পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

bz8の পাচুর মা বলিল,—আমার রামীর বাছুরটাকে পাচ্ছি নে মতিকাক, সেই কালোপান বকুনা বাছুরট—দেখি একবার ও-পাড়ীয় খোজ ক’রে— মতি মল্লিক বলিলেন,—ও উলোর বাঘ, বুঝলে পাচুর মা, নোনাঙ্গটির জঙ্গল কাটা হচ্ছে কি না, তাই এখেনে এয়েছে পেল্পায় বড় বড় বাঘ-বাছুরটাছুর আর ছেড়ে না— বারোয়ারীতলায় একটা মাটার উপর বহুকাল হইতে আডিড বসিত, অমুত, শশিনাথ, এমনি আরও অনেকে আসিয়া সেই আড্ডায় জুটিত । দুই হাতে চলিত তাস, সকাল দুপুর এবং রাত্রি বীরোটা অবধি । নিত্যানন্দ-পিওন চিঠি বিলি করিয়া ফিরিয়া যাইবার সময় এক হাত তাসও মাঝ মাঝে থেলিতে বলিষ্ঠ ! কোনকোন দিন ভুগি তবলা হরমোনিয়ম লইয়া গান-বাজনাও চলিত । কিন্তু বাঘ আসিবার পর হইতে সেই আডডাট মৃতপ্রায় দিনের বেলা কেহ কেহ আসিয়া হয়ত নামমাএ দেখা দিয়া যায়–কিন্তু আডা আর জমে না—এ যেন বর্গআসারও বাড়া ! সেদিন দুপুরবেলা জনকয়েক মিলিয়া মিশিয়া মাচায় বসিয়া সেই কথাই বলিতেছিল। এমন করিয়া আর কত দিন চলে ? এখন না-হয় একটি দুইটি বাঘ আছে—কিন্তু এমূনি ভাবে চালালে গ্রামে কি আর মানুষ থাকিবে । আজ ছুটি বাঘ আছে—কাল তাহদেরই বাচ্ছা হইয়া হইবে তিনটি ! এমনি করিয়া বাঘের বংশ বাড়িতে চলিলে গ্রামে ষে বাস করা দায় হইয়া উঠিবে ! এইবেল সকাল সকাল একটা কিছু উপায় করিতে না পারিলে চলিতেছে না অার ! শশিনাথ বলিল,—খাচা বানাও—আর সেই র্যাচার ভেতর রাথো ছাগল-ছানা বেঁধে-তারপর যা ব্যবস্থা করবার আমি করবো”খন— বুড়ো অক্ষয়ের তিন-চারিটা ছাগল-ছানা আছে । এই সেদিন সবে হইয়াছে । অক্ষয় জানে তাহার ছাগলগুলির উপরই সকলের লোভ ! বলিল-খাচ যেন হ’ল—ছাগলছানা কে দেবে ?•••আজকাল যা দর ছাগলের— সূৰ্য্য কামার বলিল,—তুমিই দাও না খুড়ে একট, তোমার অতগুলো ছাগল, কোনদিন গোয়ালমৃদ্ধ ধরে ક્ષ દ્વારા રંis; ఏరి8S নিয়ে যাবে—তা’র চেয়ে একটা দিয়ে যদি হয় দেখ না-- বুড়ে অক্ষয়ের রাগ বেশী । বলিল,—কেন শুনি, চাদ তোল না, কত আর পড়বে—তিনৃটে টাকা দিলে একটু ছানা ছাড়তে পারি—নইলে এই মাগ্যিগণ্ডার বাজারেছেলেপুলে নিয়ে আমায় বাস করতে হয়—ছাগল আমি মাগন দিতে পারবো না, তা ব’লে রাখছি—বলিয়া আর কো উপায় না দেখিয়া অক্ষয় অডিডা ছাড়িয়া এক-প এক-প করিয়া বাড়ি মুথে চলিতে আরম্ভ করিল— সেদিনকার মত কোনও কিছুই মীমাংসা হইল নাএমন কি, শুধু সে দিনই নয় কতদিন ধরিয়া যে এমৃf কথাবাৰ্ত্ত চলিল-পরামর্শ হইল, তাহার ইয়ত্তা নাই কিন্তু একটা-ন-একটা কিছু বিঘ্ন আসিয়া সমস্তই প করিয়া দেয়। কেহ এতটুকু স্বাৰ্থত্যাগ করিবে না,কাহারও ব্যক্তিগত দায় হয় বলিয়া কেহ নিজের ঘা:ে দায়িত্ব লইতে চায় না। পরের উপর দিয়া কাজটা সুসমাঃ হইয়া গেলেই যেন সকলে খুশী ! কিন্তু অসুবিধা হইল সকলের চেয়ে বেশী প্রসন্ন ঠাকুরের গ্রামের এক দিকে বহুদিনকার এক দেবীর মন্দির আছে সরিদেশ্বরী বলিতে দশখানা গ্রামের লোক অজ্ঞান এ-অঞ্চলকে বাচাইয়া রাখিয়াছেন দেবী সারদেশ্বরী গ্রীষ্মকালে আকাশে এক খণ্ড মেঘ নাই—এক ফোটা বু নাই—মাঠের ধান মাঠে শুকাইয়! যাইতেছে—দশখন গায়ে লোক আসিয়া দেবীর পূজা দিয়া গেল ; তার পর দি দেখিতে দেখিতে ঝম্ ঝম্ করিয়া বৃষ্টি আসিয়া মাঠ ঘা পুকুর ডোবা ভাসাইয়া দিয়া গেল “মায়ের এমৃনি কৃপা প্রকাণ্ড গম্বুজওয়ালা মন্দির ; মন্দির বহু পুরান কালেরমাহাত্ম্যও তাই অনেক বেশী— প্রসন্ন ঠাকুর সেই মন্দিরেরই পুরোহিত । প্রসন্ন ঠাকুরের ঘরবাড়ি সবই আছে—একটু দূরে কিন্তু দিনের বেলা প্রসন্ন ঠাকুর বাড়িতে গিয়া খাওয়া-দাও। দেখা-শুনা সবই করিয়া আসে । রাত্রে মন্দিরের দাওয়া উপর গুইয়া পড়িয়া থাকে ! মন্দিরের দরজায় একট প্রকাও তাল লাগানো থাকে—আর বাহিরে প্রসন্ন ঠাকু ঘুমায় {