পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

uss হের গেহাইম্রাটের কাছে এ সংবাদ গোপন থাকল না । তিনি তৎক্ষণাৎ জাৰ্ম্মান সরকারের সাহায্যে জামাতাকে জাৰ্ম্মেনী পরিত্যাগ করতে বাধ্য ত করলেনই, এমন কি নবদম্পতীর মধ্যে পত্র-বিনিময়টাও যাতে অসম্ভব হয় তার নিপুণ ব্যবস্থা করলেন এবং এই দুর্ঘটনার সমস্ত চিহ্ন মুছে ফেলার জন্তে রাজকাৰ্য্য থেকে অবসর নিয়ে কন্যাসহ প্রস্থান করলেন দূরে, ব্যাভেরিয়ার রাজধানী মিউনিক্‌ শহরে । কিন্তু তার নিষ্কণ্টক মিউনিক্‌-ভবনেও যথাসময়ে ভূমিষ্ট হ’ল ঐ যুবক, এবং তার চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে স্বামীর প্রিয় নাম ডাকতে ডাকতে র্তার অতি আদরের কন্যা কেতে ইহধাম ত্যাগ করল । নবজাত হ’ল মাতামহের গৃহে লালিতপালিত । তাকে দেওয়া হ’ল জাৰ্ম্মেনীতে অতি বিরল, অখ্ৰীষ্টীয় নাম, সীগ ক্রীড় । হের গেহাইম্রাট হয়ত আশা করেছিলেন অতীত জাৰ্ম্মেনীর বীরত্বের প্রতীক এই নাম, এর দাপটে মালকের জন্ম-ঋণ লুপ্ত হবে l কিন্তু যথাকালে বালকের পিতৃ-পরিচয়ের ক্ষুধা তীব্ৰ হ’য়ে উঠল। হের গেহাইম্রাট তাকে বোঝালেন, তার পিতার নাম লাকক হ’লেও তিনি ছিলেন এক দেশগতপ্ৰাণ জাৰ্ম্মান । ফরাসীরা তাকে কৌশলে বন্দী ক’রে তাদের আফ্রিকায় অবস্থিত ভীষণ “বিদেশী বাহিনী”তে জোর ক’রে সৈনিকের কাজে নিযুক্ত করেছে —বালকের মনে পুষ্ট হ’ল উগ্র ফরাসীবিদ্বেষ। সে তার জনক-জননীর একত্রে-তোলা ফটোটা স্বত্ব ক’রে তার ঘরের টেবিলে রাখত, তাকে নিত্য ফুল দিত, আর প্রতিজ্ঞা করত, একদিন সে এর প্রতিশোধ নেবে, তার পিতাকে উদ্ধার করবে, তার নামের উপযুক্ত কাজ সে করবে । নিৰ্ব্বাসনের বজ্ৰাঘাত পেয়ে, ততোধিক কষ্টকর বিরহকে অতিক্রম করবার জন্তে লাককৃ-দম্পতী মনে করেছিল একত্রে ফরাসী দেশে পলায়ন করবে। কিন্তু হের গেছাইম্রাটের নিপুণ ব্যবস্থায় তাও হ’ল অসম্ভব! লাককৃঙ্কে একাই দেশে श्ब्रिtङ ह'ज । _লাকক-এর পিতা, প্যারিসের এক ক্ষুদ্র মুী, এই ঘটনাকে এক ভাগের ব্যাপার মনে করলেন। তিনি চেয়েছিলেন iা ঐ ভাবগ্রৰণ অপদাৰ্থ পুত্রকে ব্যবসার নিযুক্ত করে eঞ্জ প্রবাসীীr ఏ98ఏ মানুষ ক’রে তুলতে, তার জন্তে তিনি অর্থব্যয় করতেও প্রস্তুত, ছিলেন, কিন্তু তার মুর্থ পুত্র পালিয়ে গিয়েছিল ডুসেলডফে'। এখন বহু চেষ্টা ক’রে কেতের একটা সংবাদ পর্যাস্ত না-পেয়ে র্তার পুত্রের মন যখন সেই ব্যবসার দিকেই গেল, তিনি হলেন অতিশয় সন্তুষ্ট । কিন্তু লাককু-এর পক্ষে ইউরোপবাস অসহ্য হয়ে উঠল। সে আবার পাললি—এবার সুদূর ইন্দো-চীনে। সেখানে দীর্ঘকাল কঠোর পরিশ্রম ও কৃচ্ছসাধন ক’রে প্রচুর অর্থ সঞ্চয় ক’রে আবার যখন দেশে ফিরল, তখনই আরম্ভ হ’ল বিশ্বসমর, সে বাধ্য হ’ল ফরাসী সৈনিক হ’তে । সে ধনী হ’লে তার গেহাইম্রাট শ্বশুরও সন্তুষ্ট হবেন, তার কেতেকে ফিরে পাবে, এ সব দীর্ঘ-সঞ্চিত আশা নিবে গেল । তার পর এই দশ বৎসর সে করেছে নিষ্ঠার সহিত সৈনিকের কাজ-উৎকৃষ্ট স্বদেশ-সেবা ! তার পুরস্কার ? —আর আধ ঘণ্টার মধ্যেই তার কেতের একমাত্র fচহ্ন ঐ বালককে হত্যা করবে !—করা ? সেই সব তরুণ সৈন্ত যাদের সে আপন হাতে রাইফেল ছুড়তে শিখিয়েছে ! সে চাইল তার প্রাণ-পুত্তলীকে বুকের মধ্যে নিয়ে পলায়ন করতে। কারাগারের সকল প্রহরী তারই অধীন, তাকে বাধা দেবার কেউ ছিল না । কিন্তু যুবক হ’ল অস্বীকৃত —আমন পলায়ন সে চায় না । লাককু বুঝল, এ তার মাতৃহীন পুত্রের কত বড় অভিমান । সে তখন সব বলল—তাঁর দুই গও অশ্রুসিক্ত হ’য়ে উঠল। যুবক বিচলিত হয় বলল, “বুঝেছি, এ শুধু অষ্টের নিষ্ঠুর পরিহাস ” “চল লীগ ক্রীড়, পালাই, এ থেকে রেহাই পাই—“ “ছি । সে কাজ তোমার জীবনে কী এনে দেবে ? তার চেয়ে মৃত্যু ভাল ।” লাককু এ-কথার মৰ্ম্ম অনুভব করল। কিন্তু, তাই ব’লে সে হবে পুত্ৰহস্ত ? কোনটা ভীষণতর ? যুবক হয়ত সে বিষয়ে নিঃসঙ্গেই,-লাককু ? ঐ পুত্র যে ভার কেতের একমাত্র চিহ্ন ! ও বালক তার কী বুঝবে? দীর্ঘশ্বাস ফেলে সে শুধু বলল, “হা, ভগবান “ - “দুৰ্ব্বল হ’লে চলবে না পিতা, তা হ’লে আসবে হীনতা । এ ত গু অষ্টের পরিহাস নয়, এ যে এক নিষ্ঠুর বিধানের