পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

なぐうの & উপদেশ দিতেছেন,—কস্তত্বং বা কুত আয়াতঃ । তত্ত্বং তদিদং চিন্তয় ভ্রাতঃ—কার তুমি এবং কোথা হইতেই বা আসিয়াছ হে ভ্রাতঃ, এই তত্ত্বটি চিস্তা কর।” এই সময়ে ১৭৭৮ শকের শ্রাবণ মাসে তিনি বরাহনগরে গোপাললাল ঠাকুরের বাগানে থাকিতেন এবং এথানে শ্ৰীমদ্ভাগবত পড়িতেন । পড়িতে পড়িতে এই শ্লোকটি তাহার মনে লাগিয়া গেল, “আমায়া যশ্চ ভূতানাং জায়তে যেন সুব্রত তদেব জ্যাময়ং দ্ৰবাং ন পুনতি চিকিৎসিতং ।” অর্থাৎ হে সুব্রত, জীবদিগের যে-রোগ যে-দ্রব্য দ্বার জন্মে "সে-দ্রব্য কখনও রোগীকে আরাম দিতে পারে না । অতএব তিনি ভাবিলেন যে, “আমি সংসারে থাকিয়াই এই বিপদবোরে পড়িয়ছি। অতএব এ-সংসার আর আমাকে এই বিপদ থেকে রক্ষণ করিতে পরিবে না । অতএব এখান হইতে পালাও ” সন্ধ্যার সময়ে তিনি এই বাগানে গঙ্গীতীরে বন্ধুদিগের সঙ্গে বসিতেন । বর্ষার ঘনমেঘ তাহার মাথার উপর আকাশ দিয়া উড়িয়া চলিয়া যাইত। সেই নীল নীরদ তথন তাহাকে বড়ই যুথ দিত। বড়ই শান্তি দিত । তিনি মনে করি তন, এই মেঘ কেমন কামচার, কেমন মুক্তভাবে যেখানে-সেখানে ইচ্ছামত চলিয়া যাইতেছে । আমি মদি ইহাদের মত কামচার হইতে পারি, ইচ্ছামত যেখানে-সেথানে চলিয়া যাইতে পারি তবে আমার বড়ই আনন্দ হয় । ছান্দোগ্য উপনিষদে আছে যে, “য ইহাত্মান ময়ুবিদ্য ব্রজন্ত্যেতাংশ্চ সত্যান কামাংস্তেষাং সৰ্ব্বেষু লোকেষু কামচারে ভবতি ।” অর্থাৎ, যাহার এই মর্ত্যে থাকিয়াই পরমাত্মাকে জানে এবং তঁহাতে যে-সকল সত্য কামনা আছে ত'হা জানে তাহীরা পরকালে সকল লোকেই কমচার হয়, সকল লোকেই ইচ্ছানুসারে যাতায়াত করিতে পারে। এইটিই তাহার বড় লোভনীয় হইয়াছিল । তিনি ভাবিয়ছিলেন যে, আমি এখনি হইতে গিয়া লে কলেীকান্তর ঘুরিয়া বেড়াইব । আবার উপনিষদের ভায্যে দেখিলেন যে, “ন ধনেন ন প্রজয়ী ন কৰ্ম্মন ত্যাগেনৈকেন। মৃত্তত্ব মানগুঃ”—না ধনের দ্বারা না পুত্রের দ্বারা না কৰ্ম্মের দ্বারা কিন্তু কেবল এক ত্যাগের দ্বারাই সেই অমৃত তত্ত্বকে ভোগ করা যায়—তখন এ-পৃথিবী আর তাহার মনকে ধরিয়া -রাথিতে পারিল না । সংসারের মোহগ্রন্থি সকলই তাহার যথন ஒt ఏ98S তাঙিয়া গেল, তখন তিনি প্রতীক্ষা করিতে লাগিলেন কথন আশ্বিন মাস আসিব-কখন এখনি হইতে পলাইবেন, সৰ্ব্বত্র ঘুরিয়া বেড়াইবেন, আর ফিরিবেন না । তিনি হাফেজের ভাষায় নিজেকে সম্বোধন করিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন— “তোর জাফদি বায়ে অধ-সেজননী সফির নদনমখ ক দবীদামগাহে দে ওষ্কৃতাদ অন্ত,। সপ্তম স্বর্গ থেকে তোমার আহবান আদিতেছে না জালি এই পৃথিবীর মোহপাশে তোমার কি কাজ আটকাইয়াছে। তিনি যে আশ্বিন মাসের জন্ত প্রতীক্ষা করিতেছিলেন, তাহা উপস্থিত হইল তিনি কাশী পৰ্য্যন্ত একখানি বোট ভাড়া করিয়া তাহাত আরোহণ করিলেন । তিনি সংসার ছাড়িয়া তাহার প্রিয়তমের উদ্দেশে চলিয়া যাইতােছন। তাহীতে র্তাহীর কি আনন্দ, fক উৎসাহ ! তিনি বলিয়াছেন, “১৭৭৮ শকের ১৯শে আশ্বিন বেলা ১১টার সময়ে গঙ্গীয় জোয়ার আইল আমার মনেও নব উৎসাহের উৎস ছুটিল । আমি গিয়া নৌকাতে আরোহণ করিলাম। নোঙ্গর উঠিল, বোট চলিল। আমি ঈশ্বরের দিকে তাকাইয়া বলিলাম, কীস্ত.এ নদিস্তগানহঁম অ্যায় বাদ সরত বার্থজ বাসদ কে বাজ বিনয়ীম দীদারে আসনারা ।” আমরা এখন নৌকাতে বসিয়াছি, হে অমুকুল বায়ু; তুমি ও} হয়ত আবার আমাদের সেই দর্শনীয় বন্ধুকে দেখিতে পাইব ।” মহর্ষি মহিমতে সেই মহিমময়কে দেখিতে বড়ই আনন্দ উপভোগ করিতেন। মুঙ্গের গিয়া প্রথমে তিনি সীতাকুণ্ড দেখিতে যান। মন্দির হইতে ভোর চারিটার সময় রওনা হইয়া ই.টিয়া তিন ক্রোশ দূরে, স্ব র্যাদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সীতাকুণ্ডে উপস্থিত হইলেন এবং সেখানকার সমস্ত পর্যবেক্ষণ করিয়া আবার সেই তিন ক্রোশ হাটিয়া ক্ষুধিত তৃষিত ও পরিশ্রাস্ত হইয়া বোটে ফিরিলেন। “পরিশ্রান্তেক্রিয়াত্মাইহং তৃট পরীতে বুভূক্ষিত: ” তাহার পরে ফতুয়ায় বিস্তীণ গঙ্গার মধ্য দিয়া যাইতেছেন এমন সময় প্রবল ঝড় উঠিল । তাড়াতাড়ি বোট ডাঙার দিকে লইয়া গেল। ডাঙায় ত গেল, কিন্তু প্রতিকুল ঝড় গঙ্গার উচ্চ পাড়ে নৌকাকে আছড়াইতে লাগিল । নৌকা ভাঙে, আর কিছুতে রক্ষা পায় না । মহর্ষি সেই দোলায়মান নৌকা হইতে উঠিয়া পাড়ের উপরে দঁাড়াইলেন। মহর্ষি বলিয়াছেন, সেখানে ভূমিতে যদিও আমার প্রতিষ্ঠা হইল,