পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পোষ চীনের কৃষি ও কৃষক-পরিবার Nごさな জমি হইতে চীনের কৃষকের অন্ততঃ ১৬০ টাকা আয় করে | চীন দেশের কৃষকেরা কৃষি-কার্যোর জন্ত কিরূপ অদ্ভূত পরিশ্রম করে তাহ! উত্তর-চীনের অন্তর্গত চিহিল ও সটং প্রদেশের কৃষকগণের দুই-একটি কার্যের বিবরণ হইতেই স্পষ্ট বুঝা যাইবে । কৃষি-কার্যের পক্ষে অনুকূল আবহাওয়া অতি প্রয়োজনীয় ; সম্বন্ধে উত্তরচীনের কৃষকগণকে সৌভাগ্যবান বলা যাইতে পারে । প্রবল ঝড়-ঝাপটার প্রাদুর্ভাব সেখানে নাই ; সেখানকার বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ খুব কম, মাত্র ২৪ ইঞ্চি ; ইহার মধ্যে বৎসরের চারি মাসের মধ্যেই (জুন, জুলাই, আগষ্ট ও সেপ্টেম্বর ) অধিক পরিমাণে বৃষ্টিপাত হয় । এই চারি মাসের বৃষ্টিপাতের গড় ১৭ ইঞ্চি । এই অঞ্চলের আবহাওয়া সড়ির র্কাটীর মত সুনির্দিষ্ট ও সঠিক । কখন কিরূপ আবহাওয়া হইবে তাহা সেখানকার কৃষকেরা পূৰ্ব্ব হইতেই নিশ্চিত রূপে জানিতে পারে । অসময়ে অতি-বৃষ্টির জন্য তাহীদের ফসল নষ্ট হইবার আশঙ্কা থাকে না ; কিংবা শীতকালে জমি অতিরিক্ত ভিজা থাকার জন্ত লাঙ্গল দেওয়ারও অসুবিধা ঘটে না । ভুটা ও মিলেট -জাতীয় শস্ত এইরূপ আবহাওয়ার উপযুক্ত বলিয় তাহারা এই দুইটকে প্রধান খাদ্য-শস্য হিসাবে উৎপন্ন করে ; ইহা ছাড়া ইহার নাস্পাতি, খুবনী ও বিলাতী গীব-জাতীয় এক প্রকার ফলের চাষ করে । গম, চীনাবাদাম ও মিঠা আলু সাহায্যকারী ফসল হিসাবে জন্মায় । চীনের কৃষকেরা বিদেশী রাসায়নিক সার ব্যবহার না করিয়াও একই জমি হইতে চারি হাজার বৎসর ধরিয়া যথেষ্ট পরিমাণে শস্ত উৎপাদন করিতেছে । কিন্তু আমেরিকার যুক্ত-রাজ্যে একই জমি এক শত বৎসর চাষ করিবার পরেই প্রচুর পরিমাণে রাসায়নিক সার প্রয়োগ করিয়া সেই হইতে শস্ত উৎপাদন করা আবগুক হইয়াছিল। চীন দেশের কৃষকের কৃষি-কার্য্যের প্রধান প্রধান নিয়মগুলি বিশেব ভাবে আয়ত্ত করিয়াছে। তন্মধ্যে পর্যাtয়ক্রমে শস্ত্যউৎপাদন ও শস্ত্য-মিশ্রণ, জমিতে সবুজ সীর প্রয়োগ এবং সকল প্রকার আবর্জনা হইতে সার প্রস্তুত বিশেষ উল্লেখযোগ্য ; তাহারা অতি দক্ষতার সহিত একই জমিতে অনেক এই প্রকার শস্ত জন্মায় । শীতকালে ২৮ ইঞ্চি অন্তর সারি করিয়া গম জন্ম:ইয়া থাকে ; বসন্তকালে সেই গমের মাঝে মাঝে মিলে জাতীয় শস্য বপন করে ; গম উঠাইয়া শিমজাতীয় শস্তের আবাদ করে ; আবার মিলেট-জাতীয় শস্ত কাটার পর শিম-জাতীয় শস্ত পাকে । এইরূপ ভাবে একই ক্ষেত্রে সরি করিয়া নানাবিধ শস্তের অাবাদ করিলে, সকল প্রকার শস্যেরই সুন্দর রূপে যত্ন ও পরিচর্য্য করা সহজ হয় । ইহার ফলে জমি বেশ আলগা জন্য জমিতে রসও সঞ্চিত থাকে শস্যক্ষেত্রগুলি রাজামহারাজার সুন্দর লুনার ফুলবাগানের মত পরিষ্কারপরিচ্ছন্ন দেখায় । শহরের নিকটবৰ্ত্তী স্থানে অন্তান্ত শস্তের সহিত তরি-তরকারীর বাগানও থাকে । পিয়াজ, আলু, বাধা-কপি, মূল, সালা প্রভৃতি ফসল একটির পর একটি অতি নিপুণতার সহিত আবাদ করে । চীনের কৃষকের বিশেষ ভাবে জানে যে কোন প্রকার শশু রোপণ করিলে জমি হইতে এ শস্ত যে-সকল খাদ্য গ্রহণ করে, সেই সকল খাদ্য পুনরায় জমিতে সরবরাহ করা একান্ত অবস্থাক । ১৮৮৮ খ্ৰীষ্টাব্দে পাশ্চাত্য বৈজ্ঞানিকগণ বহু গবেষণার পর প্রকাশ করিলেন যে, শুটিংপ্রদ শস্ত ( যেমন, ধঞ্চে, মটর, শিম ইত্যাদি ) অবদি করিলে মাটিতে ঘবক্ষারজানের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় । কিন্তু চীন দেশের কৃষকগণ ইহার বহুকাল পূৰ্ব্ব হইতেই তাহদের পুরুষানুক্রমিক অভিজ্ঞতা ও পর্য্যবেক্ষণের দ্বারা এই বৈজ্ঞানিক তথ্যটি জানিত, এবং তদনুসারে অতি পরিশ্রমের সহিত এই পদ্ধতিটি তাহারা পালন করিয়া আসিতেছে । তাহার। কঁচ অবস্থায় শুটিপ্রদ শস্ত কাটিয়া আনিয়া গৰ্ত্তের ভিতরে স্তরে স্তরে সাজাইয়া, থাল বিলের কাদা মাটি কিংবা ক্ষেত্রের নিম্ন স্তরের ভিজা মাটি দিয়া স্তরগুলিকে ঢাকিয়া দেয় । পরে কিছুদিন অন্তর-অন্তর স্তরগুলিকে বার-বার ওলটপালট করিয়া দেয় । ইহার ফলে স্তরের সকল অংশের কাচা গাছগুলি সমান ভাবে পচিয়া মুল্যবান সারে পরিণত হয়। ইহা ছাড়া তাহারা সকল প্রকার আবর্জনা ছোট ছোট গর্তে ফেলিয়া উহার সহিত মাটি ও ছাই মিশাইয়া দেয়। এই আবর্জনাও কিছু দিন পরে সম্পূর্ণভাবে পচিয়া উৎকৃষ্ট সারে পরিণত হয় । জীবজন্তুর মলমুত্রাদি থাকে এবং তাহার