পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ఏ983 সরকার ঐ টাকার স্বদের জন্য জামিন থাকিবেন। বর্তমানে ঋণদান সমবায় সমিতিগুলি যেভাবে সভ্যদিগকে ঋণ দিয়া থাকে, তাহাতে কৃষকের ক্লষিকার্য্যের জন্য প্রয়োজন টাকা পাওয়া গেলেও তাহার অন্য ঋণ শোধের উপায় হয় না—এমন কি জমির উন্নতিসাধনের ব্যবস্থা করাও সম্ভব হয় না । সেজন্য অপেক্ষাকৃত দীর্ঘকালে পরিশোধ করা যায়, এমন ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন । এই-সব ব্যাঙ্কে তাহাই হইবে। মন্ত্রী বলিয়াছেন—এইরূপে দীর্ঘকাল মেয়াদে যে-সব ঋণ প্রদান করা হইবে, কিছু দিন তাহা পূৰ্ব্ব ঋণ ও জমি বন্ধক দিয় গৃহীত ঋণ পরিশোধ করিতেই প্রযুক্ত হইবে । জমির ও চাষের উন্নতিসাধন, জমিক্রয় প্রভৃতি ব্যবস্থা-বিষয় পরে বিবেচিত হইষে । এইরূপ ব্যাঙ্ক পরিচালিত করিয়া অন্যান্য দেশে যে অভিজ্ঞতা লাভ করা গিয়াছে তাহার সম্যক সদ্ব্যবহার করা যে প্রয়োজন হইবে, সে-বিষয়ে সন্দেহ নাই । যদি আইনের সাহায্য গ্রহণ না করিয়াই মহাজনের সহিত খাতকের ব্যবস্থায় ঋণ মিটাইবার উপায় হয়, তবে তাহাই যে অভিপ্রেত তাহাতে দ্বিমত থাকিতে পারে না । কিন্তু সেরূপ কাজের জন্য কোন কৰ্ম্মচারীর বা কোন সমিতির মধ্যস্থতা অবশ্যই প্রয়োজন হইবে। এ-বিষয়ে যত শীঘ্র কাজ আরম্ভ হয়, ততই ভাল ; কারণ বর্তমান ব্যবসা-মন্দার সময় মহাজন স্বভাবতই প্রাপ্য টাকা কতকটা বাদ দিয়াও লইতে আগ্রহশীল। কিন্তু আইন করিবার প্রয়োজন যে অতিক্রম করা যাইবে, এমন মনে হয় না । বরং আইন থাকিলে মহাজনের মিটাইয়া লইবার আগ্রহ হইবে । ঋণভার লঘু হইলে কৃষক যাহাতে আবার অমিতব্যয়ী হইয়া ঋণ না করে, সে ব্যবস্থার ভিত্তি-শিক্ষা। কিভাবে তাহাকে শিক্ষা দিতে হইবে—কিরূপে সেজন্য প্রচারকার্য্য পরিচালিত করিতে হইবে, তাহা বিবেচনার বিষয় । এই প্রসঙ্গে আমরা আর একটি অনুষ্ঠানের উল্লেখ করিতে পারি। অল্পদিন পূর্বে বাংলা-সরকার লোককে স্বাস্থ্যরক্ষা প্রভৃতি সম্বন্ধে শিক্ষা দিবার উদ্দেশ্যে একখানি মোটরযান সজ্জিত করিয়া পাঠাইয়াছেন। তাহাতে ছবি দেখাইবার ব্যবস্থাও আছে । পঞ্জীর প্রদেশে এখন বেতারের সাহায্যে লোককে শিক্ষা ও উপদেশ দিবার প্রস্তাৰ বিবেচিত হইতেছে । বাংলায় এখন সেরূপ ব্যবস্থা হয়ত সম্ভব হইবে না। কিন্তু গ্রামে গ্রামে যদি চলচ্চিত্র সহযোগে বা এইরূপ যানের সাহায্যে প্রচারকার্য্য পরিচালিত হয়, তবে তাহাতে সহজে সুফল ফলিতে পারে । ইহাতে নানা বিভাগের কাজ হইতে পারে। বাংলার শিল্পবিভাগ ইতোমধ্যেই মফস্বলে শহরে শিক্ষকদল পাঠাইয়া কতকগুলি শিল্পের উন্নত পদ্ধতি শিথাইতেছেন । যাহাতে লোক সে-সকলের সংবাদ পায় ও সে-সকলের প্রতি আক্লষ্ট হয়, তাহ। এইরূপ যানের দ্বারা করা যায়। প্রধানত: বাংলার মধ্যবিত্ত সম্প্রদায়ের বেকার-সমস্যার সমাধানকল্পে এষ্টসব শিল্পশিক্ষাদানের ব্যবস্ত হইয়াছে । কিন্তু ইহার কায্যক্ষেত্র প্রসারিত করা সহজসাধ্য । প্রথমে র্যাহারা সন্দেহ করিয়াছিলেন, ভদ্র সম্প্রদায়ের যুবকরা কায়িক শ্রমবিমূখ বলিয়া শিল্পে আত্মনিয়োগ করিতে চাহিবে না তাহাদিগের সে সন্দেহের আর অবকাশ নাই । এখন দেথা যাইতেছে, যুবকর যেমন “হাতে হাতিয়ারে” কাজ করিতে আগ্রহশীল, তাহাদিগের অভিভাবকরাও তেমনি তাহাদিগকে এ-বিষয়ে উৎসাহ দিতে প্রস্তুত ; দেখা যাইতেছে, যুবকর শিক্ষালাভ করিলে অভিভাবকরা তাহাদিগকে কারখানা প্রতিষ্ঠিত করিবার জন্য আবশ্বক মূলধন প্রদান করিতেছেন। ইহার মধ্যেই শিক্ষালাভ করিয়া যুবকর নানা স্থানে আপনার কারখানা প্রতিষ্ঠিত করিয়াছে ও করিতেছে এবং যে-সব কারখানা আছে অনেকে সেইগুলিতে চাকরি পাইতেছে । যাহার এইরূপে শিল্প প্রতিষ্ঠা করিবে, তাহারা যাহাতে সরকারের কাছে ঋণহিসাবে অর্থসাহায্য পাইতে পারে, সেজন্য আইন হইয়াছে। কিন্তু আইন বিধিবদ্ধ হইলেও অর্থাভাবে সাহায্যদান সম্ভব হয় নাই । সেইজন্য বিভাগের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী, এঞ্জিনিয়ার ও বাহিরের কয় জন ভদ্রলোক টাকা দিয়া একটি ভাণ্ডার প্রতিষ্ঠিত করিয়াছেন। ইহার পর বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভা স্থির করিয়া দিয়াছেন, এই কার্ঘ্যের জঙ্গ সরকার জামিন হইয়া পঞ্চাশ হাজার টাকা পৰ্য্যন্ত ব্যাঙ্ক হইতে দিতে পারিবেন। ঋণ হিসাবে আরও টাকা দিবার ব্যবস্থাও এবার হইতেছে । কাজেই আশা করা যায়, এই সব শিল্পপ্রতিষ্ঠার কার্ধ্য অগ্রসর হইবে । পল্লীগ্রামেও এই-সব শিল্প অনামালে প্রতিষ্ঠিত হইতে পারে