পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8?b〜 পারলাম না, প্রথমেই ওর গোটা গোট মুক্তার ছাদে একটা সংস্কৃত শ্লোক লেখা :– অমপিত চরীং চিরাং, করুণায়বর্তীর্ণঃ কলেী 嚇 © o মাছমাংস খাবেন না | আমায় বলবেন, আমি রোধে দে। এখন । ૨ t সদা হৃদয়কদয়ে ক্ষুরতু বঃ শচীনন্দনঃ তার পরে রাধাকৃষ্ণের লীলা-বর্ণন, বৃন্দাবনের প্রকৃতি বর্ণনা মাঝে মাঝে । খাতার ওপরে লেখা আছে— “পাষণ্ডদলন গ্রন্থের অনুকরণে লিখিত ।” মালতী উজ্জ্বল তামাঙ্গী বটে, কিন্তু বেশ স্বত্র । ওর টান- i ক'রে বাধা চুল ও ছেলেমানুষের মত মুখত্রর একটা নবীন, । সতেজ হুকুমার লাবণ্য-বিশেষ করে যখন মুখে ওর বিলুকি । ঘাম দেখা দেয়, কিংবা একটা অদ্ভুত ভঙ্গীতে ও মুখ উচু করে , দেখছি, এমন সময় মালতী কোথা থেকে ফিরে এসে অামার হাতে খাতা দেখে মহাব্যস্ত হয়ে বললে—ও কি ? ও দেখছেন কেন ? দিন আমার খাতা— আমি অপ্রতিভ হয়ে বললাম—এইখানে পড়ে ছিল, তাই দেখছিলাম কার থাতা— --না দিন ও দেখবার যে নাই । —যথন দেখে ফেলেছি তখন তার চারা নেই । কে জানতে তুমি কবি ! এ শ্লোকটা কিসের ; মালতী সলজ্জ সুরে বললে-চৈতন্যচরিতামৃতের । কেন দেখছেন দিন— —শোনো মালতী—লিখছ এ বেশ ভাল কথাই । কিন্তু তোমার এ লেখা সেকেলে ধরণের পাষণ্ডদলনের অনুকরণের বই লিখলে একালে কে পড়বে ? তুমি আজিকািলকার কবিতার বই কিছু পড় নি বোধ হয় ? মালতী আগ্রহের হুরে বললে—কোথায় পাওয়া যায়, আমায় দেবেন আনিয়ে ? আমি ত জানি নে আজকালকার কবিতার কি বই আছে—আনিয়ে দেবেন ? আমি দাম দেবেী | দাম দেওয়ার কথা বলাতে আমার মনে ঘা লাগল। মালতী কাছে থেকেও যেন দূরে। বড় অদ্ভুত ধরণের মেয়ে, ও একালেরও নয়, সেকালেরও নয়। এই পাড়াগায়ে মানুষ হয়েছে, যেখানে কোন আধুনিকতার ঢেউ এসে পৌছয় নি, কিন্তু বুদ্ধিমতী এমন, যে, আধুনিকতাকে বুঝতে ওর দেরি হয় না। এমন মুলার চা করে, শ্রীরামপুরে শৈলদির অমন চা করতে পারত না। নিজে মাছমাংস খায় না, কিন্তু আমার জন্তে একদিন মাস ধলে রান্নাঘরের উনুনেই। আমার প্রায়ই বলে—আপনি যখন যা খেতে ইচ্ছে হবে বলবেন। আপনি ত আর বৈঞ্চব হন নি যে হসে—তখন সে বিজয়িনী, তখন সে পুরুষের সমস্ত দেহ, আত্মাকে সুন্দরী মৎস্তনারীর মত মুগ্ধ করে কুলের কাছের অগভীর জল থেকে টেনে বহুদূরের অথৈ জলে নিয়ে যেতে পারে । কিন্তু ওর সে-রূপ যথন-তখন দেখা যায় না । কালেভদ্রে দৈবাৎ হয়ত একবার চোখে পড়তে পারে। আমি একবার মাত্র দেখেছিলুম। সেদিন সন্ধ্যার পরে সারাদিন খররৌদ্র ও গুমটের পরে উত্তর-পশ্চিম কোণ থেকে মেঘ উঠে সারা আকাশ জুড়ে ফেললে এবং হঠাৎ ভীষণ ঝড় উঠল । আখড়ার বাইরের মাঠে কাঠ, ধান, ছোলা, তুলো সব রোদে দেওয়া ছিল । কেউ তোলে নি, আখড়ায় আবার ঠিক সেই সন্ধ্যার সময়টাতে লোকজন কেউ নাই । আমিও ছিলাম না । মাঠের মধ্যে বেড়াচ্ছিলাম—ঝড় উঠুতেই ছুটে আখড়ায় এসে দেখি মালতী এক মহাব্যস্ত অবস্থায় জিনিষপত্র তুলছে । আমায় দেখে বললে—দৌড়ে আলোটা জেলে আনুন, অন্ধকারে কিছু কি ছাই টের পাচ্ছি—সব উড়ে গেল— সঙ্গে সঙ্গে এল বৃষ্টি... ওকে দেখলাম নতুন চোখে । কোমরে কাপড় জড়িয়ে সে একবার এখানে একবার ওখানে বিদ্যুতের বেগে ছুটোছুটি করতে লাগল—অদ্ভুত কাজ করবার শক্তি—দেখতে দেখতে সেই ঘোর অন্ধকার আর ঝড়বৃষ্টির মধ্যে ক্ষিপ্রনিপুণতার সঙ্গে অৰ্দ্ধেক জিনিষ তুলে দাওয়ায় নিয়ে এসে ফেললে। এদিকে আমি অন্ধকারে দেশলাই খুঁজে পাচ্ছি নে দেখে ছুটে এসে বললে—কোথায় দেশলাই রেখেছিলেন মনে আছে ? কোথা থেকে হাতড়ে দেশলাই বার করলে—তার পর সেই ঝড়ের ঝাপটার মধ্যে আলো জালা—সে এক কাও 1অন্ধকারে দুজনে মিলে অনেক চেষ্টার পরে শেষে গুরুই ক্ষিপ্রতা ও কৌশলে জালো জলল । -