পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

سوt@سوV থাইতে ধসিয়াও ছেলেমেয়ের হাজার হাঙ্গামা । সহজে কি ভাত তাহদের মুখে ওঠে ? এ মাছ ভাল নয়, ও তরকারিতে বাল । সস্তুকে মা বড় মাছখানা দিয়াছে, মিনিকে দেয় নাই। নয় ত মা নিজে খাইবে বলিয়া বড় মাছের মুড়াটা লুকাইয়া রাখিয়াছে। আবার কোনো দিন বা বায়না ধরে ষে তাহারা মাছ খাইবে না। রোজ কেন মাছ খাইবে ? মণ্টদের বাড়ি কেমন মাংস হয়, ডিম হয়, মা বুঝি তাহদের একদিনও কিছু ভাল জিনিষ দিতে পারে না ? দুইটি ছোট মানুষকে খাওয়ান শেষ করিতে প্রায় বিনোদিনীর এক ঘণ্টা কাটিয়া যায়। তাহার পর ধীরেমুস্থে স্নান সারিয়া, ঘরে আসিয়া বসে । ছেলেমেম্বর এখন ঘুমাইবার কথা, কিন্তু দুই বৎসরের ভিতর কখনও তাহদের দিনের বেলা ঘুমাইতে দেখা যায় নাই। মাদুর পাতিয়া গুইয়া তাহার কেবল পরম্পরের সঙ্গে খুনহট করে, এ উহাকে চিমুটি কাটে, নয় ত পা দিয়া ঠেলা দেয়, আবার থাকিয়া থাকিয়া বালিশ ছোড়াছড়িও হয়। বিনোদনী অগিয়া দুইজনের মাঝখানে গুইয়া পড়ে, কাজেই বাধ্য হইয় তাহদের খানিক ক্ষণ চুপ করিয়া থাকিতে হয়। কিন্তু চুপ করিয়া থাকাটা ষে একেবারেই অসম্ভব ? অথচ এখন মারামারি করিতে গেলে মা বিরক্ত হইয়া দুই-একটা চড় যে লাগাইবেন না, তাহাও বলা যায় না। সুতরাং খানিক অপেক্ষা করিয়া তাহারা আস্তে আস্তে উঠিয়া নীচে মন্ট-দের ঘরে পলায়ন করে বিনোদিনী তত ক্ষণ ঘুমাইয়া পড়িয়াছে। বেশী ক্ষণ অবস্থ ঘুম তাহার হয় না । পাড়ার মেয়ে-ইস্কুলে চং চং করিয়া ঘণ্টা বাজিতেই সে উঠিয় পড়ে। উনুনে আঁচ দিয়া ছেলেমেয়েকে ডাকিয়া উপরে লইয়া আসে । দুধ টুকু কোনোমতে গিলিয়া আবার তাহারা যে ষার খেলার সাঙ্গীর সন্ধানে প্রস্থান করে । তাহার পর রায়া করা, খর fট দেওয়া, শুকনে কাপড়, তোলা, বিছানা পাত, একটান কাজের স্রোত বহিতে থাকে, রাস্তার আলো জলিবার আগে তাহার আর নিঃশ্বাস লইবার অবসর থাকেন। আজ কেবলই কাজের ফঁাকে ফঁাকে তাহার মনে হইতে লাগিল, লটারীর টিকিটটার কথা। আচ্ছ, ধৱ হৰি । সত্যই কিছু পাওয়া যায়? এমনও ত হয় ? কেহ ন-কেহ ত: ఏSBS প্রাইজগুলি পাইবেই ? প্রকাশ পাইলেই বা? আঃ, তাহা হইলে চিরদিনের মত হাড় ক’খানা, বিনোদিনীর জুড়ায়। পাঁচ লাখ, দশ লাখ কিছু সে চায় না, অতি লোভ তাহার নাই। শুধু এই নিত্য দুশ্চিন্তা, নিত্য অপমানের হীত হইতে যদি সে নিস্কৃতি পায় তাহা হইলেই যথেষ্ট । মোটা ভাত, মোটা কাপড় আর মাথা গুজিবার মত নিজের একটু ঘর, ইহা হইলেই হয় । কতই বা তাহাতে লাগে ? কে জানে, অত হিসাব করিয়াই বা কি হইবে ? সত্যই ত আর সে টাকা পাইবে না ? কিন্তু এই অতিলোভনীয় চিন্তাটিকে কিছুতেই সে মন হইতে দূর করিতে পারে না। লটারীর টিকিট কেন এই তাহাদের প্রথম, তাই আশা বেশী, উৎকণ্ঠীও বেশী। যদিই হয়, হওয়া এমনিই কি অসম্ভধ ? সেদিন প্রকাশ একটু সকাল-সকাল বাড়ি ফিরিল। আজ আর স্ত্রীকে রাগাইবার তাহার ইচ্ছা ছিল না। বিনোদিনী তাড়াতাড়ি চা করিয়া আনিল, দুটি খানি fচড়াও ভাজিয়া দিল। পাথা হাতে করিয়া স্বামীর কাছে আসিয়া বসিয়া জিজ্ঞাসা করিল, “স্থা গ, লটারীর ফল বেরবে কবে ?” প্রকাশ চিড়াভাজ থাইতে থাইতে বলিল, “বেশ আছ, ঐ ভাবছ বুঝি সারাক্ষণ ? সে এখনও ঢের দেরি, মাসখানেক ত হবেই।” বিনোদিনী ছাড়িবার পাত্রী নয়, বলিল, “ত একটু ভাবছি বইকি ? নগদ দুঘণ্টাক খরচ ক’রে টিকিট কেন হ’ল। আচ্ছ, টাকা পেলে তুমি কি কর ?” প্রকাশের যে একটু লটারীর নেশা লাগে নাই তাহা নয়। সে বলিল, “কতটা পাব, তার উপর নির্ভর করে । লাখ টাকার প্রাইজও হয়, আবার পাঁচ-শ’রও হয়। পাচ-শ পেলে কিছুই করি না, তোমার দিয়ে দিই বোধ হয় গহনা গড়াবার জন্তে ।” বিনোদিনী হাসিয়া বলিল “ইস, তা আর না ? কতই গহন দিয়েছ এই দশ বছরে, তার অাবার কথা " . চায়ের পোলা খালি করির প্রকাশ বলিল, “কি বিয়ে দেৰ শুনি? টাক যে-কটা জানি তাত দেখতেই পাও? সত্যি এবার টাকা পেলে একখানা গহনা তোমার ভাল