পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রূপান্তর শ্ৰীহেমচন্দ্র বাগচী অণিমার দেহ যখন উঠানে নামানো হ’ল, বীরেশ্বরকে সারা বাড়িময় কোথাও পাওয়া গেল না। মৃত্যু-যন্ত্রণায় যখন অণিমার মুখ বিবর্ণ হয়ে এসেছে, ঘন ঘন নাভিশ্বাস উঠছে, ধীরে ধীরে পা দু’টাে শক্ত হয়ে এল, তার পর হাত, তার পর ধীরে ধীরে সমস্ত দেহ হয়ে আসছে হিমশীতল —এ দৃষ্ঠ সহ করার মত শক্তি বীরেশ্বরের নেই। তাই তাকে সারা বাড়িময় কোথাও পাওয়া গেল না । একথানা সাদা চাদরে অণিমার দেহ ঢাকা হয়েছে, শুধু পা দুটি আর মুখখানি এবং একরাশ রুক্ষু চুল সেই মুখখানির দুই পাশে—এই দৃপ্ত ! এয়েরা আলুত নিয়ে এসে পা দুটিতে মাখিয়ে দিলেন, সীথির উপর ঢেলে দিলেন সিঁদুর—মনে হ’ল যেন অণিমার দেহ জীবন্ত হয়ে উঠেছে, লাল রঙটা এমুনি জিনিষ । "ওরে, কাগজ নিয়ে আয় রে, একথানা কাগজ নিয়ে আয়, মা’র আমার ফটো নেই, পায়ের ছাপ-দু’টো তুলে রাধুব! তবু কেষ্ট বড় হয়ে বলতে পারবে, আমার মা'র পায়ের ছাপ |—কি বলে দিদি '—অণিমার শাশুড়ীর কণ্ঠস্বর ভারী হয়ে এল। ‘ওগে, ঐ পিছর আমাকে একটু দিতে পার ? সতীলক্ষ্মী মেয়ের মাথার সি ফুর, ওগো, দেবে একটুখানি ? "অ’ মর পাগলী, ছুল নে—ছু নে, আমার কেষ্টর অকল্যাণ হবে ? যা, যা, সরে যা, দিচ্ছি আমি সিঁদুর— যা সর এখন ’ কেষ্টর বয়স তিন বছর, বীরেশ্বরের একমাত্র সন্তান, অণিমার শেষ স্মৃতি। তার পর কতকগুলি বলশালী কণ্ঠের সম-বত হরিধ্বনি ! নারীকণ্ঠের ক্রদনের রোল— उद्र भद्र अनिभांद्र (श्रु शौtन शैौtब डांब cशेदप्नद्र লীলানিকেতন থেকে চিরবিদায় নিল । প্রতিবেশিনীর ফুপিয়ে কাছে গাছতলায়, চাদের আলোয় । অমন মেয়ে আর হবে না গো, আহা সতীলক্ষ্মী মেয়ে ! শ্মশান থেকে ফিরে এসে বীরেশ্বরের মনের আগুন আর নেবে না। অমন মুন্মর দেহ কি হ’য়ে গেল আগুনে, ফটু ফটু বাশ ফাটার মত সমস্ত দেহটা দেখতে দেখতে ফেটে চৌচির হয়ে গেল, কত কথা বীরেশ্বরের মনে পড়ল —কত প্রেম, কত কাব্য ঐ দেহ নিয়ে। দুর ছাই, কি হবে আর সংসার ক’রে ? সেই থেকে বীরেশ্বর সন্ন্যাসী, মাথায় দীর্ঘ জটা, পরণে গেরুয়া ! মুখময় দাড়ি—চোথের দৃষ্টি উদাসীন ম৷ আছেন যখন, তখন কেষ্টর সম্বন্ধে চিন্তা করাই বৃথা । আজ কাশী, কাল গয়া, পরও হরিদ্বার-এই ভাবে বীরেশ্বর জীবন কাটাতে লাগল। একবার হরিদ্ধার থেকে বীরেশ্বর বাড়ি এলে পর, তার মা গোপনে চোখের জল মুছলেন। ‘আহ, ছেলের আমার কি চেহার হয়েছে গো ! এ দুঃখ যে আমার ম’লেও যাবে না। —ভাবতে লাগৃলেন তিনি আপন মনেই। মায়ের প্রাণ, এই বয়সে ছেলে সন্ন্যাসী হয়ে সংসার ছেড়ে চলে যাবে—একথা ভাবতেও যে কেমন করে । বুকের ভেতরটা যেন মোচড় দিয়ে ওঠে—কত সাধের সংসার ! মায়ের এই ভাবনা বীরেশ্বরকে বোধ হয় তাঁর নিজের অজ্ঞাতসারেই আঘাত করতে লাগল। পরদিন দেখা গেল, সে দীর্ঘ জটা ছেটে ফেলেছে, সযত্বে দাড়ি কামিয়েছে। স্নান করে উঠে সে মীর কাছে যখন একখানা ধোয়া কাপড় চেয়ে বলে তখন মা আপন মনেই ভাবুলেন, ছেলেকে সংসারী দেখে না গেলে স্বর্গে গিয়েও বোধ হয় তার তৃপ্তি হ’ত না । খেতে বসে বীরেশ্বর বলল, 'ম', ভূ-বেলা রান্না-বারা