পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

V8女 9 তাহার জল পড়িতেছিল অত খেয়াল করে নাই। অঙ্কট চঞ্জালোকে নিঃশব্দে অপরাধীর মত কে ঘরে ঢুকিল। ঢুকিয়া নিদ্রিতা মীরার পাশে আসিয়া বলিল । অনেক ক্ষণ ধরিয়া বড় যত্নে তাহার নরম রেশমের মত চুলগুলির উপর হাত বুলাইতে লাগিল । আধা আলোছায়াময় ঘরে কিছুই স্পষ্ট করিয়া দেখা যায় না | “झूमनः ।” সুমন চমকাইয়া উঠিল । তাহার পরে আপনাকে সংবরণ করিয়া লইয়া স্বামীর পানে চাহিয়া কহিল, “কি বলছ ?” - “মেয়েটা কি বড় বেশী কঁদেছিল ?...” মন্মথ ধীরে ধীরে অতি সন্তপণে ঘুমন্ত মীরার মুঠিবাধ হাতটি খুলিয়া দিল । “না, তেমন আর কি কঁদেছিল। ছেলেমানুষ অল্প সময়ের মধ্যেই সব ভুলে যায়। কিন্তু ফিরতে তোমার এত রাত হ’ল কেন?”---মুমনা তথন সাংসারিক জগতে ফিরিয়া আসিয়াছে। একটুখানি আগেকার ক্রমানবিবশ স্মৃতিভ্রাতুর নারী তখন আর নাই, তাহার জায়গায় মমতাময়ী স্ত্রী স্কাসিয়া স্থান নিয়াছে। সুমনা মনে মনে স্বামীকে ক্ষমা করিল তখনই । ভাবিল, একে ত লোকটা ংসারের ভার বহিয়া নানা জালায় উদভ্ৰান্ত । তাহাকে আর বৃথা কষ্ট দিই কেন । “রাত অনেক হয়েছে। এবারে তুমি খেতে বসে। ভাতটা ঠাণ্ড হরে যাবে ব'লে গরম জলের কড়ার উপর বসিয়ে রেখে দিয়েছি। চলো দিইগে।” কিন্তু মন্মথ যেন শুনিতেই পায় নাই, সে আপন মনে বলিয়া চলিয়াছিল, “ছুটে পালালুম-দাড়িয়ে দ্বাড়িয়ে মীরার কান্না শুনতে পারলুম না । আহা মা আমার কতদিন পরে সবে দুটি ভাত মুখে দিয়েছিল। কি মনে করলে যে | এমনিতেই ত অনেক কষ্ট সুমন, ছেলেমেয়েকে কখনও মা-দিতে পেরেছি একটা সখের জিনিষ, না একটা খেলনা। বলে, মাথার ঘায়ে কুকুর পাগল, আমারও হয়েছে তাই । সামনে পিছনে কোনদিকে তাকাবার আর অবসর নাই।” “লাও, কি যে বকতে সুরু করলে পাগলের মত স্কার ঠিক নেই। রাগের সম্বর মানুষের অত ঠিক থাকেন। ছেলে প্র প্রমী $ ৰ মেয়েকে তখন অস্তায় ক’রে ফুটে বকে, মারে । তাতে ! মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যায় না। আর সত্যিই ত, তোমার মাথা কি ঠিক রয়েছে, এক জনের উপর কত ভার ” স্বমনী সাত্মনামাথা স্নিগ্ধ মুরে কহিল। দুই জনেই এবারে দু-জনের মনের কথা বুঝিল। বুৰিয়া চুপ করিয়া থাকিল। আর কথা হইল না, মন্মথ খাইবার জন্ত উঠি-উঠি করিতেছে এমন সময় হঠাৎ রাত্রির স্তব্ধতাকে চিরিয়া কোনৃধান হইতে বাশীর একটা আওয়াজ আসিল । ক্রমে সিন্ধু, তার পর বারোয়, তার পরে ইমনকল্যাণ এবং তাহারও পরে বেহাগ বাজিতে লাগিল । মনে হইতে লাগিল মুরের সেই তরঙ্গাবেগে জ্যোৎস্নার স্বল্প উত্তরীয় যেন কঁপিয়া কঁাপিয়া উঠিতেছে। মন্মথ অফুট স্বরে কছিল, “ধনধনিয়ার সেই বেকার ভাইপোট, রামখেলাওন, এ তারই বাণী। ছোকুর বাজায় ভাল। যেদিন তার মন খুলে যায় সেদিন প্রাণ দিয়ে বাঞ্জায় ।” বঁাশী বাজিয়াই চলিল । অনেক ক্ষণ পরে থামিল । কিন্তু সুরের মুর্ছনা যেন থামিতেই চায় না । স্বমন আর মন্মথ চুপ করিয়া আছে। স্বমন ভুলিয়া গিয়াছে আর খাওয়ার তাগিদ দিতে। এথন যে তার অনেক কাঞ্জ বাকী। মন্মথর খাওয়া হইলে সে খাইবে, তার পর রান্নাঘর খুইবে, হেঁসেল তুলিবে। সেসব কথা নিঃশেষে ভুলিয়া গিয়াছে। মন্মথ ভুলিয়া গিয়াছে তাহার পাওনাদারের তাড়, ভুলিয়া গিয়াছে তাঁহার নিরীহ রোগ মেয়েটাকে বিনা দোষে মারিয়া ফেলার মৰ্ম্মজাল । বাশীর মুর তাঁহাকে প্রতিদিনের কাটার ঘা হইতে তুলিয়া আরও অনেক উর্দুলোকে লইয়া গিয়াছে । সেখানকার জ্যোৎস্নার আলো-হাওয়ার কম্পন, জাকাশের তারা সমস্তই কেন্দ্র করিয়া আছে একটি অনিন্ধ্যস্কনার কিশোরী মুখকে। বহুক্ষণ চুপ করিয়া রহিয়া মন্মথ মৃদুহুরে কানে কীনে কথা বলার মত করিয়া কছিল, “মনে পড়ে মুসেই ষে তোমাকে বলতুম, বাড়ি থেকে বখন কলকাতায় আসতুম, কলকাতা ষ্টেশন যত এগিয়ে আসত ততই বুকের মধ্যে কি রকম করত । চোথে জল এসে পড়ত। মনে হ’ত, আর একটু পরে, তার পরেই তোমাকে দেখতে থাৰ। এর চেয়ে আশ্চৰ্য্য জার কি আছে ” হন। কোন কথা"ৰন্তে পরিল না। কিন্তু অস্থার