পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আধুনিকী শ্ৰীমুশীলকুমার ঘোষ এখনও লোকের ভুলে কবিতারে খোজে— চাদিনীর মধুরাতে, আধফোট হামুনোহানায়, সেতারের মধুর গুঞ্জনে, আর প্রেয়সীর শরীর-সীমায়, নিৰ্বারর কলগীতে, মৰ্ম্মরিত বনবীথিকায়, প্রভাতের সারাহের পার্থীর কুজনে— ভুল, ভুল—সেথা হ’তে আসন টলেছে তার— নামিয়াছে প্রত্যহের জীবন-সংগ্রামে, অল্পকষ্টজর্জরিত আমাদের দরিদ্র এ দেশে । ঘেথায় সমষ্টি এই—ব্যষ্টির তুষ্টিতে সেথা কবিতা থাকিতে পারে, বিলাস-বাসনে গৰ্ব্বিতার সুরভিত রেশমী-আঁচলে ! তাহারা শোনে নি—কি ছন্দ গাথিছে গানে কোলাহলে মুখর বাজার, গম্যমান ষ্টীমারের চাকরি আওয়াজ । কলরবে যে সঙ্গীত উঠিতেছে রেলের ষ্টেশনে পাথর-বাধানে পথে লোহা-বাধা চক্রের ঘর্ঘরে নিরস্তর যে ছন্দের প্রতিধ্বনি বাজে, সেই মুরে— এস নেমে কবিতা আমার । বিশ্বের আতপ হ'তে সারাদিন রহিয়া বঞ্চিত কারখানা-ছাদতলে কোটি কোটি লোক, মুহূর্তে মুহূর্তে বরে মৃত্যু-হিম কোল— কান পেতে শোনো গান, মেশিনের লোহু-নিষ্কাশন । যেথা, লোহারে গলায়ে জলে প্রদীপ্ত ‘ফারনেস" প্রকাগু চিমনী-নীচে উড়িতেছে ছাই— ষে-তলে ঠুকিছে মাথা নেহীয়ে হাতুড়ি কিম্বা গ্রাম্য কামারের ফাপর হাপরে বাঞ্জিয় ওঠে না গান, নাহিক কবিতা ? আকাশের রৌদ্রদগ্ধ চন্দ্ৰতিপ-তলে গতিতে রাখিয়া মাথা মছুর ঝিমায়— পাশে গান গাহে তার, ষ্টমে’র রোলার } ফেনায় ভরেছে মুখ--ঘোড়া ও সহিস, সারাদিন যাত্রী খুজি পায় নি হদিস ; শকটের একটানা ক্লাস্ত রব—কবিতা গাথে না ? গরু ও মোষের মত টানে গাড়ী রিকশওয়াল পাঁচ গলে পদতলে তার, তবু টানে— দুপুর-স্তব্ধতা হরে হাতের নুপুর। [ পশুক্লেশ-নিবারণী রয়েছে সমিতি, মানুষ-পশুর তরে নাই কেহ, রয়েছে শ্মশান। } কারাগারে নির্বাসিত নিৰ্ব্বাচিত নর শৃঙ্খলের বিশৃঙ্খলে হতেছে বানর— তাদের পায়ের সেই ভারী শিকলেরা গাহিয়া ওঠে না গান, যবে তারা চলে আপনার সেলে ফিরে ঘানিটানা-শেষে ? এপ্লিনের চক্রতলে বাজিতেছে অধুনা কবিতা । হাঁটুরে নৌকার সেই তালে তালে বৈঠার বিক্ষেপ, চারিতলে মজুরের ছাদ পেটে যবে— সুর নাই তাল নাই সেও কি বেস্বরা । সে ছন্দে গুরুরি ওঠ কবিতা আমার । জীবন-সংগ্রামে শোন আজের কবিতা । কবির লেখনী বলি, বেদনার নাহি গাঁহে গান বেদনারে আনন্দেতে রূপায়িত না করিতে পারে বৃথা সে কবিতা তবে বৃথা সে লেখনী ।