o سوا ہےN সহায়তায় প্রকাশ ক’রে থাকি, স্বপ্নেও তেমনই যে-সব প্রতীক ব্যবহৃত হয়ে থাকে অনেক ক্ষেত্রেই সেগুলি সমঅৰ্থবোধক । এই সব প্রতীকের ব্যাখ্যা ক’রে স্বপ্নের অর্থ আমাদের হৃদয়ঙ্গম হয় । মনঃসমীক্ষাকে যৌনতত্ত্ব বলে অনেকে অপবাদ দিয়েছেন। মনঃসমীক্ষকের কমিজ বৃত্তির ধারণা সাধারণের যৌনমতের মত নিকৃষ্ট এবং হেয় নয়। তা ছাড়া মানসিক ব্যাধির আলোচনা ক’রে দেখা গেছে, কামজ বৃত্তি আমাদের জীবনের এবং কাৰ্য্যাবলীর অনেকখানি অধিকার ক’রে আছে। যৌন প্রবৃত্তি এবং ইচ্ছার তৃপ্তির পথে সভ্যতা অনতিক্রমণীয় বাধার স্বষ্টি ক’রে রেখেছে। কাজেই সমাজে বাস করতে গিয়ে মানুষকে যৌনসংক্রাস্ত অনেক ইচ্ছা দমন করতে হয় । পরে সেই সব ইচ্ছা নিরুদ্ধ হয়ে মানসিক ব্যাধির কারণ হয়ে পড়ে । এদেশে পুরাকালে মন-সম্বন্ধে বহু আলোচনা হ’ত । কিন্তু সে-সব আলোচনা দর্শনের প্রকৃতি ত্যাগ ক’রে বিজ্ঞানের পর্য্যায়ে আসে নি ব’লে মনে হয়। যদিও একথা স্বীকার করতে হবে যে, প্রাচীন ঋষি এবং যোগীরা মনের ওপর অধিকার স্থাপনে এবং মনের গতিকে সংযত ও সুসংবদ্ধ করতে সমর্থ হয়েছিলেন, তবুও একথা বলা চলে না যে একালের মনঃসমীক্ষণ সে-যুগের জ্ঞানের পুনরাবৃত্তি বা নবসংস্করণ । বিংশ শতাব্দীর প্রারম্ভে ভারতবর্ষে মনঃসমীক্ষা সম্বন্ধে আলোচনা ব্যক্তিগত ভাবে কয়েক জনের মধ্যে আরম্ভ হয়। ১৯০৯ খ্ৰীষ্টাব্দে ছাত্রাবস্থায় ডাঃ গিরীন্দ্রশেখর বস্তু প্রথম এদেশে মনঃসমীক্ষার চর্চা সুরু করলেন । ইউরোপে ফ্রয়েডের মত, এদেশে বসু-মহাশয় মনঃসমীক্ষার প্রথম প্রতিষ্ঠাবান প্রচারক । ১৯১০ সালে ঐযুক্ত গিরীন্দ্রশেখর বসু কায়-চিকিৎসার ( Medical ) শিক্ষা শেষ করেন এবং তখন থেকেই তিনি মানসিক ব্যাধির কারণ অনুসন্ধানে ব্যস্ত । ফ্রয়ডের মতই তিনি গোড়াতে সংবেশনের সাহাষ্যে মানসিক ব্যাধির চিকিৎসা আরম্ভ করেন। তিনি দৈহিক ব্যাধির চিকিৎসাও করতেন । তারও অনেক পরে কলিকাতা-বিশ্ববিদ্যালয় এম-এ পরীক্ষায় পরীক্ষামূলক মনোবিদ্যা (Experimental Pychology ) পড়বার ব্যবস্থা করলেন । ১৯১৬ খ্ৰীষ্টাব্দে "প্রবাসীস্ট సాని8) ঐযুক্ত মন্মথনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম ঐ বিষয়ে এম-এ পাস করলেন । ঐ বিষয়ের ছাত্র-হিসাবে গিরীন্দ্রবাবু তার পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষণমন্দিরে এসেছেন। তখন কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্য-বিষয়ে মনঃসমীক্ষার স্থান স্পষ্টতঃ ছিল না এবং উক্ত বিষয়ে শিক্ষার কোন ব্যবস্থাও ছিল না। পরে মনঃসমীক্ষা পরীক্ষামুলক মনোবিদ্যার মধ্যে ছায্য স্থান অধিকার ক’রে নেয় । মনঃসমীক্ষাকে মনোবিস্তার অন্তর্গত ক’রে কলিকাতা-বিশ্ববিদ্যালয় মনোবিদ্যার সঙ্গে মনঃসমীক্ষার অঙ্গাঙ্গী সম্পর্ক স্বীকার ক’রে নেন । একমাত্র ভারতবর্ষেই প্রায় প্রথম থেকে মনোবিদ্যার সঙ্গে মনঃসমীক্ষা যোগ্য আসন পেয়ে এসেছে। পৃথিবীর অন্ত দেশে মনঃসমীক্ষাকে অন্ত ক্ষেত্রে বৰ্দ্ধিত হ’তে হয়েছে, পরে সেই বিকশিত বিজ্ঞান মনোবিদ্যার অন্তর্গত স্বীকৃত হয়েছে । যখন এদেশের মনঃসমীক্ষার নেতা প্রথম উক্ত বিষয়ে জ্ঞানানুশীলন ও জ্ঞানার্জন করছিলেন তখন র্তার অসুবিধা ছিল—উপযুক্ত বইয়ের অভাব। আমরা এদেশে ইংরেজীর সাহায্যে বিদ্যালাভ এবং পৃথিবীর অন্ত দেশের ভাবধারা বুঝে থাকি । ১৯০৯-১৯১০ সালে অষ্ট্ৰীয়াতে মনঃসমীক্ষার চর্চা হ’ত এবং তার বাহন ছিল জাৰ্ম্মান ভাষা । সেই সব চর্চার বিবরণ ইংরেজী ভাষাতে প্রায় অনুদিতই হ’ত না, ইংলও তখন মনঃসমীক্ষা প্রকট হয়ে ওঠে নি ব’লে । ১৯২১ সালে প্রকাশিত অবদমনতত্ত্ব-সম্বন্ধীয় কনসেপ্ট অফ, făcora’ (Concept of Itepression) osco; ভূমিকায় গিরীন্দ্রশেখর সে বাধার উল্লেখ করেছেন। এই অনতিক্রম্য বাধার সম্মুখীন হয়ে তিনি নিজের প্রতিভার অনুসন্ধিৎসাকে প্রকাশ করতেন নিজে রোগের পরীক্ষা এবং আলোচনা ক’রে। ইউরোপের মনঃসমীক্ষার নেতার সঙ্গে এদেশের মনঃসমীক্ষার নেতার সেদিক থেকে মিল আছে । আজি মনঃসমীক্ষা-শিক্ষার বিধিমতে নিজের মনকে সমীক্ষিত হ’তে দিতে হয় । কিন্তু এদের আগে স্ব-স্ব দেশে মনঃসমীক্ষক ছিল না ব’লে, নিজেদের মনকে নিজেরাই সমীক্ষিত করেছেন স্বপ্ন প্রভৃতি বিশ্লেষণ ক’রে । সে সময়ের অনেক পরে ডাঃ সরলীলাল সরকার এৰং ঐযুক্ত রঙীনূহালদার মনঃসমীক্ষার আলোচনা করেছেন বাংলা ভাষায় প্রবন্ধ লিখে, কিন্তু এদের দু-জনকে যথার্থ সমীক্ষক
পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৪০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।