পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাম্প্রদায়িক বিদ্যালয় শিক্ষা-বিস্তারের অন্তরায় (সরকারী রিপোর্টের সাক্ষ্য ) ঐরমেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় রাজনীতিক উদ্দেশ্বের বশবর্তী হইয়া বর্তমান ব্রিটিশ গবর্ণমেণ্ট মুসলমান সাম্প্রদায়িক বিদ্যালয়সমূহের জন্ত অপরিমিত অর্থব্যয় করিয়া আসিতেছেন । কিন্তু ইহাদ্বারা কি মুসলমানদিগের মধ্যেই শিক্ষার উপযুক্ত রূপ বিস্তার হইতেছে ? সরকারী শিক্ষাবিবরণীগুলি ঐ প্রশ্নের উত্তরে বলিতেছে—না । কেবল ইহাই নহে, উহাদিগের দ্বারা সাধারণের অর্থের ( বহার অধিকাংশ হিন্দুর প্রদত্ত ) উক্ত প্রকার অপব্যয়ের জন্ত এবং সাম্প্রদায়িক বিদ্বেয ও পার্থক্য ভাব বৃদ্ধিহয় বলিয়া, দেশের অসাম্প্রদায়িক সাধারণ স্বার্থও ক্ষুণ্ণ হইয়া থাকে। ভারত-গবর্ণমেণ্টের ১৯২৭-৩২ সালের পঞ্চবার্ষিক শিক্ষণবিবরণীতে মুসলমানদিগের শিক্ষা সম্বন্ধে আলোচনা করিয়া উপসংহারে বলা হইয়াছে – যত দিন পর্য্যন্ত পৃথক বিশেষ (সাম্প্রদায়িক ) বিদ্যালয়সমূহ এত অধিক সংখ্যায় বিদ্যমান থাকিবে, তত দিন মুসলমানদিগের (শিক্ষায় ) উন্নতি গুরুতররূপে বাধাপ্রাপ্ত হইতে থাকিবে । (পৃ. ২৪৪ ) । উক্ত রিপোটেই শিক্ষায় অপব্যয় সম্বন্ধে আলোচনাপ্রসঙ্গে, বিহার-উড়িষ্যার ডিরেক্টর সাহেবের মত উদ্ধৃত করিয়া সাম্প্রদায়িক বিদ্যালয়সমুহের কুফলের বর্ণনা করা হইয়াছে : বিহার-উড়িষ্যার ডিরেক্টর অব পাব্লিক্ ইন্‌ষ্ট্রাকৃশন ১৯২২-২৭ সালের পঞ্চবার্ষিক বিবরণীতে, সাম্প্রদায়িক পার্থকভাবের প্রতি ক্ৰমবৰ্দ্ধনশীল অম্বুরাগের ফলে ( শিক্ষায় ) যে অনাবস্তক অর্থব্যয় হইতেছে, তৎপ্রতি মনোযোগ আকর্ষণ করিয়াছেন : গ্রামের সাধারণের জন্য একটি বিদ্যালয়ের পরিবর্তে যাহাতে বিশেষ বিশেষ সম্প্রদায়ের জন্ত বল্প বিদ্যালয় স্থাপিত হয়, সেই জন্য একটি আন্দোলন চলিতেছে---আমরা এখন এমন একটি অবস্থায় উপনীত হইতেছি যে প্রত্যেক গ্রামই একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি মক্তব, ও একটি পাঠশালা চাহিতেছে। অধিকন্তু, ইহাও দাবি করা হয় যে নিম্নপ্রাথমিক ক্ষেত্রেও বালিকাদিগের জন্তু পৃথক্ বিদ্যালয় দরকার, এবং অনেক স্থানে, অমুন্নত শ্ৰেণীয় বালক-বালিকাদিগের জন্যও পৃথকৃ বিদ্যালয় আৰঞ্চক। এইরূপে, ভারতেয় দরিদ্রতম প্রদেশে, প্রতি গ্রামে পাঁচটি প্রাথমিক বিদ্যালয় দিতে আমাদিগকে বলা হইতেছে।” দুর্ভাগ্যবশতঃ, তীব্র আর্থিক অনটনের সময়েও, এই সতর্কতসুচক কথাগুলির প্রতি মনোযোগ দেওয়া হয় নাই। তাহার সদ্যপ্রকাশিত রিপোর্টে ডিরেক্টর মহাশয় বলিয়াছেন যে— পাঁচ বৎসর পূৰ্ব্বে আমি যে মন্তব্য প্রকাশ করিয়াছিলাম তাহ এখনও প্রযোজ্য । বিহার-উড়িষা একটি দরিদ্র প্রদেশ এবং অতিবায় সহকরিতে পারেন ; এবং সাম্প্রদায়িক বিদ্যালয়গুলি অতিবায়ের কারণ । অপরিামত ব্যয়ের কথা ছাড়িয়া দিলেও, এই অভিব্যয়মূলক বিদ্যালয়গুলি উপকারপ্রসু নহে, কারণ মক্তব ও পাঠশালাগুলির শিক্ষকদের মধ্যে অনেকেই সাহিতা ব্যতাত অস্থ্য বিষয় পড়াইতে এত অক্ষম যে তাহ সৰ্ব্বজনবিদিত ’ তার পর, পূর্ব পূর্ব বিবরণীতে ইহ লক্ষ্য করা হইয়াছে যে পঞ্জাবে wossos Hoso Hixtofro. Not-fostas: (Secondary schools) আছে বলিয়। উহার ফলে অতিরিক্ত মাত্রায় প্রতিষোগিতা হয়, এবং তাহার জন্তু প্রায় সব ক্ষেত্রেই বিদ্যালয়গুলিতে নিয়মানুষৰ্ত্তিত ( discipline) czīto s písmrzi (efficiency ) grą otstars; তথাপি, এই নির্ব দ্বিতাপূর্ণ বায়ের প্রতিকারের জন্ত কোনরূপ সংহত ও সাহসিকতাপূর্ণ চেষ্ট হইয়াছে, এরূপ ইঙ্গিত পঞ্জাবের রিপোর্টে নাই। (ভারত-গবর্ণমেণ্টের দশম পঞ্চবাধিক বিবরণী, প্রথম খণ্ড, পৃ. ৫ )* উদ্ধৃত কথাগুলি পড়িতে পড়িতে মনে এক কৌতুহলের উদয় হয়। ভারত-গবর্ণমেণ্টের শিক্ষা-বিভাগের কমিশনার মহোদয়, এবং অন্ততঃ একটি প্রাদেশিক ডিরেক্টর ( বাংলার রিপোর্টেও এরূপ মত দেখা যায় ) সম্প্রদায়িক বিদ্যালয়গুলিকে অবাঞ্ছনীয় বস্তু মনে করিবেন এবং ঐগুলিদ্বারা ঘটিত অপব্যয়ের প্রতিকার হয় নাই বলিয়া দুঃখিত। অথচ সাধারণে জানে যে সাধারণের অর্থের ঐ অপব্যয়ের প্রতিকার, যাহার হা-হুতাশ’ করিতেছেন, সেই উচ্চপদস্থ সরকারী কৰ্ম্মচারী দরই হাতে । র্তাহীদের ঐ সব সচুক্তি প্রশংসনীয় বটে, কিন্তু তাহা দর কার্য্য বর্তমান কংগ্রেস-ওয়ার্কিং-কমিটির সাম্প্রদায়িক বাটায়ারার প্রস্তাবের মত, “ধরি মাছ না চুই পানি,” এই নীতির পরিচায়ক । যাহা হউক, ভারত-গবর্ণমেণ্টের উক্ত রিপোটের ৩০ পৃষ্ঠায়, পৃথক পৃথক সম্প্রদায়ের বালক-বালিকার জন্ত পৃথক

  • Tenth Quinquennial Review (Progress of Education in India, 1927-32, Vol. 1.)