেন, “তোর কি-যে কথা অনু, সেই কত ছেলেবেলায় দে-খছিল, তারপর কত বদলে গেছে, চেনা কি সহজ ?” অনু মা’র কথা গায়ে মাখিল না । সে বলিল, “ত এখনও ঘরে বে আসে নি। স্বদেশী করতে,এসে বেনকে দেখ যদিও বা একটু মন পড়ে, বিয়ে করলে সেটুকুও মন থাকবে ন! —তাই ন জীবন-দা ?” “বি য় করার সময়ই ফুটুক—” “তার মনে ? সক্লিাসি হয়েছেন না কি ?” ভরি গেছের উত্তর দিয়া মুখ বন্ধ করিব ভাবিতেছিলাম, কিন্তু সৎ-মেয়ের ডাকে অন্ন চলিয়া গেল, সুতরাং আমার উত্তর শোনান হইল না ।