পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ζΦ «ζα o ఎ98ు. করিয়াছে ; কিন্তু তাহার একটু ভাবেtছাস থাকিলে বুঝি কোথাও গিয়া আনন্দ পায়, তাহাতে তিনি বারণ করিবেন ভাল হইত, মনে হয় তার হৃদয়ে কোথাও নিষ্ঠুরতা, শুষ্ঠতা আছে । উমার গান শুনিতে অরুণের বড় ইচ্ছা করে, কিন্তু উমা যখন গান গায় সে আনন্দ পায় না । প্রতিমার গান গfওয়ায় যে নিরবচ্ছিন্ন আনন্দমুর আছে, উমার কণ্ঠে সে সুর খুজিয়া পায় না । হেমবাবুর রোগাতুর মুখের দিকে চাহিয়া, উমার শীর্ণকৃষ্ণ নয়নপল্লবের দিকে তাকাইয়। সে অস্তরে কি বেদনা অনুভব করিতেছিল । তাহার মনে হইতেছিল এই সুখ, এই সঙ্গীতের আনন্দ যেন কোন বিশুদ্ধ মহনন্দের ছায়ামাত্র, বে বেদনাহীন মহানন্দের একটুকু আভাস সে পাইতেছে, কল্পলোকের দিগন্তে সে পুর্ণ আনন্দচ্ছটা ক্ষণিকের জন্য দেখা দিয়া আবার মিলাইয়া যায় কেন, ব্যথাভরা তৃষ্ণ রাথিয়া যায় { সেই অলৌকিক সন্ধ্যায় অরুণের জীবনে প্রেম, বেদনা ও অসুস্থত এক স্থত্রে তিনটি মুক্তার মত গাথা হইয়া গেল । s রাত প্রায় নয়টার সময় অরুণ বাড়ি ফিরিল । ঘরের সম্মুথে বরান্দায় ঠাকুম তাহার জন্ত প্রতীক্ষা করিতেছিলেন । জিজ্ঞাসা করিলেন-হ্যারে খেয়ে এসেছিস ? অরুণ উত্তর দিল—ইr, ঠাকুমা, আমি ত তোমায় বলেই গেলুম । ঠাকুমার ইচ্ছা হইল, জিজ্ঞাসা করেন, মামী কি খাওয়ালেন। কিন্তু অরুণ খাদ্যদ্রব্যের সম্পূর্ণ তালিকা দেবে ন, আর অত খাবারের নাম শুনিলে পরদিন তাহাকে কিছু বেশী রাধিতে হইবে । —আজ আর বেশী রাত জেগে পড়িস নে, শুয়ে পড় । —আমি শুচ্ছি, তুমিও শুতে যাও ঠাকুমা । অরুণ যে অজয়দের বাড়ি অত বেশী যায়, খায়, গল্প করে, ঠাকুমা তহি মনে মনে পছন্দ করেন না । কোন বাধাও দিতে ইচ্ছা হয় না। এই মাতৃহীন বালকের ভরের স্নেহঙ্কুবা তিনি ত মিটাইতে পারেন नाक चक्रण यनि কেমন করিয়া । প্রতিমার কিন্তু এ সব হাঙ্গাম নাই । সে বাড়িতে বেশ থাকে। স্কুলের পড়া পড়ে, গান গায়, পার্থীদের পালন করে, হেলা-ফেলা করিয়া কাটাইয়া দেয় ; মাঝে মাঝে তাহার কোন সহপাঠিনীকে নিমন্থণ করিয়া সৰ্থ করিয়া রাধিয়া খাওয়ায় । কাহারও বাড়ি যাইতে সে রাজী হয় না। পুরুষেরা চিরকালই বাহিরমুখে । প্রতিমার ঘরে উকি মারিয়া ঠাকুম নিজের ঘরে গেলেন। প্রদীপ নিবাইয়া বারীন্দীয় মাদুর পতিয়া শুষ্টলেন । সুন্দর চাদ উঠিয়াছে । কৃশাঙ্গী, গৰ্ব্বাকৃতি, কঁচাপাক চুলগুলি ছোট করিয়া চাটা বলিয়া বাৰ্দ্ধকারেখাঙ্কিত মুখ শীর্ণ দেথায় । দেহের তপ্তকাঞ্চনবর্ণ, আঁটসটি গড়ন, মুখের স্নেহপ্রসন্নত দেখিলে বোঝা যায়, ঠাকুমা এক সময়ে সুন্দরী ছিলেন । বস্তুতঃ অতি গরিব ঘরের মেয়ে হইলেও, অতুলনীয় সুন্দরী ছিলেন বলিয়াই এই ধনী বনিয়াদী বংশে র্তাহীর বিবাহ হইয়াছিল । ছোটবেলায় সবাই তাহীকে পুতুল বলিয়া ডাকিত। তাহার সমস্ত জীবন নিষ্ঠর বিধাতার হস্তে পুতুলের খেলাই হইয়াছে । ছোট মেয়ে আপন পুতুলকে অ’দর করিয়া নানা রঙীন কাপড়ের টুকরায় খুশমত সাজায়, হৈ চৈ করিয়া তাহার বিবাহ দেয়, আবার রাগ হইলে সমস্ত সজ্জা ছিড়িয়া সেই মাটিতে আছড়ায় । বিধতাও একদিন তাহাকে বালিকাবয়সে বধুবেশে সাজাইয়া কোন সোনার ংসারে পাঠাইয়াছিলেন । সে-কথা ঠাকুমার স্বপ্নের মত মনে হয়। সোনার স্বপ্ন মিলাইয়া গেল, যৌবনেই তাহাকে যোগিনী হইতে হইল । যে শ্রাবণ-রাত্রে দুই শিশুপুত্রকে বক্ষে চাপিয়া তিনি বিধবা হইয়াছিলেন, মনে হইয়াছিল সে অন্ধকার নিশীথের বুঝি অবসান হইবে না । সে রাত্রিও প্রভাত হইল । বড় সাধ করিয়া প্রথম পুত্রের বিবাহ দিয়াছিলেন। সে পুত্র, সে লক্ষ্মীস্বরূপিণী পুত্রবধু আজ কোথায় ! সব ফাকি দিয়া চলিয়া গেল। স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি ভাঙিয়া পড়িয়াছিলেন, কিন্তু তার পর দুঃখ তাহার ললাটে যতই আঘাত করিয়াছে, তিনি মনের বল হারান নাই, কোথা হইতে নবশক্তি পাইয়াছেন । নিষ্ঠুর বিধাতা সংসারাঙ্গনে এ পুতুলটিকে বার-বার আছড়াইয়াছেন,