পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ । বুড়ীডিহি গ্রামে প্রাগু দেব-মূৰ্ত্তি পুরাতন দেবদেবীর মূৰ্ত্তি পাওয়া গিয়াছে, তাহাও সম্ভবতঃ বোড়ামের মূৰ্ত্তিগুলির সমসাময়িক । ইহার প্রধান মন্দিরটি পুরীর জগন্নাথদেবের মন্দিরের অনুকরণে নির্গিত। পলীমে জেলায় ডালটনগঞ্জ শহরের অদূরবর্তী জঙ্গলে ‘চেরো’ রাজাদের যে কেল্লা আছে তাহার গঠনপ্রণালী রে:হটসগড় ও শেরগড়ের অনুরূপ ; মোগল সাম্রাজ্যের প্রথম দিকের বলিয়া মনে হয়। সিংহভূম জেলার দক্ষিণ-পূৰ্ব্ব কোণে বেণুদাগরের উল্লেখ পুৰ্ব্বেই করিয়াছি, সেথানকার পুরাকালের ধ্বংসাবশেষের মধ্যে যে পুরাতন প্রস্তরমুক্তিগুলি—শিবকালী, মহিষাসুরী দেবী, গণেশ প্রভৃতি— একটি প্রস্তরের হস্তিমুৰ্ত্তি বেগলার সাহেব পাইয়াছিলেন, সেগুলি তিনি খ্ৰীষ্টীয় সপ্তম শতাব্দীর বলিয়া স্থির করিয়াছেন । কয়েক বৎসর হইল বেণুসাগর হইতে আরও কতকগুলি সুন্দর দেবদেবীর মুক্তি পাওয়া গিয়াছে, সেগুলি পাটনার যাদুঘরে রক্ষিত আছে । মন্দির-নিৰ্ম্মাণ ও দেবমন্দির-গঠন ছাড়া ধৰ্ম্মের অভু্যখন ও সমৃদ্ধির আর একটি নিদর্শন ধৰ্ম্মগ্রন্থের প্রচার। রাচি জেলার বুগু পরগণা পাঁচপরগণার বৈষ্ণবদের কেন্দ্রস্থল। গৌড়ীয় বৈষ্ণবদের সংখ্যা অধিক ; তবে রামানন্দী বৈষ্ণবও আছে । বুণ্ডু পরগণায় নৃতত্ত্ব গবেষণা উপলক্ষ্যে অবস্থানকালে আমি কয়েকখানি হস্তলিখিত পুথি সংগ্ৰহ করিয়াছিলাম। এগুলি প্রায় সবই ধৰ্ম্মগ্রন্থ ; সবই বাংলা ২ । বুড়ীডিহিতে প্রাপ্ত থোদিত প্রস্তরের চৌকাট ৩ ! বুড়ীডিহি গ্রামে প্রাগু একটি লিঙ্গ-মূৰ্ত্তি অক্ষরে লেখা । ইহীর মধ্যে চারিখনির ভাষা বাংলা, যোলথানির ভাষা সংস্কৃত এবং পাঁচখানি উড়িয়া অক্ষরে লেখা । এই পাঁচখানি উড়িয়া পুস্তকের মধ্যে দুইখানির ভাষা সংস্কৃত ও তিনখানি উড়িয়া । প্রথম বাংলা পুথিখানির নাম ‘তত্ত্ববিলাস’ । ইহাতে পদ্যে রাধাকৃষ্ণ-তত্ত্বকথা বলা হইয়াছে । গ্রন্থকর্তার নাম বৃন্দাবনদাস । তারিখ দেওয়া নাই। গ্রন্থের প্রারম্ভে গৌরাঙ্গদেব ও তাহীর ভক্তদের বন্দনা আছে ; বিশেষ করিয়া গৌরাঙ্গ-পার্ষদ গদাধর পণ্ডিতের বনান করা হইয়াছে ; তাহতে মনে হয় গ্রন্থকার গদাধর পণ্ডিতের শিষ্যপরিবার ছিলেন। গ্রন্থের শেযে লিখিয়াছেন – “বৃন্দাবন দাস কহে তত্ত্ববিলাস! শুনিলে যমের দুত নাহি আশে পাশ ॥" দ্বিতীয় বাংলা পুথি কবিচন্দ্রের ‘অঙ্গদরীয়বার’ । নকলের তারিখ ৭ই আযাঢ় সন ১২০৬ সাল ; অর্থাৎ এ পুথি ১৩৫ বৎসর আগের লেখা । তৃতীয় বাংলা পুথি রামায়ণের অরণ্যকাগু। কৃত্তিবাসের রামায়ণের সঙ্গে ভাষায় কিছু প্রভেদ আছে। শেষে লেখক ও তারিখের বিবরণ এইরূপ :– “ইতি সন ১২-৫ সাল প: নাগপুর, তঃ বারদী, মৌ পাণ্ডাভি, ২০শে ভাদ্র, কৃষ্ণপক্ষ সপ্তমী, লিখিতং স্ত্রীবিজৈরাম মণ্ডল।" চতুর্থ বাংলা পুথি মহাভারতের ভীষ্মপৰ্ব্ব। কাশীরামপাসের মহাভারতের সঙ্গে মেলে ; লেখক ঐকমলনাথ দাস,