পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

b=Rట్ర বৈষম্য। আর এই বৈষম্য যে ভারতবর্ষের অতীত যুগের ইতিহাসের জাতি-বিভাগের মুল তাহাও অস্বীকার করিবার উপায় নাই। নবাগত শুক্লবৰ্ণ আর্য্য ও আদিম কৃষ্ণবর্ণ অনার্য্যের বিরোধই অtহার বিহার ও যৌন সম্বন্ধে স্বাতন্ত্র্যের স্বষ্টি করিয়াছিল। ইউরোপীয় জগতে রাষ্ট্ররূপ যুদ্ধবিগ্রহকে আশ্রয় করিয়া বিকাশলাভ করিয়াছে বলিয়া সেখানে জেতা জাতি বিঞ্জিত সমাজ হইতে চিরকালই আপনাকে বিচ্ছিন্ন রাখিয়াছে। ইউরোপের মধ্যযুগের শিভ্যালরি’র (chivalry?) Geofě stata i আমেরিকার প্রজাতন্ত্রেও আজ পর্যন্ত অভিজাতবর্গ ও জনসাধারণের বৈষম্য সমান অক্ষুণ্ণ রহিয়াছে । সেখানে নিগ্রোদিগের প্রতি নিৰ্ম্মম সামাজিক নিগ্রহ প্রজ-তন্ত্রের একটি দুরপনেয় কলঙ্ক । জাৰ্ম্মেনীতে মধ্যযুগে সামরিক শ্রেণী,ব্যবসায়ী, শিল্পী ও কৃষকের যে ভেদবিভাগ ছিল, তাহা এমন একটা অসামঞ্জস্য সমাজে জাগাইয়ণ রাখিয়াছে, যাহার ফলে শ্রমিক-বিপ্লবের ইতিহাসে জাৰ্ম্মেনীতে কাল মার্কসের এত প্রভাব হইয়াছিল। শ্ৰেণীচৈতন্ত ট্ৰেন ইউরোপের অন্ত দেশের বহু পূৰ্ব্বে জাগিয়া উঠিয়াছিল এবং আজও তাহ পাশ্চাত্য দেশের ভবিষ্যৎকে অনিশ্চিত রাথিয়াছে । আর কুশিয়া দেশে এই অসামঞ্জস্য এমনই অসহ্য হইয়া উঠিয়ছিল বে, উহার ফলে একটা প্রচও বিপ্লব সংঘটিত হইল । রুশিয়ার এই বিপ্লব এখনও শান্ত হয় নাই, সামাজিক অসামঞ্জস্য দূর হইয়া কিরূপে আবার নুতন সমাজ-বিস্তাস দেখা দিবে তাহার নিরূপণ করিবার এখনও উপায় নাই। সমগ্র ইউরোপখণ্ডেই এখন ভাঙাগড়ার পালা চলিয়াছে, ব্যবসায়ী ও ধনীর প্রভুত্বের পরিবর্তে শ্রমজীবীর প্রভুত্ব ইউরোপের সমাজভিত্তি শিথিল করিয়া দিতেছে। ভারতবর্ষ ও চীনদেশের অতীত ইতিহাসে সামাজিক গুরবিভাগ যুদ্ধবিগ্রহের দ্বারা তত অধিক নিয়ন্ত্রিত হয় নাই । তাই যুদ্ধের ক্রীতদাস গ্রীস ও রোমের স্তায় ভারতের সমাজে তত পরিচিত নহে। পরিবার, কুল, জাতি ও শ্রেণীর প্রসার ও সমবায়ে প্রাচ্য সভ্যতায় রাষ্ট্রের উৎপত্তি ও বিকাশ বলিয়া ভারতে আর এক প্রকার শ্রেণী-বিভাগ জন্মলাভ করিয়াছে । কৰ্ম্ম, ক্রিয়া ও ব্যবসার হিসাবে শ্রেণীবিভাগ সেই কারণেই ভারতের আদিম বৰ্ণবিঙ:ঙ্গয় সহিত । {ot} ఏన98S মিশ্রিত হইয়াছে এবং চিরাচরিভ শাস্তিপুর্ণ কৃষিবৃত্তির অন্নশীলনের ফলে এক দিকে যেমন শাস্ত্রবক্ত। ব্রাহ্মণ জাতির অধিকার প্রতিষ্ঠিত ও অক্ষুণ্ণ রহিয়াছিল, অপর দিকে তেমন অগণ্য অনাচরণীয় ও অস্পৃশু জাতির স্বষ্টি হইয়াছিল ; ইহারাই কৃষিকৰ্ম্মের নিম্নস্তরের কার্য্য চালাইয়া আসিতেছে, যথা চামার, নমঃপূদ্র, জালিক, ভূইমালী, ঈড়ভ, পুলেয়া, মাহার প্রভৃতি। চীনদেশে আমাদের ব্রাহ্মণ জাতির ন্তায় মাগুরীণ জাতির শ্রেষ্ঠত্ব স্বাভাবিক, কিন্তু ভারতবর্ষের মত সেখানে সমাজ এত শতধাবিভক্ত নহে, সেখানে বিবাহ-বিচার নাই, অন্ন-বিচার নাই, সামাজিক নির্যাতন নাই । চীনদেশে যে-কেহ শিক্ষাদীক্ষা লাভ করিয়া মাগুfরীণের পর্যায়ে উন্নীত হইতে পারে ; কিন্তু ভারতবর্ষ হইণ্ডে ব্রাহ্মণত্বলাভের অনুরূপ অধিকার বহুকাল লুপ্ত হইয়া গিয়াছে। বর্তমান কালে অল্পবিচার ও স্পর্শ-বিচারের ভ্রান্ত বিশ্বাস অনেক সময়ে যে কিরূপ অযৌক্তিকতার প্রশ্রয় দিতেছে, যদি এখন তাঁহা ভাবিয়া না দেখা যায়, তাহা হইলে এদেশে সত্য, স্তায় ও প্রেম আর অক্ষুণ্ণ থাকিবে কিনা সন্দেহ। সৰ্ব্বাপেক্ষা শোচনীয় ও লজ্জাজনক বিষয় ভারতের পাতিত্য-প্রথা । নিম্নশ্রেণীর যে অশুচি ও অসভ্যতা ভারতবর্ষের সামাজিক জীবনে নিঙ্গা ও ঘৃণার মুল কারণ, তাহা অপরিহার্যাভাবে এদেশে থাকিয়া গিয়াছে । বাংলা দেশে এই প্ৰ'ssf-প্রম’র বন্ধন নানা কারণে কতকটা শিথিল হইলেও মন্ত্রীজ ও রাজপুতানা প্রদেশে সে-বন্ধন বিশেষরূপেই কঠোর রহিয়াছে। দক্ষিণ-ভারতে, বিশেষতঃ মালাবারে, ইহা কি নিদারুণ সামাজিক নিগ্রহের কারণ হইয়াছে তাহা বহু লেখক অতি করুণভাবে বর্ণনা করিয়াছেন—সে বর্ণনা পাঠ করিয়া কোন হিন্দু লজ্জায়ও বেদনায় মস্তক অবনত না করিবেন ? অথচ এই তথাকথিত নিম্ন ও পতিত জাতির মধ্যে ভারতবর্ষের অধিকাংশ লোকই অস্তুভুক্ত ; তাহারাই সমাজের মূলভিত্তি। জাতির এত বড় একটা অংশকে চিরকাল পঙ্গু করিয়া রাখা সমাজের পক্ষে কিরূপ আত্মঘাতী ব্যাপার তাহ বলাই বাহুল্য। ইহার কিরূপ নিদক্ষিণ বিষময় ফল হইয়াছে, তাহ বলিয়া শেষ করা যায় না । এই সকল তথাকথিত নিয়শ্রেণীর লোকই সামাজিক নির্বাতলে ।