পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

RR র্তারা বুঝতে পারলেন না, আমি কোটের বর্ণনা করলাম। তখন তারা হেসে উঠলেন, আর বললেন, “যদি তার খাস কামরা দেখতেন, আপনি ঢুকতে চাইতেন না। দুখনি চেয়ার, কোস্থানা ভাল, তা দেখতে সময় লাগবে । টেবিলের চাদরে কালীর দাগ, এক কোণ ছেড়া। নিজের কাপড়চোপড় সম্বন্ধে সম্পূর্ণ উদাসীন।” “আপনার এজলাসের দশাও কি ঐ রকম ?” “আমার এজলাস ব্রিটিশ জজকোর্ট অপেক্ষ কোন বিষয়ে নিকৃষ্ট নয়, বরং কোন কোন বিষয়ে ভাল।” “তাহলে দেখছি, আপনিও বিগড়ে গেছেন। আপনি বসেন মুসজ্জিত ঘরে, আর আপনার রাজা যে ঘরে বসেন সে ঘরে আপনার কেরানীও বসতে চাইবে না। রাজাকে এই বিসদৃশ বলেন না কেন ?” “অনেকবার বলেছি, হীর মেনেছি। তিনি বলেন, পদগৌরবের যোগ্য ঘর ও যোগ্য সজ্জা চাই । তার নিজের ওতেই চলে যাচ্ছে ।” “চলে যাচ্ছে বটে, চেন বামুনের পইতার দরকার হয় না। তবু । রাজা কি বই পড়তে ভালবাসেন ?” “দর্শনের বই ।” এতক্ষণে বুঝলাম, রাজা দৰ্শন-জ্ঞান নিজের চরিতে ফলাতে চান। তিনি ব্যসন-মুক্ত । পরদিন বৈকালে রাজার সহিত দেখা করতে গেলাম । পথেই দেখা হ’ল, তিনি হেঁটে কোথায় যাচ্ছিলেন । সঙ্গে এক জন চাকরও নাই। সেই নমস্কার । দু-এক কথার পর আমি বললাম, ‘রাজা, আপনার মন্ত্রীরা আপনার অত্যন্ত অনুগত, অনেক চেষ্টা কর্যেও আপনার নিন্দা করাতে পারি নি। রাজা তৎক্ষণাৎ উত্তর করলেন, আমি আমার কমচারী-সংগ্রহণে ভাগ্যবানু (I am very fortunate in the choice of my officers ) কথাট সত্য, যেমন প্ৰভু তেমন সেবক । আমি রাজার সহিত কদাচিৎ পত্র-ব্যবহার করতাম, কদাচিৎ দেখা করতাম । যখন ক’রতাম, তখন তার রাজ্যের উন্নতি কামনা করতাম, বিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠা বাঞ্ছা ক’রতাম। আর, আমার কি এক স্বভাব ছিল, আমি আমার ছাত্রদিকে বলক মনে ক’রতাম । তিমি ఏ98S রাজা হন, মহারাজা হ’ন, শ্রীরামচন্দ্রকে বালক মনে ক’রতাম। তিনি মহারাজা হবার পরেও তাকে রাজা সম্বোধন করতাম। পত্রে ও আলাপে কখনও কখনও র্তার বিবেচনার দোষ দেখতাম। কিন্তু তিনি ধীরভাবে উত্তর করতেন। আলাপের সময় আক্ষেপ একটু গুরুতর দেখলে তিনি ইংরেজীতে উত্তর করতেন। তার দুএকথানা উত্তর আমার পুরান কাগজপত্রের মধ্যে পড়্যে ছিল। একখানা দেখছি, ইং ১৯০২ সালে মাচ মাসে লিখেছিলেন । ভাবে বুঝছি, রাণীর অকালে স্বৰ্গপ্রাপ্তির সংবাদে তাকে সাত্বনা করেছিলাম / পত্ৰখানি প্রতিপত্র । দারুণ শোকের সময় লোকের কপট সভ্যতা থাকে না । তখন অস্তরের গৃঢ় বাসনা মনে আসে। পত্ৰখানিতে র্তার প্রগাঢ় ধর্মভাব পরিস্ফুট ছিল। তখন তার বয়স একত্রিশ বৎসর । 5 অনেকে জানেন মিষ্টার পি-এন বোস (প্রমথনাথ বহু, প্রায় এক বৎসর স্বর্গগত) ময়ূরভঞ্জে লোহর আকর আবিষ্কার করেছিলেন, এবং সে আবিষ্কারের ফলে টাটা-কোম্পানীর বিপুল কারখানার উৎপত্তি হয়েছে। কিন্তু অনেকে জানেন না, বয়-মশায় কি স্বত্রে ময়ূরভঞ্জে এসেছিলেন । বসু-মশায়ও আদি বৃত্তান্ত জানতেন না । তিনি ইং ১৯০৩ সালে নভেম্বর মাসে গবমেণ্ট ভূবিদ্যাবিভাগের কম হ’তে অব্যাহতি পেয়েছিলেন, ডিসেম্বর মাসে রাজার ভূবিদ্যাবিৎ হয়েছিলেন। তার পর ময়ূরভঞ্জের গোরুমহিষানি পাহাড়ে লোহার আকর দেখতে পান । আদি : বৃত্তান্ত একটু লিখি । ইং ১৯৯১ সালের জানুআরি মাসে মধুসূদন দাস-মশায়ের উযোগে কটকে ওড়িষ্যার শিল্পদ্রব্যের প্রদর্শনী হয়। এইটি প্রথম। সে সময়ে রাজা কটক এসেছিলেন। উদযোক্তার রাজাকে ও আমাকে এক দ্ৰব্য-জাতের ভালমনা বিচারক করেছিলেন। ১২টার সময় যেতে হবে, আমি একটু আগে খেয়ে সব দ্রব্য একবার দেখে রাখলাম। প্রায় পলয় আন নানা গড় হ’তে এসেছে। একস্থানে চাঁর ছড়িী কাল গুড়া মাটি ছিল ।