পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চৈত্র বাংলা দেশের একটি শিক্ষ-প্রতিষ্ঠান °☾ কোথাও আয়োজন-বাহুল্য নাই । আশ্রমের সর্বত্রই একটা সংযত ওচিতার ভাব রহিয়াছে। ১৯২৩ সালে ছেলেদের বিদ্যালয়টি, শিক্ষামন্দির প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল ; এখানে ছেলেরা ছাত্রবৃত্তি পৰ্য্যন্ত পড়ে। ইহার ছাত্রসংখ্যা অনুমান দুই শত । এখানকার ছাত্রগণ প্রতি বৎসর গবর্ণমেণ্টের বৃত্তি পাইতেছে। সারদামন্দির প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল ১৯২৭ সালে , প্রথমে ইহা সামান্ত একটি নিম্নপ্রাথমিক বিদ্যালয় মাত্র ছিল, কিন্তু ধীরে ধীরে অল্প কয়েক বৎসরের মধ্যেই ইহা মধ্য-ইংরেজী বিদ্যালয়ে পরিণত হইয়াছে এবং সম্প্রতি ইহার সঙ্গে উচ্চবিদ্যালয়েরও একটি শ্রেণী খোলা হইয়াছে । দুইটি বিদ্যালয়েই একদিন শিক্ষার্থী জুটিত না ; শিক্ষামন্দির আরম্ভ হইয়াছিল মাত্র পাঁচটি ছাত্রকে লইয়া । সারদামন্দিরের আরম্ভ কয়টি ছাত্রীকে লইয়া তাহার সংখ্যা ঠিক মনে পড়িতেছে না, কিন্তু আজ উভয় বিদ্যালয়েই স্থানাভাব ঘটিতেছে । শিক্ষামন্দিরের ছাত্রের সংখ্যা পূৰ্ব্বেই বলিয়াছি, সারদামন্দিরের বর্তমান স্থা ট্রী-৮ খন এক শতের অধিক । এমন কি পাশ্ববৰ্ত্তী গ্রামের ছাত্রীদের জন্ত আশ্রমের কৰ্ম্মিগণকে মানখণ্ড ও কলাগাছি গ্রামে আরও দুইটি সারদামন্দির প্রতিষ্ঠা করিতে হইয়াছে। সেই দুইটি বিদ্যালয়ের ছাত্রীসংখ্যাও মোট প্রায় এক শত হইবে । সারদামন্দিরের ছাত্রীগণও প্রতি বৎসর গবর্ণমেণ্ট বৃত্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়া বৃত্তিলাভ করিতেছে । ছেলেমেয়েদের বৃত্তিলাভের কথা এই জন্তই উল্লেখ করিয়াছি যে, সাধারণ হিসাবেও ইহার বাংলা দেশের অন্যান্ত শত শত বিদ্যালয়ের চেয়ে কম নহ। বরং যদি বৃত্তিলাভ বিদ্যালয়ের শ্রেষ্ঠত্বের পরিচয়ও মাপকাঠি হয়, তাহা হইলে হয়ত ইহারা অন্ত বহু বিদ্যালয় অপেক্ষা শ্রেষ্ট বলিয়াই পরিগণিত হইবে। কিন্তু শিক্ষামন্দির ও সারদামন্দিরের বিশেষত্ব সেখানে নহে । সে বিশেষত্ব চোখে পড়ে যখন এই বিদ্যালয় দুইটির ছাত্রছাত্রীগণকে দেখি । অল্পবয়স্ক গ্রাম্য ছেলেমেয়েরা স্কোয়াড় ড্রিল করিতেছে, লেফট্ রাইটু করিয়া বাণী বাজাইর রাজপথ দিয়া মার্চ করিয়া ধাইতেছে, মেয়েরা সাইকেল চড়িতেছে, জুজুৎস্থ করিতেছে ; ছেলেরা কুস্তী করিতেছে, সকলেই দেহ-মন দিয়া কাজ করিতেছে, প্রাণ খুলিয়া হাসিতেছে, খেলা করিতেছে । সকলের দেহ বলিষ্ঠ, গতি ক্ষিপ্র, মন চলিষ্ণু সবল, মুখশ্ৰী উৎসাহে উজ্জ্বল, দীপ্ত ; সকলেরই মনে আশা, আনন্দ ও স্বাধীনতা । তাহার। আপন কৰ্ম্মের ভার আপনারাই লইয়াছে ; ছাত্রছাত্রীদের নিজ নিজ সতৰ আছে । সেই সঙ্ঘের উপর ছাত্রছাত্রীদের সামাজিক জীবন নিয়ন্ত্রণের ভর ও অধিকার দেওয়া হইয়াছে। সভেম্বর বিভিন্ন বিভিন্ন শাখা আছে, কোনটির উপর বিচারের ভার, কোনটির উপর নৈশবিদ্যালয়-চালনার ভার, কোনটি . ব্যায়ামের ব্যবস্থা করে, কেনটি বা সংবাদপত্র ও পুস্তকাদি পাঠ করিয়া নুতন নূতন আদর্শ ও চিন্তা ও ছড়াইবার তাহরণ করিবার ভার লইয়াছে । ( ১ ) মেয়েদের থেলা । ( ২ ) ছেলেদের মৃত্য । বিদ্যালয়গৃহ পরিষ্কর রাখিবার ভ}রও ছেলেমেয়েদেরই উপর ; এমন কি তাহারা পায়খানাও পরিষ্কর করে। এথানকার ছেলেমেয়ের গ্রাম্যজীবনের গতানুগতিক লোকাচার, অন্ধ সংস্কার ও পুরুষানুক্রমিক অজ্ঞতা, পল্লীসুলভ সকল জড়তাই ধীরে ধীরে ত্যাগ করিয়াছে । ভোরের স্তিমিত আলোকে এগানকার ছাত্রীরা এক বা দলে দলে