পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ছোটনাগপুরে সাহিত্য-সেবার উপাদান শ্ৰীশরৎ চন্দ্র রায় ছোটনাগপুরে সাহিত্য ও বিজ্ঞান চর্চার অপরিণত ও অপরিপক্ক উপকরণ প্রচুর পরিমাণে বিদ্যমান। পরিতাপের বিষয়, সে-সব উপাদান অস্পৃশু হরিজনদের মত বহু যুগ হইতে অনাদৃত, অনীহৃত ও অস্পৃষ্ট অবস্থায় পড়িয়া আছে। ভূবিদ্যা, প্রাণিবিদ্যা, উদ্ভিদ-বিদ্যা, খনিজ-বিদ্যা, প্রাগৈতিহাসিক প্রত্নতত্ত্ব, ভাষাতত্ত্ব, নৃতত্ত্ব, সমাজতত্ত্ব প্রভৃতির অনুশীলনের পক্ষে ছোটনাগপুর একটি প্রশস্ত ক্ষেত্র । কিন্তু যদিও এই ক্ষেত্রে ‘আবাদ করিলে সোনা ফুলিতে পরিত, দুঃখের বিষয় আজ পর্যন্ত চাষের মতন চাষ করার’ লোকের অভাবে এই বিস্তীর্ণ ক্ষেত্র পতিত বা আকর্মিত অবস্থায় রহিয়াছে । কেবল গত শতাব্দীর তুই-চfর জন উচ্চপদস্থ ইংরেজ সরকারী কৰ্ম্মচারী এই ক্ষেত্রে উপর-উপর আঁচড় দিয়াছেন মাত্র । কিন্তু যদিও তাহার এই ক্ষেত্র গভীর ভাবে কর্ষণ করিবার অবকাশ বা সুযোগ পান নাই, তবুও সম্যক কৰ্মণে কিরূপ সোনার ফসল লাভ হইতে পারে তাহার আভাস দিয়া তাহীদের পরবর্তী ক্লযকদের কৃতজ্ঞতাভাজন হইয়াছেন। ভূবিদ্যা, উদ্ভিদ-বিদ্যা ও প্রাণিবিদ্যা সম্বন্ধে বল্ (W. Ball), gig EtG (W. T. Blandford ) 8 of f}{xpr (Col. Tickell) প্রমুখ কয়েক জন উচ্চপদস্থ সরকারী কৰ্ম্মচারী এবং নৃতত্ব সম্বন্ধে ছোটনাগপুরের ভূতপূৰ্ব্ব কমিশনার কর্ণেল ডাণ্টন (Col. Dalton ) এবং মানভূমের ভূতপূৰ্ব্ব সহকারী কমিশনার এবং পরে ভারত-গবন্মেণ্টের হোম মেম্বর স্তর হারবার্ট রিজলি (Sir Herbert Risley) *-os fo কাজ করিয়া আমাদিগকে চিরঞ্চণা করিয়াছেন । অবশ্য ইহার দেশীয় সহকারী ও পত্রপ্রেরকদের সহায়তায় তত্ত্বানুসন্ধান করিয়াছিলেন। কিন্তু তাহাদের অনেকেরই নাম অজ্ঞাত । ১। প্রাগৈতিহাসিক যুগ প্রাগৈতিহাসিক প্রত্নতত্ত্ব সম্বন্ধে ছোটনাগপুরে এখনও সবিশেষ অনুসন্ধান হয় নাই । কাপ্তেন বীচীং ( Captain Beeching), বল্ (W. Ball), কর্ণেলটিকেল এবং আরও দুইএক জন অনুসন্ধিৎসু ইংরেজ কৰ্ম্মচারী অন্ত তত্বের অনুসন্ধান উপলক্ষে দৈবক্রমে দুই-চারিটি প্রস্তরযুগের কুঠারফলক প্রাপ্ত হন এবং আনুষঙ্গিক ভাবে সেগুলির পরিচয় দেন । ছোটনাগপুরের ভাষাতত্ত্ব সম্বন্ধেও ভূতপূৰ্ব্ব ইংরেজ সিবিলিয়ান ফুপ্রসিদ্ধ ভাযাতত্ত্ববিৎ স্তর জর্জ গ্ৰীয়ারসন (Sir (ieorge Grierson) এবং দুই-চারিটি ইউরোপীয় পাস্ত্রীর (Father Hoffmann, Rev. Dr. Noltrott, Rev. Hahn, & Father (orignard-s: ) foot of Tāl qā I do so বিদেশীয় পণ্ডিত ঘে-জ্ঞানভাণ্ডারের দ্বার ঈযৎ উন্মুক্ত করিয়া দিয়াছেন আমরা এখানে তাহার সম্মুখে থাকিয়াও এত দিন সেই উন্মুক্ত দ্বারের আহবান অবহেলা করিয়া আসিতেছি । সম্প্রতি ভারতে রাজনৈতিক, সামাজিক, বাণিজ্যিক ও কলকারখানা দ্বারা উৎপাদন সম্বন্ধীয় ব্যাপারে যেরূপ স্বাবলম্বনের স্পৃহা জাগ্রত হইয়াছে, বৈজ্ঞানিক গবেষণা সম্বন্ধেও স্তর জগদীশচন্দ্র বসু, স্তর প্রফুল্লচন্দ্র রায়, ডক্টর মেঘনাদ সহ প্রমুখ বিজ্ঞানাচার্য্যের সেইরূপ আত্মনির্ভরতার দৃষ্টাস্ত দেখাইতেছেন এবং সাহিত্য ও ইতিহাসদি সেবার ডক্টর মুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়, স্তর যদুনাথ সরকার, অধ্যাপক ক্ষিতিমোহন সেন, ডক্টর রাধাকুমুদ মুখোপাধ্যায়, ডক্টর রমেশচন্দ্র মজুমদার প্রমুখ সাহিত্যিক ও ঐতিহাসিকগণও সেইরূপ আত্মনির্ভরের পরিচয় দিতেছেন। এখন আর গত শতাব্দীর অধিকাংশ শিক্ষিত ভারতবাসীর স্তায় আমরা ভারতের অমূল্য প্রাচীন সাহিত্য, দর্শন, শ্রীতি ও স্মৃতি শাস্ত্রের মূলতত্ত্ব উভন্নটনের ও ভারতের প্রাচীন ইতিহাসের উদ্ধারের জন্ত এবং আধুনিক সাহিত্য ও বিজ্ঞান সম্বন্ধে গবেষণার জন্ত বিদেশীয় পণ্ডিতদের সম্পূর্ণ মুখাপেক্ষী নহি। যদিও পূৰ্ব্বগামী বিশেষজ্ঞ কতকগুলি বিদেশীয় পণ্ডিতের ও র্তাহীদের মতানুবর্তী কোন কোন ভারতীয় পণ্ডিতের