পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

&శ్రీరి "ব্রহচাট సారిES অরবিন্দ বসিতে যাইতেছিল, অর্ডার হইল, স্ট্রাড়িয়ে শোন। তর্জনী বেঞ্চির পর বেঞ্চি ঘুরিতে লাগিল । ক্লাস যখন শেষ হইল, সকলে ঘামিয়া উঠিয়াছে। দ্বিতীয় ঘন্টা সংস্কৃত, হেড পণ্ডিতের ক্লাস। সকলে পঞ্চতন্ত্র খুলিল । যজ্ঞেশ্বর তর্কালঙ্কার মহাশয় প্রসিদ্ধ নৈয়ায়িক পণ্ডিত, ভাটপাড়ার এক প্রাচীন পণ্ডিত-বংশের । এ-যুগে টোল করিয়া চলে না, স্কুল-মাষ্টারি লইতে হইয়াছে । তাহার প্রতি সমাজের অবিচারের জন্ত র্তাহার চিত্ত সৰ্ব্বদাই কুপিত ; চারিদিকে আধুনিক অনাচার-স্লেচ্ছাচারের জন্ত তিনি অত্যন্ত বিরক্ত । তাহার প্রগাঢ় সংস্কৃত বিদ্যাতেও আর্থিক উন্নতি খুব বেশী হইল না, সুতরাং ছাত্ররা মন দিয়া সংস্কৃত না-পড়িলে তিনি ক্ষুণ্ণ হন না । তবে পাস করিবার মত श्रृंष्क्लिगई रुहेण ! পায়ে তালতলার চটি, মোট থান কাপড় পর, গায়ে গলাবদ্ধ জামার উপর চাদর, মাথায় শিখ, চোখে ষ্টিল-ফ্রেমের চশমা। পণ্ডিত-মহাশয়কে ছাত্ররা পছন্দ করে । পণ্ডিত-মহা-য় ক্লাসে প্রবেশ করিলে, ছাত্ররা দেখে, পণ্ডিত-মহাশয়ের শিখ উৰ্দ্ধে বাধা না অধোতে। আর পণ্ডিতমহাশয় দেখেন তাহার পুত্র বাণেশ্বর ক্লাসে আসিয়াছে কি না। পণ্ডিত মহাশয়ের শিখ যদি উৰ্দ্ধেতে থাকে তাহা হইলে র্তাহার মেজাজ ভাল নাই, আর যদি নিয়ে থাকে, তাহা হইলে, হয়ত অৰ্দ্ধঘণ্টা ছুটিও দিতে পারেন। ছাত্ররা দেখিল, শিখ উচু করিয়া বাধা ; সকলে প্রমাদ গণিল । বাণেশ্বরের মুখ গম্ভীর হইয়া গেল। পিতা প্রথমেই তাহাকে পাঠ জিজ্ঞাসা করিবেন । সেজন্ত সে ভীত নয়, কিন্তু তাহাকে যখন তিনি বাড়ির ডাকনাম ধরিয়া গম্ভীর স্বরে ডাকেন, তাহার ভয়ঙ্কর রাগ হয়। নামটিও श्यशृङ्ग नग्ा-शॆति। ! পণ্ডিত-মহাশয় পুত্রকে রেহাই দিলেন । ডাকিলেন, ওহে সাহেব ! পণ্ডিত-মহাশয় নিজ পুত্রকে যেমন ডাকনামে ডাকেন, তেমনই ক্লাসের আর সকলকেও একটা নাম তৈরি করিয়া ডাকেন । সাহেব সমাসটি ঠিক বলিল। তার পর ‘মাকাল-ফলের আরবিন্দকে আহবান হইল। কাশীপ্রসাদ মল্লিকের নাম মাকাল-ফল । পাড়ার মল্লিকদের বাড়ির ছেলে। মোটা, গোলগাল মুখ, ফুটফুটে দেখতে, সব সময়ে হাসিখুশী ভাব ; পায়ে পাম্পত্ন, কেঁচোন দেশী ধুতি ও রঙীন সিস্কের পাঞ্জাবী পরিয়া আসে । মাকাল-ফল বড় মুস্কিলে পড়িল, সব সময় সুপারি চিবাইয়া সে একটু তোতল হইয়া গিয়াছে, দীর্ঘ সমাসংযুক্ত সংস্কৃত ভাষা তাহার জিহবার উচ্চারণের জন্ত নয় । সে দাড়াইলে পণ্ডিত-মহাশয় জিজ্ঞাসা করিলেন— পড়া তৈরি হয়েছে ? কাশীপ্রসাদ অম্লানবদনে উত্তর দিল—স্তর, ভাল হয় নি । পণ্ডিত-মহাশয় মাথা নাড়িয়া বলি:লন, আচ্ছ বোস, কেন স্কুলে আসি ? বাবার আপিসে বেরুতে আরম্ভ করু। বিদে ! বৃন্দাবন বুটের শবা করিয়া দাড়াইয়া গড়গড় পড়িতে আরম্ভ করিল। পণ্ডিত-মহাশয় আবার মাথা নাড়িয়া বলিলেন-আস্তে আস্তে, দেবভাষা স্নেচ্ছের মত পড়িস না । এ-ঘণ্টাতেও অরুণকে কিছু পড়িতে হইল না। তৃতীয় ঘণ্টা অঙ্কের। অঙ্কের মাষ্টার গোপালবাবু ক্ষীণজীবী, অতি ভালমানুষ। তিনি ক্লাসে ঢুকিয়াই বোর্ডে দুইটি অঙ্ক লেখেন, ছেলেদের নিজ নিজ খাতায় অঙ্ক দুইটি কষিতে বলিয়া নিজে একটি বই বা খাত লইয়া চেয়ারে বসেন। অনেকে অঙ্ক কযে, অনেকে অঙ্কগুলি খাতায় টুকিয়া বসিয়া গল্প করে। তবে কেহ গোলমাল করে না । মাষ্টার-মহাশয়র সঙ্গে ছেলেদের যেন বন্দোবস্ত হইয়া গিয়াছে। তিনি ছাত্রদের জালাবেন না, ছাত্ররাও যেন র্তাহাকে বিরক্ত না করে। র্তাহার চাকরি যেন বজায় থাকে। উৎসাহী ভাল ছেলেরা অঙ্ক কষিয়া তাহার কাছে লইয়া যায়। আর ক্লাসে মাকাল-ফলের সুপারির কৌট, সুহাস সেনের নাকু বা পণ্ডিত মহাশয়ের সরস রেখাচিত্র বেঞ্চি হইতে বেঞ্চে চালিত হয় । কিছু ক্ষণ পর গোপালবাবু নিজে উঠিয়া বোর্ডে অঙ্ক কফেন ও ছেলেদের খাতায় টুকিতে বলেন। এ-বিষয় তাহার বিশেষ দৃষ্টি। বলেন-বাপু, পরীক্ষার রেজাল্ট খারাপ ক’রো না । অধিকাংশ ছেলেই টুকিয়া লয়।