পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

obro বোসী; ༄། ཁས་ ༈ས་༣༤ মৃত্যুতে যিনি র্তাহার স্থলাভিষিক্ত হইবেন তিনিই, তাহার মত, এই সমিতির সভাপতি হইবেন কি-না, তাহা, আমরা জানি না। প্রভাসচন্দ্র বিষয়টি বিশেষ যত্নসহকারে অধ্যয়ন করিয়াছিলেন। সেই জন্ত র্তাহার মৃত্যুতে এই কার্য্যে কিছু বিঘ্ন ঘটাছে, বলিতে হইবে। আমরা আশা করি, এখন যিনি সমিতির সভাপতি হইবেন, তিনি এই প্রয়োজনীয় বিষয়ে আবশুক মনোযোগ দিবেন। কারণ, বাংলার পল্লীগ্রামের দুর্দশা দূর না হইলে বাংলার উন্নতি অসম্ভব । অর্থনীতিক অনুসন্ধান জন্য বাংলায় যে বোর্ড বা সমিতি গঠিত হইয়াছে, তাহার নিকট হইতে পরামর্শ হিসাবেও যে উল্লেখযোগ্য কিছু পাইবার আশা আছে, তাহ। মনে হয় না। নানা সম্প্রদায়ের ও নানা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি লই যে সমিতি গঠিত হয়, তাহার সদস্যরা যে অনেক সময় কোন বিষয়ে একমত হইতে পারেন না, তাহার প্রমাণ সম্প্রতি পাট-কমিটির রিপোর্টে পাওয়া গিয়াছে। বোর্ডের সভ্যর কেহ কেহ বাঙালী নহেন—বাংলার আর্থিক অবস্থার সহিত র্তাহাদিগের প্রত্যক্ষ পরিচয় নাই ; কেহ কেহ এই বিষয়ে কখন মন দেন নাই। তথাপি যদি বোর্ড র্তাহাদিগের নির্দিষ্ট কার্ধ্য সুসম্পন্ন করিতে পারেন, আমরা তাহ ভাগ্য বলিম বিবেচনা করিব। কাজ কমিশনারকেই করিতে হইবে । আর তাহার কাজ করিবার উৎসাহ ও দক্ষতার উপর সরকারের এই প্রশংসনীয় চেষ্টার সাফল্য নির্ভর করিতেছে। যে বক্তৃতায় বাংলার গভর্ণর এই চেষ্টার কথা প্রথম উল্লেখ করিয়াছিলেন, তাহাতে তিনি কাৰ্য্যের বিরাটত্ব ও জটিলতা বিবেচনা করিয়া বলিয়াছিলেন, এ-কাজ এক সরকারের নহে এবং ইহা সম্পূর্ণ করিতে হইলে সমাজের সকল উংকৃষ্ট অংশকে ইহাতে প্রযুক্ত করিতে হুইবে । আমরা আশা করি, দেশের লোক উপদেশ ও সহযোগ দিয়া এই কাজ সম্পূর্ণ করিতে সহায় হইবেন। বাংলার পল্লীগ্রামের ও পল্লীগ্রামের অধিবাসীদিগের আর্থিক অবস্থার উন্নতিসাধনের উপায় যিনি যাহা চিন্তা করিয়াছেন, তাহা কমিশনারকে জানাইবার স্থযোগ উপস্থিত হইয়াছে—তাহ এইবার কার্য্যে পরিণত হইতে পারে। আর গ্রামে কোন কাজ আরম্ভ হইলে তাহার সাফল্য সম্বন্ধে আবশুক সাহায্য প্রদান করা প্রয়োজন । ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত বিহারে গণ্ডক নদীর বাধ মেরামত করিবার জন্ম যেমন সরকারী কৰ্ম্মচারী ও বে-সরকারী লোক, ধনী ও দরিদ্র, শিক্ষিত ও অশিক্ষিত সকলে একযোগে কাজ করিয়া কাজ সফল করিতে হইলে কি করিতে হয় তাহ দেখাইয়াছেন, তেমনই এ কাজে বাঙালী মাত্রেরই অগ্রসর হইয়া সোৎসাহে কার্য্যে প্রবৃত্ত হওয়া প্রয়োজন। লোকের আস্তরিক উৎসাহই সরকারের কায্যে প্রাণপ্রতিষ্ঠা করিতে পারে। আজ বহুদিন পরে শ্রীহীন বাংলাকে পুনরায় ঐসম্পন্ন করিবার চেষ্টা দেখা যাইতেছে, যেম সহসা বদ্ধস্রোত নদীতে বন্যার জল প্রবাহের স্বষ্টি করিতেছে । আজ যে স্বযোগ আসিয়াছে, তাহার সম্যক সদ্ব্যবহার বাঙালীকেই করিতে হইবে ; বুঝিতে হইবে-ফেটাকা ব্যয়িত হইবে তাহ যেমন বাঙালীর, যে উপকার হইবে তাহাও তেমনই বাঙালীরএই পুরাতন পরিচিত বাংলায় শাসন-পদ্ধতির পরিবর্তন, ব্যবস্থার পরিবর্তন হইয়াছে ও হইবে—কিন্তু ইহার অধিকারী হইয়া থাকিবে-বাঙালী ; সুখে-দুঃখে, সম্পদে-বিপদে, রোগে-সম্ভোগে, প্রাচুর্যে-অভাবে-বাঙালীর সম্বল এই বাংলা । বাংলার ও বাঙালীর উন্নতির চেষ্টা বাঙালীকেই করিতে হইবে—নহিলে সে চেষ্টা কখনও সফল হইবে না। তাই আমরা আশা করি, আজ যে-চেষ্টা আরম্ভ হইয়াছে, তাহা অদূর ভবিষ্যতে বাঙালীর সাহায্যে সৰ্ব্বতোভাবে সাফল্যমণ্ডিত হইবে-বাংলা আবার তাহর পূর্বরূপ ফিরিয়া পাইবে ।