পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

):8)SS צופיל মমত্ববােধ জগাইল তুলিবে, ব্যবসা শিল্পের প্রতি অসাধুতামও ব্যাঙ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয় বটে, কিন্তু তাহাতে ব্যাঙ্কের বাঙালীক্ষে অনুপ্রেরণা দিবে এবং এই ক্ষেত্রে আধিপত্য বিস্তারে তাহাকে সহায়তা কংিবে, এইগুলিও এই প্রকার ব্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠার অন্যতম উদ্দেশু। বেকার-সমস্ত সমাধানের দিক দিয়া বিচার করিলেও বাংলা দেশে বাঙালী প্রতিষ্ঠিত ব্যাঙ্কের প্রয়োজন যে যথেষ্ট রহিমাছে একথা নিঃসংশয়ে বল৷ ধায় । দেশের অর্থনৈতিক জীবনে কমার্শাল ব্যাঙ্কের প্রয়োজনের প্রতি বাঙালীর মনোযোগ যে আকৃষ্ট হয় নাই, এমন নহে। বস্তুতঃ, স্বদেশী আন্দোলনের সময় হইতেই এ-বিষয়ে বাঙালী জাতি অবহিত হুইয়াছে। অল্পকালমধ্যেই অনেকের সমবেত চেষ্টায় কলিকাতায় দুইটি কমার্শ্যাল ব্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠিত হুইয়াছিল ; ইহার একটি ‘বেঙ্গল ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক, অপরটি “হিন্দুস্থান কোঅপারেটিভ ব্যাঙ্ক’ । দুর্ভাগ্যক্রমে এই দুইটি ব্যাঙ্কই কারবার বন্ধ করিতে বাধ্য হইয়াছে। এই ব্যাঙ্ক দুইটির শোচনীয় পরিণতির জন্ত বাঙালীর ব্যাঙ্ক-পরিচালনের অক্ষমতার উপর ষে কলঙ্ক আরোপিত হইয়াছে, তাহার গ্লানি এখনও আমরা ভোগ করিতেছি । কিন্তু ইহার জন্ত আমাদের নিরুৎসাহ হইবার কোন কারণ নাই । এই সম্বন্ধে বিশেষ করিমু আমি কয়েকটি কথা বলিতে চাহি । আমার মনে হয়, যাহার এই দুই ব্যাঙ্কের দৃষ্টাস্তে বাঙালীর ব্যাঙ্ক-পরিচালনার ক্ষমতার উপর কটাক্ষপাত করেন, বিভিন্ন দেশের ব্যাঙ্কের ইতিহাসের সহিত তাহদের সম্যক পরিচয় নাই । প্রথম কথা—অসাধুতাই ব্যাঙ্কের সর্বনাশ ঘটিবার একমাত্র মুখ্য কারণ নহে। তা ছাড়া অসাধুতা কোন ব্যাঙ্কের সৰ্ব্বনাশ সাধনে সমর্থ হইলেও এ-কথা মনে রাখা দরকার যে, এই দোষ সৰ্ব্বদেশে সৰ্ব্বজাতির মধ্যেই অল্পাধিক পরিমাণে বিরাজ করিতেছে এবং সৰ্ব্বত্রই কোলান-কোন ব্যাঙ্ক ইহার জন্ত ক্ষতিগ্রপ্ত হইয়াছে ; কিন্তু পৃথিবীর কোন অগ্রণী দেশেই এই কায়ণে ব্যাঙ্কের প্রগার ও শ্ৰীবৃদ্ধি প্রতিহত হয় নাই । বেঙ্গল স্কাশনাল ব্যাঙ্কের পতনের পর আমি তাহার যথাযথ কারণ নির্দেশ করিবার জগু জ্ঞাদ্ধানে প্রবৃত্ত হই । এই অনুসন্ধানের ফলে আমার দৃঢ়বিশ্বাস জন্সিয়াছে যে, আমাদের দেশে ব্যাঙ্কের এই প্রকার দুর্গতির মূখ্য কারণ হইল-স্থনিয়ন্ত্রিত ব্যৰস্থার অভাব। ব্যাঙ্কের কৰ্ম্মচারীবৃন্দের সমুহ সৰ্ব্বনাশ সাধিত হইতে পারে না । যথাযথভাবে কাৰ্য্য নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা থাকিলে এই প্রকার অসাধুতা প্রশ্ৰয় পায় না এবং বিধি-বিগর্হিত কাৰ্য্য বন্ধ করাও সহজসাধ্য হয়। ব্যাঙ্কের পতনের কালে তাহার যে-সমস্ত টাকা ষে-যে স্থানে নিয়োজিত ছিল, তৎপ্রতি একটু মনোযোগী হইলেই কতকগুলি বিষয় আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। কমার্শাল ব্যাঙ্কের মূলনীতি এই যে, এমন ভাবে টাকা খাটাইতে হইবে যে, নির্দিষ্ট সময়মধ্যে ঐ টাকাটা আপনা-আপনি ফিরিয়া আসিবার উপায় বা বন্দোবস্ত থাকে ; কিন্তু ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক এই নীতির দিকে আদেী লক্ষ্য করেন নাই। রাজনীতি ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা লাভ অথবা নিজের দলকে পরিপুষ্ট করিবার উদ্দেশ্যে অনেক লোককে বিন জামীনে অথবা উপযুক্ত জামীন না থাকা সত্ত্বেও টাকা ধার দেওয়া হইয়াছিল । লগ্নীর টাকার অনুপাতে তাহার জামীন সম্বন্ধে বিশেষ প্রণিধান করা হয় নাই। আর স্বাদেশিকতার প্রেরণায় এমন অনেক শিল্পে টাকা নিয়োগ করা হইয়াছিল যে, যাহা আদায় হইবার কোন সম্ভাবনাই ছিল না। ব্যাঙ্কের ব্যবসায়নীতিসম্মত মূলধন সংগ্রহের রীতি এবং তাহা লগ্নী করিবার বিধিবদ্ধ ব্যবস্থা হইতে বিচ্যুতি ঘটিতে থাকিলে তাহর সর্বনাশ অবশুম্ভাবী ; চরম সাধুতাও তখন তাহাকে বাচাইক্স রাখিতে পারে না। পরিচালকবর্গের অসাধুতায়ও ব্যাঙ্কের অনেক ক্ষতি হয় বটে ; কিন্তু এস্থলে আমি আপনাদের নিকট নিবেদন করিতে চাই যে, স্বনিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থার অভাব ঘটিলে অতি বড় সাধুও অসাধু হইয়া দাড়ায়,- বেঙ্গল স্কাশনাল ব্যাঙ্কের ব্যাপারে তাহার প্রকৃষ্ট প্রমাণ পাওয় গিয়াছে । হিন্দুস্থান ব্যান্ধের পতনের মূলে বিশেষ কোন জলাধুতার প্রমাণ পাওয়া যায় নাই বটে ; কিন্তু ব্যাঙ্কিং ফার্ষ্য প্রণালী সম্বন্ধে অজ্ঞতাই ইহার ধ্বংসের প্রধান কারণী আপনারা হয়ত শুনিম্ন জাশ্চর্ধ্যাম্বিত হুইবেন যে, বর্তমান সময়ে সাধু বলির পরিচিত লোক অসাধু লোক অপেক্ষাও সমাজের অনেক অধিক অনিষ্ট করিতেছেন। এই দুইটি ব্যাঙ্কের পতনের প্রকৃত কারণগুলির প্রতি লক্ষ্য রাখিয়া, সাবধানতার সহিত যদি আমরা কর্ঘ্যে প্রবৃত্ত হই,