পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

واسb ఎ98ఫె দৈন্য কিছুই প্রবেশ-পথ পায় নাই। এখানে চন্দ্রকাস্তবাবু বন্ধুদের সঙ্গে বসিয়া সাহিত্যের সীমা এবং দর্শন ও বিজ্ঞানের সমন্বয় লইয়। তর্ক করিতেন, গোধূলী বেলার আলোতে নিৰ্ম্মল সেতার বাজাইত ; এবং দীপালোকিত এই ঘরেই সে স্তব্ধ হইয় বসিয়া বই পড়িত। এইখানেই জ্ঞানের অপরিসীম মুক্তির মধ্যে এবং সাংসারিক চিন্তাবিরহিত বিশুদ্ধ আর্টের আলোচনায় সে তাহার সমস্ত দিনরাত্রি কাটাইয়ছে । সুশীলা যেখানে সংসারের খরচ বঁাচাইবার জন্য গুড় কয়লার সহিত মাটি মাথাইয় গুল প্রস্তুত করিতেন, নিজের হাতে গরুর জন্য ছানি কাটিতেন, যেখানে তাহার সেঞ্জভাইটি আই-এ পরীক্ষায় বৃত্তি না পাইয়া কলেজ হইতে আসিয়াই এক পেয়ালা চা খাইয় গৃহশিক্ষকতা করিতে ছুটিত— সংসারের সেই নীচের তলার সহিত তাহার বিশেষ জানাশোনা ছিল না। তাহার সপ্তদশ বর্ষের জীবনে সে কখনও বাংলা বা ইংরেজী নভেল পড়ে নাই, লুকাইয়া আড়ি পাতে নাই, পান চিবাইতে চিবাইতে কিংবা চকোলেট চুষিতে চুষিতে সমবয়স্কদের সহিত সরস আলোচনা করে নাই। এখনও তাহার তরুণ জীবনের মধ্যে সে আত্মনিমগ্ন, এক। চন্দ্রনাথ এককালে কলিকাতার কোন বে-সরকারী কলেজে বছর দুই-তিন অধ্যাপন করেন, তাহার পরে কি জানি কেন তাহা হঠাৎ ছাড়িয়া দেন । কিন্তু সেই হইতেই কলেজের ছেলেদের প্রতি, ধীমান চিন্তাশীল অল্পবয়সী ছেলেমাত্রের প্রতিই তাহার একটা আকর্ষণ থাকিয়৷ গিয়াছে । পথেঘাটে ট্রামে বইয়ের দোকানে সামান্ত দু-চার ঘণ্টার আলাপীকেও তিনি সাগ্রহে বাড়িতে নিমন্ত্রণ করেন এবং তাহার সহিত হাসিয়া অজস্ৰ বকিয় তর্ক করিয়া অল্প সময়ের মধ্যেই তাহার অন্তরঙ্গ হইয় উঠেন। যামিনী অল্প কয়েক দিন হইতে এথানে আসিতেছে, কিন্তু ইহারই মধ্যে তাহার আর আসা-যাওয়ার কোন আইন-কানুন নাই । তাহ সময় হইতে অসময়ে গিয়া উত্তীর্ণ হইয়াছে। রাত্রি দশটা অবধি সে চন্দ্রকাস্তের সঙ্গে বসিয়া তর্ক করে, সকালের দিকে কখনও কখনও বেলা বারটাও হই যায়। সে যে কেবল cशब्रटिस्कृत নূতন বই এক্লুটিলারের --- ' ... انقلات بينهم يحي প্ল্যান ক্ষমার বলশেভিজমের লষ্টয়াই"ৰীলাচনা করিতে এত উৎসাহ দেখায়—তাহী" মনে হয় না। কিন্তু নিৰ্ম্মল! তাহাকে লক্ষ্যও করে নাই। চন্দ্রকাস্তের সহিত যামিনী নানা বিষয়ে আলোচনা করিতে করিতে মাঝে মাঝে যখন বিমন হইয়। যাইড তখন নিৰ্ম্মল। বাবার পাশে প্রায়ই উপস্থিত থাকিত বটে ; কিন্তু চিরকালের অভ্যাসমত চুপ করিয়া শোনা ছাড়া আর কোন কথা তাহার মনেও আসিড না । বস্তুতঃ সাধারণ মেয়েদের চেয়ে অন্যরকম ভাবে মানুষ হওয়ার জন্ত নিৰ্ম্মলার কোন কোন হৃদয়বৃত্তি একেবারে অপরিণত ছিল । তাহার বাবা এই বয়স হইতে জ্ঞানের প্রতি, গভীর চিস্তার প্রতি তাহার মনে এমন একটা আকর্ষণ ক্ৰষ্টি করিয়া দিয়াছিলেন, যে, নিজের বয়সের সঙ্গিনীদের সঙ্গে থাকিলেও স্বভাবতঃই সে থাকিত এক । তাহারা যখন শাড়ী, গয়না, নুতন উপন্যাস এবং মুখরোচক পরচর্চা লইয়া পরম উৎসাহে মাতিয়া’ উঠিত, তখন সে-সব হইতে মন তাহার বিতৃষ্ণায় সরিয়া আসিত । ষেদিন নিৰ্ম্মলা জন্মিয়াছিল সেই দিন হইতেই চন্দ্রনাথ তাহার মেয়ের জীবনকে এমন আচ্ছন্ন করিয়াছিলেন, যে, র্তাহাকে বাদ দিয়া অপর কোনখানে তাহার কন্যার জীবনের যে কোন অর্থ থাকিতে পারে এ কথাটাই যেন তাহার মনে আসিত না। নিৰ্ম্মলাও তেমনি করিয়া ভাবিতে শিথিয়াছিল এবং সেইজন্যই শিশুকাল হইতেই বাব: ছাড়; আর কাহাকেও সার্থী বলিয়া ভাবিতে পারে নাই । তাই সমবয়সী সখী এবং সঙ্গিনীদের সহিত মিলিয়া-মিশিয়া হাসিকৌতুক ঠাট্ট মান-অভিমান এই সকল জড়াইয়া তরুণ বয়সে মনের উপর রহস্তবিজড়িত যে একটি স্বমধুর ভাবের ছায়াপাত হয়, নিৰ্ম্মলার তাহা হইতে পায় নাই। তাহার কুমারী-জীবনের সু-উচ্চ গিরিশিখরে কেবল অপরিমেয় শুদ্ধ তুষারের কঠিনতা এবং বর্ণহীন শুভ্রতা । তাহার চোখের চাওয়ায় এখনও যেন কোন বেদনার ঘোর লাগে নাই, মুখের উপর তরুণকালের ভাবমুগ্ধতার বিশেষ কোন চিহ্ন নাই । সে সহজ সরল স্বচ্ছ । কিন্তু সেই নীরব সৌন্দৰ্য্য দেখিয়াই আর একজন পলে পলে মুগ্ধ হইতেছিল। চন্দ্রকাস্তের সহিত নানা বিষয়ে আলাপ করিবার ইচ্ছা যামিনীর দিন দিন কেন যে এত প্রবল হইয়। উঠিতেছে, কেন যে এ বাড়িতে ঢুকিলে নিজেকে স্থির করিয়৷