পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

g \రిyo તઃ ત્ર it :-t : কি জানি কেন—বোধ হয় অকারণেই—সুষমা বলিয়াছিল—“চুলো”— বনমালীও রসিকতা করিয়া বলিয়াছিল—চল সেখানেই তোমায় নিয়ে যাচ্ছি— শহরের তিন মাইল দূরে সুষমার বাপের বাড়ি । সেখানেই যাওয়া আপাতত: স্থির হইল। নৌকায় পথে দু-দিন কাটাইতে হয়। ঢেউয়ের দোলায় দুলিতে দুলিতে একটা গোটা দিন বেশ কাটিয়া গেল । চাদের আলোয়—আর অবাধ খোলা হাওয়ায় সুষমার কি মূৰ্ত্তি—কোলে মাথা রাখিয়া শুইয়া গুইয়া আকাশ দেখা—মাঝির গান শোনা ; রাত্রিবেলা দূরে অন্ধকারের মাঝে টম্ টিম করিয়া দুই একটি আলো জলে—কোন নৌকার আলো হয়ত । এই তীর—এই একেবাৱে অকূল পাথার । পুথিবীর কোনও ভাবনা নাই—দুঃখ-দৈন্তময় পৃথিবীকে এড়াইয়া যেন তাহারা অমৰ্ত্তালোকে আসিয়াছে।-- দ্বিতীয় দিন ভোর বেলা মাঝিরা একটা চরে নৌকা বাধিল । চারি দিক তখনও বেশ অন্ধকার—সকাল ভাল করিয়া হয় নাই । রাত্রে বনমালীর ভাল ঘুম হয় নাই তাই আর মিছামিছি ঘুমাইবার চেষ্টা না করিয়। বাশটা লইয়। বাহিরে আসিয়া বসিল— সামনে কেবল জঙ্গল । চরের উপর কতদিনকার গাছপালা নদীর জল পাইয়া বড় হইয়া উঠিয়াছে ঠিকানা নাই । কত ভয়ানক জীবজন্তু উহার ভিতর আছে কে জানে। ঘনসন্নিবিষ্ট ডালপালায় দৃষ্টি যায় না। এক-একবার 'হাওয়া আসে, সারা বনস্থলীতে একটা থমৃ থমূ আলোড়ন হয় । বনমালী বঁাশী লইয়া বাজাইতে লাগিল । স্বরে আরম্ভ হইয়া উঠিতে পড়িতে কোমল রেখাব কোমল গান্ধার ছুইয়া ছুইয়া ভৈরবী উপরে চড়িতে লাগিল । কোমল ধৈবতে দাড়াইয়া হেলিতে দুলিতে কোমল নিখাদ ছুইল—তার পর কত পথে মুর চলিল। অপরূপ রূপলাবণ্যময়ী একটি পাহাড়ী মেয়ে কোমরে কলসী লইয়া আঁকিয়া-বাকিয়া পাহাড়ী পথে ঘুরিতে ফিরিতে সোজা ও নীচু হইয়া গ্রামে চলিয়াছে। তাঁহারই চলিয়া যাওয়ার ছন—তাহারই বিহবিধুর অশ্বরের দ্বন্দ্ৰ—তাহার গতিভঙ্গীর সরস ব্যঞ্জন লইয়া বাশীর গান বাজিয়া চলিল । সুরের শরজালে আকাশের আবহাওয়া আচ্ছন্ন হইয়া চলিল । নিবিড় অনুভূতি লইয়া বাতাস চুপ করিয়া কান পাতিয়) আছে—জলের তরঙ্গ যেন নিশ্চল হইয়া গিয়াছে—আকাশ মাটির উপর ঝু"কিয়া পড়িয়া মন্ত্ৰমুগ্ধ হইয়া গিয়াছে। নৌকার ভিতর সুষম ঘুমাইতেছিল—কখন বঁাশীর শব্দে জাগিয়া উঠিয়া পাশে আসিয়া বসিয়াছে। মাঝিরাও ঘুম হইতে উঠিয়া বসিয়াছে। পৃথিবীর জড় জীব সমস্ত যেন ফুরের মন্ত্রে অবশ হইয়া আছে । জলের মৃদু-স্রোতের উপর দিয়া ভাসিতে ভাসিতে মুর চলিল। সেই ভোরবেলা সমস্ত বনস্থলী যেন সুরের মোহে আচ্ছন্ন হইয়া পড়িল, মুরের ঢেউ ভাসিতে ভাসিতে দূরে অনেক দূরে কোন গ্রামাস্তের কোন তীরে, কোন গৃহকোণে কোন বিরহীর বক্ষে কাদিয়া কুটিকুটি হইতে লাগিল । সীমা নাই—শ্রীস্তি নাই—নুতন নুতন বেদন-সস্তার লইয়া সেই ভরা-বুক নদীর দুই কিনার ভাসাইয়। দুই কুল ছাপিয়া মুরের জোয়ার ছুটিল । এ সুরে সেন নেশা আছে-এ যেন মানু্যকে বড় দুৰ্ব্বল করিয়া দেয়। তখন সব ভুলিতে হয়—এই পৃথিবীর শ্রাস্তি ক্লাস্তি ব্যর্থতা নীচতা দৈন্ত—সব সেই বাশীর সুরে মিলাইয়া যায়, সুরের মোহিনী মায়ায় অতিবড় দুদ্ধৰ্ষ জন্তুও কেমন নিজের অজ্ঞাতে মাথা নীচু করে, এ বঁাশীর কাছে আত্মসমপণ করিতে পারিলে জীবন ধন্ত হয়। সেদিন সেই নদীপারের চরের উপর বাণী এক অপূৰ্ব্ব কান্না কাদিতে লাগিল সকলেই চুপ,—হঠাৎ সুষমার কি হইল কে বলিবে— একটা পা নৌকা হইতে জলের উপর ঝুলাইয়া দিল --- আরাম করিয়া বসিবার জন্ত হয়ত ••• কিন্তু পা ঝুলাইবার সঙ্গে সঙ্গে স্বযমা মা গো’ বলিয়৷ চীৎকার করিয়া উঠিয়াছে। বাণী ফেলিয়। প্লাখিয়া বনমালী মুষমাকে ধরিতে গেল— হযমাকে ধরিল—কিন্তু সেই মুহূর্তেই দেখা গেল একটা সাপ কিলবিল করিতে করিতে চরের উপর দিকে চলিয়া গেল । অভাবনীয় কাণ্ড । বেদনায় চীৎকার করিত্বে করিতে হযম নৌকার উপর