পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

పె8 র্তাহার কাজের প্রত্যক্ষ ফল পাইবার আশা করা যায় । এবিষয়ে সম্প্রতি বাংলা-সরকার যে বিবৃতি প্রকাশ করিয়াছেন, তাহাতে বলা হইয়াছে – বর্তমান অর্থনীতিক অবস্থায় পল্লীগ্রামের অধিবাসীরা যে, দশামু উপনীত হইয়াছে, তাহাতে সরকার শঙ্কিত হইয়াছেন এবং সেই জন্ত পল্লীগ্রামের অর্থনীতিক অবস্থার পুনর্গঠনভার একজন কৰ্ম্মচারীর উপর ন্যস্ত করিবার উদ্দেশ্যে “ডেভেলপমেণ্ট কমিশনার" নাম দিয়া একজন কৰ্ম্মচারীকে নিযুক্ত করিয়াছেন। তিনি যে-সমস্তার সমাধানে প্রবৃত্ত হইবেন, তাহা নানা অংশে বিভক্ত এবং সেইজন্য নানা বিভাগের সহিত তাহার সম্বন্ধ আছে। ভিন্ন ভিন্ন বিভাগে যে-ধে কাজ আছে, সে সকল কোনরূপে বিচলিত করা হইবে না। কমিশনার যে কাজ করিবেন, তাহাতে ভিন্ন ভিন্ন বিভাগের সহিত একযোগে কার্য্যে প্রবৃত্ত হইবেন এবং ভিন্ন ভিন্ন বিভাগের কার্য্য যাহাতে সম্মিলিত ভাবে করা যায়, সেজন্য যথাসম্ভব ব্যবস্থা করিবেন । এই ব্যবস্থার সুবিধা যে সপ্রকাশ, তাহ বলাই বাহুল্য। সাধারণ হিসাবে পল্লীগ্রামের অধিবাসীদিগের অবস্থার উন্নতি সাধন করিতে হইলে স্বাস্থ্য, শিল্প, কৃষি, শিক্ষা, সেচ প্রভৃতি বিবিধ বিভাগের সাহায্য গ্রহণ করিতে হয় ; শিক্ষা ও স্বাস্থ্য যদি বৰ্ত্তমানে বাদ দেওয়া যায়, তবে যে অভিপ্রেত ফললাভে বিলম্ব ঘটিবে, তাহাতে সন্দেহ নাই। কারণ, কৃষিশিল্পও বছ পরিমাণে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের উপর নির্ভর করে। আবার সেচের দ্বারা যেমন কৃষির উন্নতি সাধিত হইতে পারে, তেমনই স্বাস্থ্যেরও উন্নতি সাধিত হয় । বাংলায় ম্যালেরিয়ার প্রবল প্রকোপের উল্লেখ করিয়া বাংলার গতপূৰ্ব্ব আদমসুমারের বিবরণে লিখিত হইয়াছিল : “বৎসরের পর বৎসর জর লোকনাশ করিতেছে । প্লেগ যদি সহস্ৰ লোককে সংহার করে, তবে জর দশ সহস্ৰ লোকের মৃত্যুর কারণ। . জর যে কেবল মৃত্যুর দ্বারাই লোকসংখ্যা হ্রাস করে, তাহা নহে ; পরস্তু যাহারা জীবিত থাকে তাহদিগের জীবনীশক্তি ক্ষুন্ন করে, উদ্যম ও প্রজননশক্তির ক্ষতি করে, লোকের সাধারণ জীবনযাত্রার পদ্ধতিতে বাধা জঙ্গীয় এবং বালাবাণিজ্যের উন্নতির গতি প্ৰহত করে। বাংলার দারিদ্র্য ও অন্ত বহুরূপ দুৰ্দ্দশার ইহাই অন্যতম প্রধান কারণ 委员 SSBS বাঙ্গালীর উদ্যমহীনতার জন্যও ম্যালেরিয়া প্রধানতঃ দামী ।” ডাক্তার বেণ্টলী সেচের ব্যবস্থা করিয়া ম্যালেরিয়ু নিবারণের উপায় করিতে বলিয়াছেন । সেজন্য বাংলা নদীনালা প্রভৃতির সংস্কার করিতে হইবে । আবার পল্লীগ্রামের দুৰ্দ্দশার জন্য গ্রামে শিক্ষিত লোকে অভাবও অল্প দামী নহে। দেশের শিক্ষিত লোকরাই অভ লোককে আদর্শ ও উপদেশের দ্বারা উন্নতির পথ দেখাইয় দিবেন। এইরূপে নানা কারণের সমন্বয়ে যে সমস্যার উদ্ভব তাহা সমাধান সহজসাধ্য নহে । সহজসাধ্য নহে বলিয়াই এই কাযে সকলের একযোগে কাজ করা প্রয়োজন। এ কায্যের শেষ যাহা কেন হউক না-ইহার আরম্ভ স্থির করাই দুষ্কর। যে দুর্দশ বাংলার জলবায়ুতে দ্রুতবৰ্দ্ধনশীল বটবৃক্ষের মত সমাজসেীঃে তাহার সহস্র মূল প্রসারিত করিয়া তাহাকে আয়ত্তাধী করিয়াছে, তাহাকে সমুলে উৎপাটিত করা যেমন দুষ্কর, সে কাৰ্য্য অসাবধান ভাবে করিলে তাহাতে সমাজসৌধের সৰ্ব্বনাশ সাধনের সম্ভাবনাও তেমনই প্রবল । সুতরাং সতর্কত অবলম্বন প্রয়োজন । ইহাকে অবহেলা করা যায় না ; অবজ্ঞা কর অসম্ভব । কাজেই আরম্ভ করিতেই হইবে । সেই আরম্ভ হইতেছে দেখিয়া আমরা আশান্বিত হইয়াছি । বাধা আছে, কিন্তু উদ্যোগ ত্যাগ করিলে চলিবে না আমরা একটি দৃষ্টান্ত দিয়া কথাটা সুস্পষ্ট করিবার চেষ্ট করিব। বাংলার অনেক জলপথ ও প্রায় সব জলাশয় কচুরী পানায় পূর্ণ হইয়াছে—ইহাতে বাংলার লোকের স্বাস্থ্যহানি হইতেছে ; কোন কোন জলপথে নৌকাচলাচল বন্ধ হইয়াছে— কোন কোন নদীতে বা নালায় বর্ষার জল পতিত হইলে জল যখন কুল ছাপাইয়া যায়, তখন জলের সঙ্গে সঙ্গে পানাও ক্ষেত্রে প্রবেশ করে, ফলে ধান নষ্ট হয় । কয় বৎসর ধরিয়া পানী দুর করিবার কথা আলোচিত হইতেছে—ফল কিছুই হইতেছে না। পান দূর করিবার উপায় উদ্ভাবন জন্য প্রথম যে সমিতি গঠিত হইয়াছিল, আচাৰ্য্য জগদীশচন্দ্র বস্থ তাহার অন্ততঃ সদস্য ছিলেন। তিনি আমাদিগকে বলিয়াছিলেন-যাহার পানার দৌরাত্ম্যে ক্ষতিগ্রস্ত হইতেছে তাহাদিগের দ্বারা পান দূর করানই সৰ্ব্বোৎকৃষ্ট উপায়। গ্রামের লোককে পারিশ্রমিব দিয়া যদি নাল, খাল, পুষ্করিণী পরিষ্কার করান যায়, তবে