ফাস্ট্রন ১মৃংখ্য কুলীন ব্ৰাহ্মণ, আসিয়া চিরবাসী হইয়াছেন। এই ৰূপ নানা দেশাগঙ্গে নুতন দেশ বর্জন কল্পে নাই, স্ব স্ব দেশের ৱিদ্যামুণী** জাচার-অনুষ্ঠান ত্যাগ করেন নাই । ইছারা ও অপৰে গণি পুৰী লিখিয়াছিলেন। গহন বনের ভিতর দিয়া লোকের গমনাগমন ছিল না । বাহিরের পুর্থী বাজিয়ের লোকের সহিত আসিয়াছিল, কিন্তু বাহিরে যায় নাই। এইরূপে দীর্ঘকালে বহু পুর্থী সঞ্চিত হইয়াছিল। কত পুর্থী ইচ্ছুর কাটিয়াছে, উই মাটি করিয়াছে, বর্ষার জল পচাইয়াছে, আগুনে ভস্ম করিয়াছে ; নষ্ট পুর্থী ডোবার জলে ও সারকুড়ে নিক্ষিপ্ত হইয়াছে। তথাপি গাড়ী গাড়ী পুর্থী স্থানান্তরিত হইয়াছে। “এশিয়াটিক সোসাইটি"র পুর্থীশালায়, “বিশ্বকোব” কার্যালয়ে, কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুর্থীশালায়, কিছু বঙ্গীয়-সাহিত্য-পরিষদের ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুর্থীর সংখ্যা বাড়াইয়াছে। সে সকল পুর্থী সধ,তু রক্ষিত হইতেছে, সত্য; কিন্তু বাকুড়া নিঃসত্ত্ব হইয়াছে। আর যে কত পুর্থী, কত পুর্থীর পাতা গ্রন্থগৃঞ্জ ছলে বলে আত্মসাৎ করিয়া অজ্ঞাত দেশে লইয়া গিয়াছে, তাহার সংখ্যা নাই। কাশীরামদাসের মহাভারতের তিনখান পুর্থী পত্রিসীয়র হইতে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুর্থীশালায় গিয়াছে। তন্মধ্যে একখানি কাশীরামদাসের নিজের পুর্থীর মাত্র পনর বৎসর পরে পাত্রসায়রে অনুলিথিত হইয়াছিল। "ধর্মপূজাবিধানে”র ও রামাই পণ্ডিতের “শুষ্ঠপুরাণে”র পুর্থী বিষ্ণুপুর অঞ্চলে পাওয়া গিয়াছিল। এত পুী নষ্ট ও স্থানাস্তরিত হইবার পরেও যে বিষ্ণুপুরে আদি কবি বড়, চণ্ডীদাসের পদবলীর পুর্থী পাওয়া গিয়াছে, আশ্চর্য বটে। এই আবিষ্কারে সাহিত্যিকসমাজ চমকিত হইয়া জিজ্ঞাসা করিতেছেন, এই চণ্ডীদাসই কি ছাতনার বাসলী দেবীর বড় ছিলেন ? আঠার বৎসর হইল সে পুর্থী মুদ্রিত হইয়াছে। কিন্তু এখনও ইহঁদের বিস্ময় কাটে নাই। স্বাধীন দেশে গতানুগতিকতা থাকে, থাকেও না। বড় রাধাকৃষ্ণলীলা-গীতে কোথাও পুরাণ হ'নিয়ছেন, কোথাও নুতন গড়িয়াছেন। গীতবাদ্যের দেশেই উত্তম উত্তম গীতের উদ্ভব হইয়া থাকে। শত বৎসর পূর্বেও বিষ্ণুপুরে বড়র গীত ধরিয়া নারদমতে তাল শিক্ষা দেওয়া হইত। সে গীতের ও তালের পুর্থী পাওয়া ما لاسسوا سيا বঁাকুড়ার পুরস্কৃতি-রক্ষণ ዬግግ গিয়াছে। আর, কে না যদু-ভট্টের খেয়াল, কীর্তিগোস্বামীর পাথেয়াজের খ্যাতি শুনিয়াছে ? আর কোথায় জগৎ-গোস্বামীর টোলে শিষ্যের প্রতিপালিত ও গন্ধৰ্ববিদ্যা আয়ত্ত করিয়া গিয়াছে ? সে ধ্রুপদ এখনও নিঃশব্দ হয় নাই । যে শুভঙ্করী আর্য বঙ্গদেশের তাবৎ পাঠশালায় অধীত হইতেছে, আদি শুভঙ্কর যিনিই হউন, তিনি এই দেশে জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন। আর কোন শুভঙ্করী আর্যায় ভূমিপরিমাণের প্রাচীন পদ্ধতি আছে ? শুভঙ্করী দাড়ী নামে যে আট ক্রোশ দীর্থ খাল আছে, কৃষকের হিতার্থে খনিত হইয়াছিল, সে দাড়ার নামেই প্রকাশ স্বত্রধর ( ইঞ্জিনিয়র ) স্থতা ধরিতে জানিতেন, দাড়ার শিরায় শিরায় জুলনাল করিয়াছিলেন। কত গ্রামে কত বান্ধ নির্মিত হইয়াছিল, কত পোখরী খনিত হইয়াছিল। এখনও বামন দ্বাদশ দিনে ইন্দ্ৰধ্বজ উত্তেলিত হয়, এখনও আখ্যান দিনে ( ১লা মান ) গ্রামবাসীরা মৃগয়া করে । দেশ স্বাধীন ছিল, দেশবাণী স্বাধীনভাবে জীবনযাত্রা নির্বাহ করিত। দেশের গ্রহচার্যেরা স্বরচিত গ্ৰহগণিতযোগে পঞ্জিকা প্রণয়ন করিতেন। তাহার চিহ্ন এখনও বগডি-তে ( যকদ্বীপ ) আচার্য-বংশে রহিয়াছে। সর্বাপেক্ষ বিস্ময়ের বিযয়, ভরণী নক্ষত্রে রবি প্রবেশ করিলে ( ১৩ই বৈশাখ ) নববর্ষ গণনা অদ্যপি প্রচলিত আছে । অশ্বিনীর উদয়ের পরেই সূর্যের প্রকাশ দেখিয়া এই বিধি হইয়া থাকিবে । কিন্তু উৎপত্তি অজ্ঞাত । প্রত্যেক জেলাতেই পুরাবৃত্তের উপকরণ আছে । প্রত্যেক জেলাতেই উপকরণ সংগ্রহ ও রক্ষা, নূতন উপকরণ অন্বেষণ ও বিনিয়োগ নিমিত্ত যে নামেই হউক এক সমিতি স্থাপন কর্তব্য । কয়েক বৎসর পূর্বে কে জাণিত দামোদরের দক্ষিণে মহানাদ নামক স্থানে পুরাকৃতি পাওয়া যাইবে ? এক এক দিন যাইতেছে, কোথাও না কোথাও কিছু না কিছু নষ্ট হইতেছে । পুরাকৃতির মুল্য নাই। আর, যে মানুষ তাহার বাসভূমির বর্তমান ও অতীত দশা স্মরণ না করে, সে অন্ধ থাকিয়া কাল কাটায় । স্বদেশের জ্ঞান নিমিত্ত আর কত কাল বিদেশীর কৌতুহলের প্রতীক্ষায় থাকিবেন ? যে দেশ নুতন নূতন ধন উপাৰ্জন করে, সে দেশ ধষ্ঠ । আর, বে দেশ পৈতৃক ধন রক্ষা করিতে উদাসীন, সে
পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬২৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।